কাঁধের ব্যথা বেড়ে দেখা দিচ্ছে ফ্রোজেন শোল্ডারের সম্ভাবনা। তবে বিশেষ কিছু রোগীদের ক্ষেত্রে হতে হবে আরো বেশি সাবধান। এর চিকিৎসা সম্ভব হলেও, সময় লেগে যেতে পারে প্রায় ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত।

মাঝ বয়স পেরোলেই শরীরের জায়গায় জায়গায় ব্যাথা শুরু হয়। সবচেয়ে যন্ত্রনা দেয় কাঁধের ব্যাথা। এই বয়সে আর্থ্রাইটিসের সম্ভাবনা কম, তাই বেশিরভাগই তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখেন না বিষয়টা। পেইন রিলিফ মলম আর ব্যাথার ওষুধ খেয়ে দিনের পর দিন চালাতে থাকেন। যা ধীরে ধীরে ফ্রোজ়েন শোলডারের রূপ নেয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে েকে ‘Adhesive Capsulitis’ বলা হয়। এতে কাঁধে ব্যাথা সাথে হাত বা মাথা নাড়াতে না পাড়ার সমস্যা দেখা দেয়।

কেন হয় ফ্রোজেন শোল্ডার ?

ফ্রোজেন শোল্ডার হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে কীভাবে এই সমস্যা হতে পারে তা আগে বোঝা দরকার। কাঁধ এবং হাতের সন্ধিতে একটি বৃত্তাকার বল থাকে যা হাত নড়াচড়া করতে সাহায্য করে। যেকোনো কারণেই হোক সেখানকার পেশী ফুলে গেলে অস্থি সন্ধি শক্ত হয়ে যায়, কাঁধের মাংসপেশী তার নমনীয়তা হারায়। নির্দিষ্ট দূরত্বের পর হাত নড়াচড়া করতে, বিশেষ করে কাঁধের ওপর তুলতে অসুবিধা হয়। কাঁধে ব্যথা, মাংসপেশীতে প্রদাহ শুরু হয়।

এই ফ্রোজেন শোল্ডার সাধারণত ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে। যে কারণেই হোক, প্রথমে কাঁধে ব্যথা হবে, হাত ও কাঁধ নাড়তেও অসুবিধা হবে।

এরপর, ওষুধ খেয়ে ব্যথা কিছুটা কমাতে পারলেও কাঁধের মাংসপেশী তার নমনীয়তা হারাবে, ফলে শক্ত হয়ে যাবে প্রদাহ হবে। এই অবস্থা ৪-১২ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

এতদিনে ব্যথা সারাতে চিকিৎসাধীন থাকলে, ধীরে ধীরে ব্যথা সেরে উঠবে। মাংসপেশী তার নমনীয়তা ফিরে পাবে, কাঁধ আগের মতো নাড়াচাড়া করতে পারবেন। তবে পুরোপুরি সেরে উঠতে ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

চিকিৎসা কীভাবে হয়?

ফ্রোজেন শোল্ডারের সমস্যা বুঝলেই দেরি না করে অস্থিরোগ চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন আগে। অনেক ক্ষেত্রে ঠান্ডা সেঁক এবং ফিজিওথেরেপি করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। তবে ব্যথা বা প্রদাহ ভীষণ বাড়লে স্টেরয়েড ইনজেকশনও নিতে হতে পারে।

কোন কোন রোগ থাকলে সাবধান হতে হবে এক্ষেত্রে?

* দেখা যায়, প্রায় ২০ শতাংশ সুগারে আক্রান্ত রোগীর কোনো না কোনো সময় ফ্রোজেন শোল্ডারের সমস্যা হয়েছে।

* থাইরয়েডের মাত্রা বেশি বা অতিরিক্ত কম থাকলেও ফ্রোজেন শোল্ডারের সমস্যা হতে পারে।

* হার্টের রোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও ফ্রোজেন শোল্ডার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

* পার্কিনসন্স রোগ থাকলেও ফ্রোজেন শোল্ডার হতে পারে।

* চোখে আক্রান্ত হয়ে থাকলে আপনার ফ্রোজেন শোল্ডার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকবে।