সংক্ষিপ্ত
সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১ অক্টোবর বিজেপি ছেড়েছিলেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। তখন থেকেই তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনা শুরু হয়েছিল।
অনেক দিন ধরেই বেসুরো ছিলেন তিনি। একের পর এক দল বিরোধী মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছিল তাঁকে। এমনকী, ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন দলীয় নেতৃত্বদের বিরুদ্ধেও। দলের কর্মসূচিতেও যোগ দিচ্ছিলেন না তিনি। তারপরই সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১ অক্টোবর বিজেপি (BJP) ছেড়েছিলেন রায়গঞ্জের বিধায়ক (Raiganj MLA) কৃষ্ণ কল্যাণী (Krishna Kalyani)। তখন থেকেই তাঁর তৃণমূলে (TMC) যোগ দেওয়ার জল্পনা শুরু হয়েছিল। যদিও তা নিয়ে তখন কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি তাঁকে। আর তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ বিকেল ৩টে নাগাদ কলকাতায় তৃণমূলে যোগ (Join in TMC) দেবেন তিনি।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh) ও দেবশ্রী চৌধুরীর (Debasree Chaudhuri) হাত থেকে গেরুয়া পতাকা তুলে নিয়েছিলেন তিনি। এরপর বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়কও হন। কিন্তু, তারপর থেকেই দলের সঙ্গে তাঁর সমস্যা তৈরি হয়। একের পর এক দল বিরোধী মন্তব্য করতে শুরু করেন তিনি। জেলা বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে জেলা নেতৃত্ব ও দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। এমনকী, দলীয় কর্মসূচি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। তারপর সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকেই নিজের দফতরের মধ্যে থাকা দেবশ্রী চৌধুরীর ছবিও ঢেকে দিয়েছিলেন। এর কারণ হিসেবে তিনি জানিয়েছিলেন যে, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র (Conspiracy) করা হচ্ছে। কোনও ষড়যন্ত্রকারীর ছবি তিনি নিজের কার্যালয়ে রাখবেন না।
আরও পড়ুন- আপনার অজান্তেই কি আধার কার্ড কোথাও ব্যবহার হয়েছে, জেনে নিন খুব সহজেই
তারপর অবশ্য শুধুমাত্র দেবশ্রীর ছবিই নয়, তাঁর দফতর থেকে একে একে সরে গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi), স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) ছবিও। তখন থেকেই তাঁর দলবদল নিয়ে তৈরি হয়েছিল জল্পনা। এরপর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। সেই সময় বিজেপির সব নেতাই বাবুলের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। সবার তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল বাবুলকে। তখন অবশ্য বাবুলের পক্ষ নিয়ে একমাত্র কথা বলেছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। তিনি বলেছিলেন, "বাবুল যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা তাঁর ব্যক্তিগত। দলে সম্মান পাননি বাবুল। তাই দল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। বাবুল ঠিক কাজ করেছেন। কে কোথায় অসম্মানিত বোধ করছেন, তা দেখতে হবে দলকে। যাঁরা দল ছাড়ছেন, তাঁরা অসম্মানিত হয়েই ছাড়ছেন। আমার দাবি মানার জন্য দলকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি। সময় মতো কাজ না-হলে এবার আমাকে অন্য কিছু ভাবতে হবে।"
আরও পড়ুন- 'কেউ বাঁচাতে পারবে না', আলাপন বন্দ্য়োপাধ্যায়কে খুনের হুমকি, তদন্তে গোয়েন্দা
এদিকে বাবুলের সমর্থনে করা মন্তব্যেই নিজের দল ছাড়ার ও তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন রায়গঞ্জের বিধায়ক। যা তাঁর দল ছাড়ার জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। আর তারপরই ১ অক্টোবর বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে দল ছাড়েন তিনি। এর জন্য অবশ্য দেবশ্রী চৌধুরীকে দায়ী করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, দেবশ্রীর সঙ্গে এক জায়গায় থেকে কাজ করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। সেই কারণেই দল ছাড়ছেন। অবশেষে আজ তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে জানা গিয়েছে।