সংক্ষিপ্ত
- বিজেপি বিধায়কের মৃত্যুতে উত্তাল রাজ্য়
- পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনলেন সায়ন্তন বসু
- প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করছে পুলিশ
- আরও কী বললেন বিজেপির এই রাজ্য় নেতা
এবার বিজেপি বিধায়কের মৃত্যুতে রাজ্য় পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আনলেন দলের নেতা সায়ন্তন বসু। বিজেপি নেতার অভিযোগ, সিবিআই চাওয়া হয়েছে তাই আগেভাগেই প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে এতে কোনও কাজ হবে না।
সায়ন্তনবাবু বলেন, প্রতিদিন দলের কার্যকর্তাদের খুন করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে এখনও পর্যন্ত ১৫০ জন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছে। তার মধ্যে একজন বিধায়ক আছে। স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। তথ্য প্রমাণ চাপা দেওয়ার জন্য পুলিশ তৎপর হয়ে উঠেছে। হেমতাবাদের সিটিং বিধায়কের মৃতদেহ যেভাবে সরানো হল, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হল তাতে বোঝা যাচ্ছে বিধায়ক যেখানে নিরাপদ নন, সেখানে সাধারণ বিজেপি কার্যকর্তা বা সাধারণ মানুষ তাদের নিরাপত্তা কোথায় আছে। আমার দাবি তদন্তের জন্য সিবিআইকে দায়িত্ব দিক রাজ্য সরকার। যাতে যথাশীঘ্রই সম্ভব ঘটনাস্থলে গিয়ে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে হেমতাবাদ বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের দেহ । স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা উত্তর দিনাজপুর জেলায়। সোমবার সকালে হেমতাবাদ থানার অন্তর্গত বালিয়ামোড় এলাকায় স্থানীয় বিধায়কের ঝুলন্ত মৃতদেহটি প্রথম চোখে পড়েছিল স্থানীয় বাসিন্দারাই। তাঁরাই খবর দেয় হেমতাবাদ থানায়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। দেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে রায়গঞ্জ গভর্মেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হেমতাবাদ থানার পুলিশ।
তবে বিধায়কের পরিবারের দাবি পরিকল্পিতভাবেই বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে তাঁকে। পরিবার সূত্রে দাবি, রবিবার সন্ধায় বালিয়ামোড় এলাকার এক চায়ের দোকানে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে গল্পগুজব করছিলেন দেবেন্দ্রনাথ রায়। রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু রাত ১ টা নাগাদ কেউ বা কারা তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিধায়কের ভাইঝি। তারপর রাতে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি।
এই ভয়ঙ্কর ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই ওই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন তিনি অত্যন্ত মিশুকে ছিলেন। রাজনীতি করলেও তাঁর কোনও শত্রু ছিল না। বিধায়কের পরিবার ও বিজেপি-র অভিযোগ, দেবেন্দ্রনাথ রায়-কে আগে খুন করা হয়েছে, তারপর তাঁর দেহ ওইভাবে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। দোষীদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন মৃতের পরিবার। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজেপি দলও।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হেমতাবাদ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের সমর্থনে সিপিএম প্রার্থী হিসেবে ভোটে জয়লাভ করেছিলেন দেবেন্দ্রনাথ রায়। তার আগে বিন্দোল গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন তিনি। সিপিএম এর দীর্ঘদিনের লড়াকু নেতা হিসাবেই পরিচয় ছিল তাঁর। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ঠিক আগ দিয়েই আচমকা তিনি সিপিএম দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।