সংক্ষিপ্ত

মেডিক্যাল জার্নাল কিডনি ইন্টারন্যাশনাল-এ প্রকাশিত হয়েছে একটি রিপোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে, গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিটি স্কিন ফেয়ারনেস ক্রিমে প্রচুর পরিমাণে পারদ ব্যবহার করা হয়।

 

ফেয়ারনেস ক্রিম নিয়ে সামনে এল ভয়ঙ্কর এক গবেষণা রিপোর্ট। রিপোর্টে বলা হয়েছে, স্কিন ফেয়ারনেস ক্রিমের ব্যবহার ভারতে কিডনির সমস্যা বাড়াচ্ছে। ফর্সা ত্বক অনেক ভারতবাসীর প্রিয়। কিন্তু ফর্সা ত্বকের জন্যই অনেকেই দেদার স্কিন ফেয়ারনেস ক্রিম ব্যবহার করেন। ভারতের বাজারে এজাতীয় ক্রিমের চাহিদাও তুঙ্গে। কিন্তু এজাতীয় ক্রিমগুলি কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বলেও দাবি করেছে নতুন গবেষণা রিপোর্ট।

মেডিক্যাল জার্নাল কিডনি ইন্টারন্যাশনাল-এ প্রকাশিত হয়েছে একটি রিপোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে, গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিটি স্কিন ফেয়ারনেস ক্রিমে প্রচুর পরিমাণে পারদ ব্যবহার করা হয়। তাই অত্যাধিক স্কিন ফেয়ারনেস ক্রিমের ব্যবহার মেমব্রানাস নেফ্রোপ্যাথির (MN) সমস্যা বাড়িয়ে তুলছে। ফেয়ারনেস ক্রিমের ব্যবহার কিজনির ফিল্টারকে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত করে। প্রোটিনকে ফুটো করে দেয়।

MN হল একটি আটোইমিউন রোগ। এর ফলে নেফ্রোটিক সিনড্রোম হয়। এটি একটি কিডনির রোগ। এই রোগের কারণে প্রস্রাবের সঙ্গে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন বেরিয়ে যায়। গবেষক বিশেষজ্ঞ সজীশ সিভাদাস লিখেছেন, এটি ত্বকের মাধ্যমে কিডনিতে পৌঁছায় যা কিডনির ফিল্টারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তিনি আরও বলেছেন, ফেয়ারনেস ক্রিম ভারতের বাজারে প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হয়। এজাতীয় ক্রিম দ্রুত ফর্সা করে দেয়। কিন্তু তার মূল্য চোকাতে হয় কিডনির সমস্যা দিয়ে। তিনি আরও বলেছেন, ফর্সা হওয়ার প্রতি আসক্তি ভয়ঙ্কর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত এই ক্রিমের ব্যবহার বন্ধ হওয়া দরকার।

২০২১ সালের জুলাই থেকে সমীক্ষা শুরু হয়েছিল। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ হয় । ২২টি ক্ষেত্রে পরীক্ষা করে দেখা গেছে ফেয়ারনেস ক্রিম MN রোগের জন্য দায়ী। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে রোগীদের মধ্যে দেখা গিয়েছিল প্রবল ক্লান্ত, প্রস্রাব বৃদ্ধি। কিন্তু প্রত্যেক রোগীর প্রস্রাবে প্রোটিনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। একজন রোগীর সেরিব্রাল ভেইন থ্রম্বোসিস, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধেছিল, কিন্তু সব ক্ষেত্রেই রেনাল ফাংশন সংরক্ষিত ছিল।

রিপোর্টে বলা হয়েছে ১৫ জন রোগীর মধ্যে ১৩ জনই এই উপসর্গগুলি দেখা দেওয়ার আগে স্কিন ফেয়ারনেস ক্রিম ব্যবহার করেছিল। বাকিদের একটি দেশীয় ওষুধ ব্যবহার করার ইতিহাস রয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে- অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফেয়ারনেস ক্রিম ব্যবহার বন্ধ করার পরেই রোগীকে সুস্থ করার রয়েছে। তাই স্পষ্ট যে এজাতীয় ঝুঁকি পূর্ণ ক্রিম না ব্যবহার করাই শ্রেয়। বিশেষজ্ঞ সজীশ ফেয়ারনেস ক্রিমের ব্যবহার বাড়ানোর জন্য প্রভাবশালী ও অভিনেতাদের এজাতীয় ক্রিমের বিজ্ঞাপন করার জন্য দায়ী করেছেন। তিনি আরও বলেছেন, এজাতীয় ক্রিম বর্তমানে মাল্টি বিলিয়ন ডলার শিল্পে পরিণত হয়েছে। যা দেশের অনেককেই অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।