দুধ খেলে পেটে নানা রকম সমস্যা হয় বলে অনেকেই দিনের বেলায় দুধ খেয়ে নিতে চান। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, দুধের উপকারিতা যদি বুঝতেই হয় তা হলে তা খেতে হবে রাতে। ঘুমোনোর আগে দুধ খেলে ঠিক কী কী উপকার মিলতে পারে?

অনেকেরই দুধ খেলে অম্বল হতে পারে। বিশেষ করে যদি দুধের ফ্যাট বেশি থাকে বা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকে, কারণ ফ্যাট হজম হতে সময় নেয় এবং ল্যাকটোজ সমস্যা তৈরি করে, তবে স্কিম মিল্ক বা কম ফ্যাটযুক্ত দুধ সাময়িক আরাম দিতে পারে। সমাধান হিসেবে খাবার ও পানীয়ের সময় পরিবর্তন, যেমন: দুধের সঙ্গে বা পরে খাওয়া এড়িয়ে, হালকা গরম দুধ বা প্ল্যান্ট-বেসড মিল্ক চেষ্টা করা, এবং ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

কেন দুধ খেলে অম্বল হতে পারে?

* ফ্যাটের পরিমাণ: ফুল ফ্যাট দুধ বা ক্রিমযুক্ত দুধে ফ্যাট বেশি থাকে, যা লোয়ার ইসোফেজিয়াল স্ফিঙ্কটার (LES) পেশীকে শিথিল করে, ফলে পাকস্থলীর অ্যাসিড সহজেই খাদ্যনালীতে উঠে আসে।

* হজম প্রক্রিয়ায়: দুধের প্রোটিন এবং ফ্যাট হজম হতে বেশি সময় নেয়, যা পাকস্থলীর অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে দিতে পারে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণ হতে পারে।

* ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা: যদি আপনার ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকে, দুধ খেলে গ্যাস, পেট ফাঁপা এবং অস্বস্তি হতে পারে, যা অম্বলের সঙ্গে মিশে সমস্যা বাড়ায়।

সমাধান ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন:

1 . দুধের ধরন পরিবর্তন: ফুল ফ্যাট দুধের বদলে স্লিম মিল্ক (চর্বিহীন দুধ) বা প্ল্যান্ট-বেসড মিল্ক (যেমন আমন্ড মিল্ক) পান করুন, যা অ্যাসিড প্রশমিত করতে সাহায্য করতে পারে।

2 . খাবারের সময়:

* খাবারের সঙ্গে: ভারী খাবারের সঙ্গে দুধ খাওয়া এড়িয়ে চলুন। * ঘুমানোর আগে নয়: ঘুমানোর ঠিক আগে দুধ পান করা থেকে বিরত থাকুন, কারণ এতে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বাড়তে পারে। * আলাদাভাবে খান: দুধ পান করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেছে নিন, যখন আপনি কিছুক্ষণের জন্য শুয়ে পড়বেন না।

3 . ঠান্ডা দুধ এড়িয়ে চলুন: ঠান্ডা দুধ সাময়িক আরাম দিলেও, এটি LES পেশীর কার্যকারিতা কমাতে পারে, তাই হালকা গরম দুধ বা স্বাভাবিক তাপমাত্রার দুধ পান করতে পারেন।

4 . কম পরিমাণে খান: একবারে বেশি না খেয়ে অল্প পরিমাণে পান করুন।

5 . অন্যান্য খাবার: ফাইবারযুক্ত খাবার, ক্ষারীয় খাবার (যেমন তরমুজ, শসা), এবং আদা-দারুচিনি দিয়ে তৈরি পানীয় অম্বল কমাতে সাহায্য করতে পারে।

6 . ল্যাকটোজ-মুক্ত বিকল্প: যদি ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স থাকে, তাহলে ল্যাকটোজ-মুক্ত দুধ বা দুধের বিকল্প ব্যবহার করুন। যদি সমস্যাটি গুরুতর হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।