সংক্ষিপ্ত

উদ্ধারকাজে নেমে দু’জন দমকলকর্মীও মারা গিয়েছেন। একটি হাসপাতালে ২০০ জন রোগী ভর্তি ছিলেন, যাঁরা জলের স্রোতের তোড়ে ভেসে কোথায় চলে গিয়েছেন, কেউ জানে না।

৬ ফেব্রুয়ারি ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল। প্রায় ৪৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরছাড়া হয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পে দিন কাটাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ শহরবাসী। এরই মধ্যে করাল ছায়া ফেলল ভয়াবহ বন্যা। স্রোতের তাণ্ডবে সারা দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক ফের লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। অস্থায়ী ক্যাম্পগুলি থেকে ভেসে চলে গেছেন বহু মানুষ। সাধারণ মানুষ কোনও মতে বাঁচার আর্তি জানাচ্ছেন।

তুরস্কের সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, বন্যা কবলিত এলাকায় এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ১৪ জন মানুষ, নিখোঁজ রয়েছে অগুন্তি জনতা। যাঁরা ভূমিকম্পে বেঁচে গিয়ে কোনও মতে দিন কাটাচ্ছিলেন, তাঁদের অনেকের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বন্যার প্রাবল্য। ভূমিকম্প পরবর্তী আশ্রয় শিবিরে বসবাস করতে গিয়ে ঢেউয়ের দাপটে ভেসে চলে গিয়েছেন তাঁরা। সানলিউরফার রাস্তায় বন্যার জলের স্রোতে ডুবে গেছে একের পর এক গাড়ি। সেখানেই মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। আদিয়ামনে একটি আশ্রয় শিবিরে দুটি পরিবারের সমস্ত সদস্য বন্যায় ডুবে গিয়েছেন। নিহত দু’জনের মধ্যে কন্টেনারে একজন মহিলাও ছিলেন বলে জানা গেছে। আরও বহু মানুষের নিখোঁজ থাকার খবর পাওয়া গেছে। বাঁচানোর জন্য অত্যন্ত দ্রুততার সাথে শহরের তাঁবুগুলো খালি করার কাজ চলছে।

অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী সংস্থা জানিয়েছে যে, মাত্র ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে আদিয়ামান প্রদেশের একটি এলাকায় ১৩৬ মিলিমিটার এবং (5.4 ইঞ্চি) এবং সানলিউরফাতে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে একেকটি এলাকায় জল বেড়ে গেছে প্রায় ৫ থেকে সাড়ে ৫ ইঞ্চি। গত দুই বছরে তুরস্কে এক বছরে যতটা বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা এর মাত্র এক তৃতীয়াংশ। এতটা বৃষ্টি এত কম সময়ের মধ্যে হওয়ায় মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। সানলিউরফার গভর্নর সালিহ আয়হান বলেছেন, তাঁর শাসিত অঞ্চলে কখনও এমন বন্যা হয়নি। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা শহরের বাসিন্দাদের বাড়ির নিচতলা এবং বেসমেন্ট খালি করে বেরিয়ে আসার জন্য আবেদন করছেন।

একটি আবাসনের বেসমেন্টে একসাথে পাঁচজনের মৃতদেহ আবিষ্কার হয়েছে। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এই ৫ জন মানুষ সিরিয়া দেশের বাসিন্দা। প্রধান আবিদ রোড মোড়ের একটি আন্ডারপাস থেকেও মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গত মানুষজনকে উদ্ধার করতে গিয়েও বহু মানুষ ভেসে চলে গেছেন। বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষ নিজেরাই দড়ি বা মই দিয়ে কবলিত মানুষদের উদ্ধার করার কাজে হাত লাগাচ্ছেন। উদ্ধারকাজে নেমে দু’জন দমকলকর্মীও মারা গিয়েছেন। একটি হাসপাতালে ২০০ জন রোগী ভর্তি ছিলেন, যাঁরা জলের স্রোতের তোড়ে ভেসে কোথায় চলে গিয়েছেন, কেউ জানে না।
 

 

আসন্ন মে মাসের ১৪ তারিখে তুরস্কে ভোট রয়েছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান তড়িঘড়ি বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লুকে পাঠিয়ে দিয়েছেন। বিরোধী দলের নেতারাও বন্যা কবলিত মানুষদের সবরকম সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন। চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে আবার বৃষ্টি নামতে পারে বলে আশঙ্কার বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

আরও পড়ুন-

Anubrata Mondal Latest News: আইপিএলে-ও টাকা ঢেলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল, মণীশ কোঠারির সামনে বসে রহস্য ফাঁস
গ্রেফতার হওয়ার আগে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় কি জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতার বাড়িতে গিয়ে লুকিয়ে ছিলেন? রাজনীতিতে বাড়ছে জল্পনা
যশোর রোডের ধারে অবহেলায় পড়েছিল নবাব সিরাজউদ্দৌলার কামান, প্রায় চারশো বছরের ইতিহাস খনন শুরু হল ১৫ মার্চ