শীতে সর্দি-কাশি এবং অ্যালার্জির সমস্যা চলতেই থাকে। ওষুধ খেয়ে তো সমস্যা দূরে রাখাই যায়। কিন্তু তার থেকেও ভাল হয় যদি প্রাকৃতিক উপায়ে রোগকে দূরে রাখা যায়। শীতের কিছু আনাজ নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে তা এই ধরনের সমস্যা দূরে রাখতে সাহায্য করবে।

শীতে সর্দি-কাশি ও অ্যালার্জির সমস্যা কমাতে গাজর, মিষ্টি আলু, ব্রোকলি, পালং শাক এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলালেবু, লেবু ইত্যাদি খান। এই সবজি ও ফলগুলিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং ফাইবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং প্রদাহ কমায়। এছাড়া, বাজরা, ওটস, কুইনোয়া এবং আদার মতো খাবারও উপকারী হতে পারে।

শীতে সর্দি-কাশি ও অ্যালার্জির জন্য উপকারী আনাজ ও খাবার:

১) গাজর এবং মিষ্টি আলু: এগুলিতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

২) ব্রোকলি: এটি ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

পালং শাক ও অন্যান্য সবুজ

৩) শাকসবজি: ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ এই শাকসবজিগুলি সর্দি-কাশির সময় শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

৪) ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল: কমলালেবু, লেবু, স্ট্রবেরি এবং টমেটোর মতো ফলগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৫) আদা: এটি একটি প্রাকৃতিক প্রদাহ-বিরোধী উপাদান যা সর্দি-কাশির উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে।

৬) হোল-শস্য: ওটস, বার্লি এবং কুইনোয়ার মতো হোল-শস্যগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং জিঙ্কের একটি ভাল উৎস, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৭) পেঁয়াজ: এটিতে থাকা ফ্লেভোনয়েডস অ্যালার্জির লক্ষণগুলি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিহিস্টামিন হিসাবেও কাজ করতে পারে।

৮)টম্যাটো :

টম্যাটোতে আছে লাইকোপেন নামের শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। যা ফুসফুসের কোষের ক্ষয় কমাতে এবং শরীরে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। এটি শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতেও সহায়ক।

৯) পালং শাকের মতো গাঢ় সবুজ শাকসবজি:

পালং শাক বা গাঢ় সবুজ রঙের শাক সব্জিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। যেমন— ভিটামিন এ বা বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন ই, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং ক্যারোটিনয়েডস । এই উপাদানগুলি শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। সর্দি-কাশি বা অ্যালার্জির সময় শ্বাসনালীর ফোলাভাব ও জ্বালা কমাতে সাহায্য করে।

এই খাবারগুলি কেন উপকারী:

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: এই খাবারগুলিতে থাকা ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে, যা শীতকালে ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

প্রদাহ কমানো: আদা এবং অন্যান্য উপাদানের কারণে এই খাবারগুলি শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া এবং সর্দি-কাশির উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ।

শুকনো কাশি নিয়ন্ত্রণ: গাজর এবং মিষ্টি আলুর মতো ফাইবারযুক্ত খাবারগুলি হজমশক্তি উন্নত করে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

এই খাবারগুলি নিয়মিত খাওয়ার পাশাপাশি, প্রচুর পরিমাণে জল পান করা এবং শরীরকে উষ্ণ রাখা সর্দি-কাশি ও অ্যালার্জির সমস্যা মোকাবিলায় বিশেষভাবে জরুরি।