সংক্ষিপ্ত
মাঝরাতে এক থেকে দেড় ঘন্টার নোটিসে বাধ্য হয়ে ঘর ছেড়ে অনেক পরিবার। ফের পুরোনো আতঙ্ক ফিরল বউবাজারে।রেলের তরফে আবাসিকদের জন্য কোনও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ।
মেট্রো প্রকল্পের জেরে একাধিক বাড়ি-রাস্তায় ফাঁটল। ফের পুরোনো আতঙ্ক ফিরল বউবাজারে। মেট্রোর কাজ চলাকালীন বউবাজারের দুর্গাপিতুরি লেনের একাধিক বাড়িতে ফাঁটল দেখা গিয়েছে। বাড়ি খালি করার জন্য আচমকাই মাইকিং শুরু। ঘটনাস্থলে পৌছন রেলের আধিকারিকরা। মাঝরাতে এক থেকে দেড় ঘন্টার নোটিসে বাধ্য হয়ে ঘর ছেড়ে অনেক পরিবার। বিপজ্জনক বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকা জরুরী নথি এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ক্রিক রো হোটেল কিউ ইন এবং গনেশ চন্দ্র এভিনিউের ব্রডওয়ে হোটেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। যদিও হোটেলের তরফ থেকে বা রেলের তরফে আবাসিকদের জন্য কোনও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ।
মধ্যরাতে ঘর ছেড়ে কার্যত ফঁসছেন বউবাজারের বাসিন্দারা। এক বাসিন্দা বলেছেন, 'আমরা তো হোটেলে খেতে যেতে পারি না। তাই আমাদের মাঝেমধ্যেই হোটেলে খাওয়াতে নিয়ে যায় ওরা।' অপর এক বাসিন্দা জানিয়েছেন,' ১ ঘন্টার নোটিশে ঘর ছাড়তে হয়েছে। তাহলে কী অবস্থা হয়, ভাবুন। বয়স্ক মানুষ, বাচ্চাগুলিও সঙ্গে ছিল। মেট্রো তো একবার ভাবলই না , কী খাবেন ওরা।' প্রসঙ্গত, ২০১৯ এর ২০২২ সালের মে। এত দ্রুত যে স্মৃতি উসকে দেবে, ভাবেননি বউবাজারের দুর্গাপিতুরি লেনের বাসিন্দারা। মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের তরফে প্রত্যেকেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন। যদিও মেট্রোর তরফ থেকে এখনও নির্দিষ্ট কোনও বক্তব্য মেলেনি। বউবাজারবাসীদের একটাই প্রশ্ন, প্রাণের দাম নেই কি তাঁদের। কেন বারবার ফাঁটল, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষও।
আরও পড়ুন, আজও ভিজবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ, প্রবল বর্ষণ উত্তরবঙ্গের ৫ জেলায়
তবে বউবাজার মেট্রো নিয়ে এই প্রথমবার সমস্যা নয়, এর আগেও হয়েছে একাধিকবার পৃথক ঘটনা। গতবছর সেপ্টেম্বরে আচমকাই। বউবাজার বরবার বিবি গাঙ্গুলী স্ট্রিটের বাজারে আচমকায় মাটি ভেদ করে বেরিয়ে আসে প্রায় ১০ ফুট উচ্চতা ফেনা জল। সবজিয়ালারা বুঝে ওঠার আগেই তা ছিটিয়ে পড়ল চারিদিকে। কাঁচা টাকা আর সবজি বাঁচাতে গিয়ে সেই ফেনা পড়তেই জ্বালা করে ওঠে জল হাতে-পা। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়ায় চারিদিকে। বউবাজার ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে মেট্রোর কাজ চলার সময় হঠাৎ করে কাঁদা জল উঠতে থাকে। আট দশ ফুট সেই কাদা জল ওঠে। বিবি গাঙ্গুলী স্ট্রিট এর তখন সবজি নিয়ে বসেছিলেন বেশ কয়েকজন বিক্রেতা। টুকটাক কেনাকাটা হচ্ছিল। সবজি বিক্রেতা বলেন সেই কাদাজল বালীসহ জলের রাসায়নিক ও ছিল কারণ হাত জ্বলে যাচ্ছিল। বেশ কয়েকজন বিক্রেতার কিছু সবজি ও টাকা পয়সা নষ্ট হয়। অনেকে সবজি ধুয়ে মুছে নিতে বাধ্য হন।
আরও পড়ুন, 'যিনি আমাকে হারানোর চেষ্টা চালিয়েছেন, এখন আমি তাঁরও বিধায়ক', শপথ নিতে এসে খোঁচা বাবুলের
সবজি বিক্রেতা নয়ন সিং জানিয়েছিলেন, 'রাত ৯ টা ১০ থেকে শুরু হয়েছিল। নীচে প্রায় ৮-১০ ফুট উচ্চতায় একটা ফেনা উঠছিল। শুনেছি, মেট্রোর কাজ হচ্ছে এখানে মাটির তলায়। সেখান থেকেই হয়তো এই রাসায়নিক তরল বেরিয়েছে। প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ মিনিট ধরে এটা বেরিয়েছে।আমাদের কাঁচা টাকা সহ সবজি যা ছিল সবই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এমনকি আমাদের হাত-পাগুলিও জ্বালা করছে। সেই রাসায়নিক তরল বেরোনো থামেনি। শুধু তার উপরে বস্তা চাপা দেওয়া হয়ছে।' বউ বাজারে মেট্রো আতঙ্কের এক বছর পার হয়েছে। তবুও আচমকাই যেন সেই আতঙ্ক ফিরে এল আবার।
আরও পড়ুন, ফিরহাদের বাড়িতে এবার প্রসেনজিৎ, সৌরভ জল্পনার পর জল কোন দিকে ? কী বললেন মেয়র