সংক্ষিপ্ত

 ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রিপোর্ট পেশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।   জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে পুলিশ প্রশাসন সহ রাজ্যের ১৬ টি জেলার দুষ্কৃতী তালিকা রাজ্য হাইকোর্টকে জমা দিয়েছে ।
 


 ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রিপোর্ট পেশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই রিপোর্টে কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের তালিকা রয়েছে।যে তালিকায় হেভিওয়েট তৃণমূলের নেতা মন্ত্রী থেকে শুরু করে বহু নিচু তলার কর্মীর নাম রয়েছে।যা নিয়ে শুরু হয়ে গেছে তীব্র রাজনৈতিক তরজা।প্রকাশ্যে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। তৃণমূলের অভিযোগ কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে বিজেপি।হার হজম হয়নি তাঁদের। রাজ্য হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে পুলিশ প্রশাসন সহ রাজ্যের ১৬ টি জেলার দুষ্কৃতী তালিকা রাজ্য হাইকোর্টকে জমা দিয়েছে ।

আরও পড়ুন, 'কাশ্মীর' নয়, এই প্রথম 'শিক্ষক নিয়োগ' ইস্যু, হিজবুল মুজাহিদিনের হুমকি সিডি আদৌ কতটা সত্যি

 বৃহস্পতিবার এই তালিকা জমা দেওয়ার পর পরই এই গোপন রিপোর্ট প্রকাশের চলে আসে। দেখা যায় রিপোর্টে রাজ্যের মন্ত্রী সহ একাধিক বিধায়ক কে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কুখ্যাত দুষ্কৃতী বলে উল্লেখ করেছে। এমনকি এসেছে এক দিনমজুরের নাম ও। এই তালিকা তে অন্যান্য জেলার সাথে মালদা জেলার ৪ জন তৃণমূল কর্মীর নাম রয়েছে। তার মধ্যে একজন পেশায় দিনমজুর হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ভালুকা বাজারের জয়দেব ওঝা। সে পেশায় দিনমজুর হলেও নির্বাচনের সময় শাসক দলের ম্যাসকট হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিল। বিধানসভা নির্বাচনের মাস দুয়েকের মধ্যেই এরকম এক তালিকা প্রকাশ্যে চলে আসায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন শাসক দল। অন্যদিকে এই তালিকা প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন এটা বিজেপির ষড়যন্ত্র।এ প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এই তালিকা কে স্বাগত জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন, JMB প্রধান ঘুরতে আসে ধৃতের বারাসাতের বাড়িতেই, রাহুলের উত্তর শুনে অবাক গোয়েন্দারা

এদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসলে দেখা যায় এই তালিকায় নাম রয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বেশ কয়েকজন বিধায়ক সহ অন্যান্য জেলার সাথে মালদা জেলার ৪ জনের নাম ও রয়েছে। যাদের মধ্যে দুজন হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার। এদের মধ্যে একজন হলেন জেলায় তৃণমূলের ম্যাসকট বলে পরিচিত দিনমজুর জয়দেব ওঝা। ভোটের আগে উত্তর থেকে দক্ষিণ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দলের বিভিন্ন জনসভায় গিয়েছেন। পেশায় দিনমজুর জয়দেব বাবু অজানা আতঙ্কে এখন দলের নেতাদের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি বুঝতেই পারছেন না কিভাবে তার নাম তালিকা গেল। কেন না নির্বাচনের সময় তিনি এলাকার বিজেপির কর্মীদের আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর জন্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বেশ কিছুদিন। এখন তার নামে রাজনৈতিক হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ করা হয়েছে তিনি ভেবে পাচ্ছেন না কি করবেন। ভাঙ্গা ঘরে বসে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দিনমজুর জয়দেব ওঝা।

আরও পড়ুন, 'কর্ম করো-ফলের ব্যাপারে ভেবো না', রাজ্যপালের দিল্লি সফর ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে

অন্যদিকে এই তালিকায় নাম এসেছে হরিশচন্দ্র পুর গ্রাম-পঞ্চায়েতের শাসক দলের অঞ্চল চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন সাংসদ প্রতিনিধি সঞ্জীব গুপ্তার। সঞ্জীব বাবু বক্তব্য,' আজ পর্যন্ত কোনও পুলিশকেসে আমার নাম জড়ায়নি । আমি সামান্য ঔষধ ব্যবসায়ী। তার সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। কেন আমার নাম জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দুষ্কৃতীদের তালিকা তে তা আমি বুঝতে পারছি না। এর পিছনে এলাকার বিজেপি কর্মীরা রয়েছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমার নাম ওই তালিকায় ঢোকানো হয়েছে।এ প্রসঙ্গে মালদা জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী জানান কেন্দ্রে বিজেপি সরকার হয়ে কাজ করছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এই কমিশনের সদস্যরা বিজেপির পুতুলে পরিণত হয়েছে। বিজেপির কেন্দ্রের সদস্যরা যে ভাবে নির্দেশ দিয়েছে এই তালিকা সেভাবে প্রকাশ হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।'

আরও পড়ুন, 'হয় ৬ আত্মীয়কে শিক্ষকের চাকরি, না হলে হত্যালীলা'- হিজবুল মুজাহিদিনের কি খেয়ে বসে কোনও কাজ নেই

এদিকে এ প্রসঙ্গে বিজেপির উত্তর মালদার  সাংসদ খগেন মুর্মু জানান ভোটের সময় নির্বিচনে শাসকদল জেলা সহ-রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে প্রতিপক্ষ দলের সমর্থকদের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল। এখনো আমাদের অনেক কর্মী ঘরে ফিরতে পারেনি। বিজেপি কর্মী পশ্চিমবঙ্গের খুন হয়েছেন। আমি মনে করি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নিরপেক্ষ ভাবে তাদের তদন্ত চালিয়ে এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এই রিপোর্টে পরিষ্কার হয়ে গেল তৃণমূল ভোটে কি হারে সন্ত্রাস করেছে। রাজ্যের তৃণমূলের সন্ত্রাসের রাজত্ব চালাচ্ছে। তারই প্রতিফলন মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট এসেছে।নির্বাচন-পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। রাজ্যের প্রধান বিরোধীদল বারবার কাঠগড়ায় তুলছে শাসক দলকে। পুলিশের বিরুদ্ধে তুলছে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ। অপরদিকে তৃণমূলের অভিযোগ হার মানতে পারছে না বিজেপি। তাই প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করে মমতা ব্যানার্জির প্রতিচ্ছবি খারাপ করার চেষ্টা করছে।