সংক্ষিপ্ত

ফ্রান্সের আল্পস-এর ড্রুজেট নদীর ধারে বিজ্ঞানীরা একটি গাছের অবশিষ্টাংশ পেয়েছেন। যেটি ১৪ হাজার বছর আগেকার সৌরঝড়ে প্রমাণ বহন করছে।

 

সৌরঝড়েই শেষ হয়ে যেতে পারে পৃথিবী। তেমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন একদল বিজ্ঞানী। আজ থেকে প্রায় ১৪ হাজার ৩০০ বছর আগে পৃথিবীতে আঘাত করেছিল একটি বিশাল সৌরঝড়। সেই প্রমাণ এতদিন পরে হাতে পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেই প্রমাণ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন আজ যদি তেমন বিশাল সৌরঝড় হয় তাহলে এই সৃষ্টি ধ্বংস হতে বেশি সময় লাগবে না। বিজ্ঞানীরা আরও বলেছেন, তেমন সৌরঝড় হলে মানজাতির জন্য একটি বড় বিপর্যয় হতে পারে।

ফ্রান্সের আল্পস-এর ড্রুজেট নদীর ধারে বিজ্ঞানীরা একটি গাছের অবশিষ্টাংশ পেয়েছেন। যেটি ১৪ হাজার বছর আগেকার সৌরঝড়ে প্রমাণ বহন করছে। গাছটি হল স্টকট পাইন গাছ। গাছের স্টাম্পের বার্ষিক রিংগুলি রেডিওকার্বন প্রকাশ করে। সৌরঝড়ের সময় সূর্য থেকে যে আইসোটোপ নির্গত হয়েছিল তা এখনও সেই গাছের মধ্যে রয়েছে।

বিজ্ঞানীদের অনুমান এটি সর্বকালের সবথেকে বড় সৌরঝড় হতে পারে। এটি ক্যারিংটন ইভেন্টকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। ক্যারিংটন ইভেন্ট হয়েছিল ১৮৫৯ সালে। সেই সময় বিশ্বজুড়ে একটি অভূতপূর্ব ভূ-চৌম্বকীয় ঝড়ের সৃষ্টি হয়েছিল সেই সময় একটি রাতে অরোরা এতটাই বেশি উজ্জ্বল হয়েছিল যে পশুপাখিরা মনে করিছিল দিন হয়ে গেছে। সেই সময় পশুপাখিরা ডেকে উঠিছিল। অনুমান করা হয়, ১৪০০০ বছরের বেশি আগে যে সৌরঝড় হয়েছিল সেটি ১৮০০ দশকের শেষের সৌরঝড়ের তুলনায় ১০ গুণ বেশি শক্তিশালী ছিল। য়া টেলিগ্রাম সিস্টেমকে পুরোপুরি বিপর্যস্ত করে দিয়েছিল।

 

আজ যদি তেমন বড় সৌরঝড় হত তাহলে কী হবে? তারই হিসেব নিকেশ কষতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক অনুমান বর্তমান বিশ্বে তেমন বড় সৌরঝড় যদি আছড়ে পড়ে তাহলে তা মানবজাতির জন্য বিপর্যয়কর হতে পারে। এই ধরনের সৌরঝড় সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও বিজ্ঞানীরা সরবরাহ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, বড় সৌরঝড় যে কোনও ইলেকট্পনিক্সকে ছিটকে দেয়। কোলেড ডি ফ্রান্ত ও গবেষণা কেন্দ্র CEREGE-এর জলবায়ু এবং সমুদ্রের বিবর্তনের অধ্যাপক Edouard Bard এর মতে, এমন সৌরঝড় যদি হয় তাহলে তা হবে সমাজের জন্য বিপর্যয়কর। কারণ বর্তমান বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তির ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল।

তিনি আরও বলেছেন, তেমন বড় সৌরঝড় হলে একাধিক বিদ্যুৎ গ্রিডের ব্যপর ক্ষতি হতে পারে। সম্ভাব্যভাবে দেশব্যাপী ব্ল্যাকআউটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তবে আরও ভয়ঙ্কর কথা হল এই ব্ল্যাকাউট কয়েক ঘণ্টা বা দিন নয় কয়েক মাস স্থায়ী হতে পারে। যা স্যাটেলাইটগুলির কাজও থামিয়ে দেবে, অর্থাৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। শক্তিশালী কণার বিস্ফোরণে স্যাটেলাইটের সৌর প্যানেল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। সৌরঝড় মহাকাশচারীদের জন্যও মারাত্মক হতে পারে। সৌর বিকিরণ তাদের জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। বিমান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যাবে। তিনি বলেছেন এই বিপর্যয়ের কারণে গোটা বিশ্বের আর্থিক সংকট তৈরি হবে। কয়েক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

একটি বড় প্রশ্ন হল- যোগাযোগ, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, স্যাটেলাইটগুলির বেশিরভাগই সৌরঝড়ের প্রভাবে সাময়িক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে অনলাইন পরিষেবা। যা মানুষকে বিপর্যস্ত করে দেবে।