সংক্ষিপ্ত

  • দিনের আলোর মত পরিষ্কার হচ্ছে সব্যসাচীর বিজেপি যোগ শুধুই সময়ের অপেক্ষা
  • তবে কেন এত সময় নিচ্ছে তৃণমূল
  • দলক আসলে তাঁকে গিলতেও পারছে না, ওগড়াতেও পারছে না

জল্পনা ছিল তুঙ্গে। তবে রহস্য উন্মোচন হচ্ছে ক্রমশ। যত দিন যাচ্ছে ততই দিনের আলোর মত পরিষ্কার হচ্ছে সব্যসাচীর বিজেপি যোগ শুধুই সময়ের অপেক্ষা। রবিবার দল যেমন তাঁর ডানা ছাটল, তেমনই পাল্টা দিলেন তিনিও। শুক্রবার বিদ্যুৎভবনের কর্মীদের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন সব্যসাচী। ডিএ, বেতনবৃদ্ধির মতো দাবি নিয়ে হওয়া এই মিছিল থেকই হুঙ্কার ছাড়েন সব্যসাচী, তোপ দাদগেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে দল। সব্যসাচীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু হয় তৎপরতা। রবিবার তৃণমূল ভবনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সব্যসাচী এবার থেকে মুকুটহীন সম্রাট হয়ে থাকবেন। ভেঙে বললে, বিধাননগরের মেয়রকে নিস্ক্রিয় করে তাঁর দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের হাতে। 

অবশ্য এখানেই শেষ নয়, বলা যায় এখানেই নাটকের শুরু। রবিবার বিকেলে এই বৈঠকের পরেই রাতে সল্টলেকের সুইমিং পুল অ্যাসোশিয়েশানে দেখা গেল তাঁকে।  আর কিছুক্ষণ পরেই এলেন তাঁর 'অতিথি', মুকুল রায়। সেখান থেকেই হল সাংবাদিক বৈঠকে মুকুল রায় একের পরে এক সার্টিফিকেট দিয়ে যান সব্যসাচীকে। পরিষ্কার প্রমাণ হয় দল নয় মুকুল রায়ই গডফাদার সব্যসচীর।
আরও পড়ুনঃ 'মুখ্যমন্ত্রী তো প্রধানমন্ত্রীকে পাঞ্জাবি পাঠান', মুকুলের পরামর্শের পরেই প্রশ্ন সব্যসাচীর
সব্যসাচীর সঙ্গে ডিনার সারলেন মুকুল, 'ভাইকে' পাশে বসিয়ে মমতাকে নিশানা 'দাদার'

রবিবার সকালই এই মুকুল-সব্যসাচী ঘনিষ্ঠতা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছিলেন, দলেও থাকব দলের প্রধান বিরোধীর সঙ্গে নিমন্ত্রণ খাব এটা হয় না। প্রশ্ন হল এটা যে হয়না. তা বুঝতে এত সময় নিল কেন দল? দলবিরোধীতার সব চিহ্ণ থাকা সত্ত্বেও কেন কোনও ব্যবস্থাই নিল না তৃণমূল? চোখ রাখা যাক সাম্ভব্য কারণে।

লোকসভা ভোটের পরে পুরসভা দখলের ঝড় শুরু হয়েছে। ইতিমধ্য ৬টি পুরসভা দখল হয়ে গিয়েছে। এদিকে এগিয়ে আসছে পুরভোট। এই অবস্থায় তৃণমূল একটিও পুরসভা বিনাযুদ্ধে খোয়াতে চায় না। এদিকে তৃণমূল সুপ্রিমো ভালই জানেন বিধাননগরে সব্যসাচীর দাপট কতটা। সেই জন্যেই গত রবিবার তাঁকে ছাড়া দল বিধাননগরের কাউন্সিলারদের ডেকেছিল। আসলে তা ছিল জল মাপার সভা। তৃণমূল এই মুহূর্তে কোনও ভাবেই খাস কলকাতার বুকে ইন্দ্রপতন সহ্য করতে পারবে না। বলা যায় শ্যাম রাখি না কুল রাখি
দশা তৃণমূলের। সব্যসাচী থাকলে দলের ক্ষতি বিলক্ষণ, আবার সব্যসাচী গেলে কত বড় ক্ষতি হতে পারে, ঠিক কতজন তাঁর সঙ্গে হাত মেলাবে তা জানে তৃণমল। এই অবস্থায় কাঁটা গিলতেও পারছে না উগরাতেও পারছে না তৃণমূল। এখন অপেক্ষা শুধু সব্যসাচীর সংকেতের। বিপর্যয় মোকাবিলায় তৈরি হচ্ছে তৃণমূল।