সংক্ষিপ্ত

কাশীপুরে নিহত বিজেপি যুব নেতা অর্জুন চৌরাসিয়ার তদন্তে এখনও এখনও পাওয়া যায়নি ব্যাক্তিগত মোবাইলের পাসওয়ার্ড। থানার পর লালবাজারেও একই অবস্থানে অনঢ় থাকলেন অর্জুনের দাদা আনন্দ চৌরাসিয়া। 

কাশীপুরে নিহত বিজেপি যুব নেতা অর্জুন চৌরাসিয়ার তদন্তে এখনও এখনও পাওয়া যায়নি ব্যাক্তিগত মোবাইলের পাসওয়ার্ড। থানার পর লালবাজারেও একই অবস্থানে অনঢ় থাকলেন অর্জুনের দাদা আনন্দ চৌরাসিয়া। তার দাবি বৃহস্পতিবার, ফের মোবাইলের পাসওয়ার্ড জানতে চান তদন্তাকারী অফিসারেরা। উত্তর তিনি জানিয়েছেন, ভাইয়ের মোবাইলের পার্সওয়ার্ড তাঁর কাছে নেই। 

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার যখন অর্জুন চৌরাসিয়াকে ঝুলতে দেখা যায়, তখন তাঁর ব্যবহৃত ফোন অর্জুনের পকেটে ছিল। সেটি বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। তা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। তদন্তের কাজে ওই মোবাইল থেকে কোনও তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে অনুমান লালবাজার। কিন্তু বাধ সেধেছে পাসওয়ার্ড। যা এখনও পর্যন্ত না পাওয়া যাওয়াতে তথ্য সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। ইতিমধ্যেই সিডিআর থেকে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছেন তদন্তাকারীর দল। দেহ উদ্ধারের আগের অর্জুন কার কার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন, সেই তথ্য পেয়েছে লালবাজার।

আরও পড়ুন, দক্ষিণ দিনাজপুরে আদিবাসী মহিলাকে 'ধর্ষণ করে খুন', আজই ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন সুকান্তরা

প্রসঙ্গত, অর্জুন চৌরাশিয়ার মৃত্যু নিয়ে আরও ধোঁয়াশা বেড়েছে। যে রাতে অর্জুন মারা যান, সেই রাতে অর্জুনের বাড়ির সামনে একটা জটলা শোনা গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন অর্জুনের মা রেশমি চৌরাশিয়া। এমনকি ওই দিন আর ছেলে বাড়িতে ফেরেননি বলে দাবি মায়ের। তবে কি কেউ অর্জুনকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে অর্জুনের মা বলেন, ওই দিন বাড়িতে শোয়নি অর্জুন। কাজের জন্য বাড়িতে এসেছিল। আবার তাড়াতাড়ি চলে যায়। তখনই বাড়ির সামনে একটা জটলা শুনি। তবে কাউকে দেখতে পাইনি। কিন্তু আমি নিজের কানে শুনেছি, কেউ বলছে, তোকে মেরে এমন জায়গায় ফেলে দেব, কেউ খুঁজেই পাবে না। এতটুকুই শুনতে পেয়েছিলাম। এরপরেই আমরা ছেলেকে খুঁজতে শুরু করি। সারা রাত ধরে ওকে খুঁজি। থানায় যাই। কিন্তু পুলিশের কোনও সহযোগিতা পাইনি।যেদিন ওই কথা শুনি, সেইদিনই যদি এই ঘটনা না ঘটত, তাহলে হয়তো কিছু মনে হতো না।' 

আরও পড়ুন, 'নোবেল পাওয়ার ক্ষমতা রাখেন মমতা', ফের বিস্ফোরক দিলীপ

রাত তখন ১২টা পেরিয়েছে। যুবনেতার মৃত্যুর রাতেই অর্জুনের বাড়ির সামনে এসে দাড়িয়েছিল একটা ধূসর রঙের গাড়ি। ১২ টা ১৫ থেকে রাত ৩ অবধি ওই এলাকাতেই দাঁড়িয়েছিল গাড়িটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি এর আগে ওই গাড়িটিকে কেউ এলাকায় দেখেননি। কে বা কারা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিল, তাও পরিষ্কার নয়। স্থানীয় একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে ওই গাড়িটি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। এরপরও গাড়ির আড়ালে কারা লুকিয়ে ছিল, এনিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যেই গাড়িটির বিষয় নিয়ে পুলিশেকে জানানো হয়েছে। এখন সিসিটিভির সূত্রে ধরে কাউকে চিহ্নিত করা যায় নাকি, সেটাই বড় বিষয়।

আরও পড়ুন, সাতসকালে ফের আরও ২ বাড়িতে ফাঁটল, বউবাজারকাণ্ডে রেলকে চিঠি অধীরের, আজ বৈঠক পুরসভার

অর্জুনের আত্মীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, অর্জুনের উচ্চতা ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি।তাই যে জায়গায় দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে বেশ খানিকটা গর্ত করা হলেও মাটিতে ঠেকে থাকত অর্জুনের দেহ। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, অর্জুনের গলায় যে গামছার ফাঁস লাগানো ছিল, সেটা ছেঁড়া , বেঁধে জোড়া করার চেষ্টা করা হয়েছে। এইসব দেখেই অর্জুনের মৃত্যু আত্মহত্যা নয় বলে দাবি করেছে আত্মীয় স্বজনরা। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আবার বলছে অন্য কথা। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে যে, অর্জুন আত্মহত্যাই করেছিলেন। খুনের কোনও ইঙ্গিত প্রাথমিক রিপোর্টে মেলেনি। ময়নাতদন্তে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, অর্জুন চৌরাসিয়ার দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। কোনও ধস্তাধস্তি চিহ্ন মেলেনি বিজেপি যুব নেতা অর্জুনের শরীরে। এর থেকে প্রাথমিকভাবে খুনের প্রমাণ বা চিহ্ন মেলেনি।