সংক্ষিপ্ত
- কোনওভাবেই রাজ্য়ে এনআরসি নয়,
- ৬ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় আলোচনা
- এনআরসিতে একমত বাম, কংগ্রেস, তৃণমূল
- নাগরিকপঞ্জী নিয়ে অনড় বিজেপি
বিজেপি কিছু করার আগেই রাজ্যে এনআরসির-র পায়ে বেড়ি পরাতে চাইছে রাজ্য সরকার। আগামী ৬সেপ্টেম্বর বিধানসভায় এনআরসি নিয়ে আলোচনা হতে চলেছে।
বিভিন্ন প্রসঙ্গে বিরোধিতা থাকলেও এবার এনআরসি ইস্য়ুতে একমত হল বাম, তৃণমূল ও কংগ্রেস। সবার মত মেনে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর দু ঘণ্টার জন্য বিধানসভায় আলোচনা হবে এনআরসি ইস্য়ু। তবে সবাই একমত হলেও এনআরসি ইস্য়ুতে বিজেপিকে পাশে পাচ্ছে না রাজ্য ।
সূত্রের খবর,বুধবার বিধানসভার বিএ কমিটিতে এনআরসি প্রসঙ্গ ওঠে। বৈঠকে বিষয়টি তোলেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, আগেই এনআরসি নিয়ে আলোচনার জন্য বিধানসভায় প্রস্তাব দিয়ে রেখেছেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। প্রস্তাবটি দেখে দু একটি লাইন সংযোজন করার পর বিধানসভায় এনআরসি নিয়ে আলোচনায় রাজি হন সবাই।
রাজ্য রাজনীতিক মহল বলছে,অসমের পর এবার রাজ্যেও এনআরসির জন্য উদ্য়োগ নিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই আগেভাগেই রাজ্যে এনআরসি রদের পক্ষে হাঁটছে সরকার। সম্প্রতি অসমের এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়েছে। বিগত কয়েকদিন চরম উৎকণ্ঠায় কাটানোর পর অবশেষে প্রকাশ পেয়েছে অসমের নাগরিকপঞ্জী। চূড়ান্ত তালিকায় প্রায় ৩.২৯ কোটি মানুষ আবেদন করেছিলেন, তালিকায় রয়েছেন ৩ কোটি ১১ লক্ষ। আর সেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে অসমের প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষ।
অসমআরও পড়ুন এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ, কোথায় কীভাবে দেখবেন আপনার নাম,জেনে নিন
আরও পড়ুন বৈধ নাগরিক, কিন্তু এনআরসি-তে নাম নেই, কী করবেন তাহলে, জেনে নিন
প্রসঙ্গত, গত বছর ৩০ জুলাইয়ে প্রকাশিত অসমের নাগরিকপঞ্জী থেকে বাদ গিয়েছিল প্রায় ৪০ লক্ষের নাম। ইতিমধ্যেই অনলাইনে পাওয়া যাবে ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অব সিটিজেন্স-এর তালিকা। প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, যাদের ইন্টারনেট সংযোগ নেই তারা রাজ্য সরকার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করা রয়েছে কিনা তার আবেদন জানাতে পারবেন। এ দিকে, অসমে এনআরসি থেকে বাদ পড়ে এখন চিন্তায় ঘুম ছুটেছে বহু মানুষের। তবে আসল নাগরিকদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছে সদানন্দ সনোয়ালের বিজেপি সরকার। রাজ্য় সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে , এনআরাসি তালিকা থেকে বাদ পড়লেও এখনই কাউকে বিদেশি হিসাবে ধরে নেবে না রাজ্য়। কোনওভাবেই তালিকায় নাম না থাকাদের গ্রেফতার করবে অসম পুলিশ। বিষয়টি আদালতে বিবেচ্য বলেই এটা আদালতের ওপর ছেড়েছে সরকার। তবে বাদ পড়া সবাইকে বিদেশি ট্রাইবুনালের মাধ্য়মেই নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে বলে জানিয়েছে অসম সরকার।
আরও পড়ুন লাগবে ৪০ হাজার থেকে লক্ষাধিক টাকা, এনআরসি-তে 'নাম তুলতে' ১২০দিন সময়সীমা
আরও পড়ুন একবছরের কঠোর পরিশ্রমে হেলিকপ্টার তৈরি করে তাক লাগালেন কৃষকের ছেলে
আগে তালিকা থেকে বাদ পড়ার ৬০ দিনের মধ্যেই নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণের আবেদন করতে হত । সম্প্রতি সেই সময়সীমা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ৬০ দিনের বদলে এখন আবেদনের জন্য সর্বোচ্চ ১২০দিন অথবা চার মাস সময় পাবেন বাদ পড়ারা। অসমের নাগরিকত্বের পরিসংখ্য়ান বলছে, মুসলিমদের সঙ্গে বহু হিন্দু বাঙালিও এনআরসির তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। মূলত , অসমের বাঙালিদের জন্যই আগেও গলা তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী। এবারও নিজের টুইটে মমতা বলেছেন,এই অবস্থায় অসমের বাঙালি ভাই বোনেদের পাশে রয়েছেন তিনি। এনআরসি থেকে যারা রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন, আজ তাঁদের মুখোশ খুলে গেল।