সংক্ষিপ্ত

হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আর এনিয়ে ফের সরব হয়েছে বিরোধীরা। এনিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

একের পর এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে রয়েছে রাজ্য রাজনীতি। একদিকে নারী নির্যাতন আর অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্টে আইনজীবীদের বিক্ষোভ। হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে তৃণমূলপন্থী আইনজীবীদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আর এনিয়ে ফের সরব হয়েছে বিরোধীরা। এনিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলকে একহাত নেন তিনি। বলেন, 'বাংলাকে রেপ হেভেনে পরিণত করেছে তৃণমূল।'

হাইকোর্টের এই ঘটনা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "গতকাল আর আজ যে গুন্ডামি আমরা দেখলাম, পুলিশ, প্রশাসন অন্যান্য প্রশাসনিক বিভাগ সব জায়গায় দুর্নীতির চরমে পৌঁছে গিয়েছে। বাকি ছিল কোর্ট, সেখানে যেভাবে কালো কোর্ট পরে গুন্ডামি করা হল আমার তো সন্দেহ আছে তারা সবাই উকিল কি না।"

আরও পড়ুন- সিউড়িতে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে চোট পেলেন শুভেন্দু, পায়ে পড়ল ব্যারিকেড

উল্লেখ্য, দু'দিন ধরে উত্তাল হয়ে রয়েছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার আদালত চত্বরে আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছিল। বুধবারও বাদ গেল না। তবে এবার আর বাইরে নয়, একেবারে আদালতের ভিতরে বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে। এই বিক্ষোভ হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ১৭ নম্বর এজলাসে। এজলাস বয়কট করতে চেয়ে বিক্ষোভ দেখান আইনজীবীদের একাংশ। এমনকী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসের সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। এমনকী, ঘেরাও করা হয়।

এই বিক্ষোভ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, "জজের ঘরের সামনে যে ভাবে গুন্ডামি হয়েছে তাতে কি আর নিরপেক্ষ থাকা সম্ভব। উনি যেটা আশঙ্কা করেছেন, আদালতের রায় লিখে নিয়ে গিয়ে জজের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে যদি বলা হয় সই করো, কতক্ষণ না বলতে পারবেন? কজন না বলতে পারবেন? মানুষ কি সুবিচার পাবে? পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখেছি বিডিওর মাথায় বন্দুক ঠেকানো হয়েছে। বিভিন্ন খুনের ময়নাতদন্তে চিকিৎসকের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে সই করতে বলা হচ্ছে। বিচারকের মাথায় যদি বন্দুক ঠেকানো হয় তাহলে মানুষ কাকে ভরসা করবে?"

আরও পড়ুন- হাঁসখালি যাচ্ছে বিজেপির পাঁচ সদস্যের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি, দ্রুত জমা পড়বে রিপোর্ট

দিলীপের প্রশ্ন, "দেশে বা পৃথিবীতে অন্য কোথাও কি এই ঘটনা ঘটে? এতদিন বাইরে থেকে ধমকানো হত, এখন কোর্টের ভিতরে ঢুকে চমকানো ধমকানো হচ্ছে। তাঁর ওপর শারীরিক আক্রমণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিচারপতি। আর অস্বাভাবিক কিছু নয়, ভোটের পর থেকে আমাদের ২০০ জন কর্মী খুন হয়েছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে একজন শিক্ষক ভোট লুঠ করতে দেননি বলে তাঁর দেহ রেল লাইন থেকে উদ্ধার হয়েছে। কেউ সেটা দেখে ফেললে তাকে গাছে ঝুলিয়ে দেবে। পুলিশ প্রমাণ সংগ্রহ করলে থানা জ্বালিয়ে দেবে। আর তারপর মুখ্যমন্ত্রী আর তাঁর নেতারা বলবেন, এত ছোট ঘটনা ঘটতেই পারে। এই কি বাংলার মানুষের প্রাপ্য ছিল। বাংলাকে রেপ হেভেনে পরিণত করেছে তৃণমূল।"

প্রসঙ্গত, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বিভিন্ন ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আর নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের বিরুদ্ধে কেন সরব হয়েছেন?‌ এই প্রশ্ন তুলে প্রতিবাদ করে বিচারপতির এজলাস বয়কট করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের আইনজীবী সেলের সদস্যরা। এজলাসের বাইরে চিৎকার করতে থাকেন তাঁরা।