পুজো আসতেই সকলের মধ্যে শরীরচর্চার করার প্রবণতা আরো বেড়ে ওঠে। জিমে যাওয়া থেকে শুরু করে হেলদি ড্রিঙ্কস এবং হেলদি কিছু রোজকার কার্যকলাপ বদলালে থাকতে পারবেন সুস্থ এবং ঝরবে মেদ।

পুজো আসছে। একথা নিয়ে যখনই আলোচনা হয়, অনেকের মনটা আনন্দে মেতে ওঠে। পুজো মানেই নতুন জামাকাপড় পরে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘুরে ঠাকুর দেখা, সঙ্গে নানা মুখরোচক খাবার খাওয়া। তবে নতুন পোশাক পরবেন আর শরীরে থাকবে মেদ, এমনটা কেউ চান না। এ বছর সেপ্টেম্বরের শেষে পুজো। তাই পুজোর আগে নিজের শরীর স্বাস্থ্যকে ফিট রাখতে কে না চাইবে। শরীরকে ঠিকঠাক সতেজ রাখতে এবং শরীরের চর্চা করতে আমরা অনেক কিছুই করে থাকি। পুজোর কটা দিন যাতে সব রকম আউটফিটে আমরা আসতে পারি তার জন্য একটুও মেদ আমরা শরীরে যাতে না জমে মোটামুটি দু এক মাস আগে থেকেই সেই কসরত শুরু করে দিয়েছি। সেই জন্য খুব কষ্ট করে হলেও ডায়েটটা মেইনটেইন করে চলতেই হবে। এর সাথে জিমেও যাচ্ছেন ঘাম ঝরাচ্ছেন। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না সকালে কয়েকটি কাজ সেরে ফেললেই দ্রুত ওজন কমতে পারে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বেশ কিছু কাজই ওয়েট লস করতে আমাদের সাহায্য করে। চলুন তাহলে সেই সমস্ত জিনিসগুলি নিয়ে আলোচনা করা যাক।

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথমেই এক গ্লাস জল খান। তা ঈষদুষ্ণ হলে তো আরও ভালো। তাতে হজম ও মেটাবলিজম উন্নত হয়। জনপ্রিয় জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৫০০ মিলি জল মেটাবলিক রেট ২৪-৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। তাতে দ্রুত ক্যালোরি বার্ন হয়। এছাড়া জল খেলে সকালের খাই খাই ভাব দূর হয়। ফলে ওভার ইটিংয়ের প্রবণতা অনেকাংশে কমে যায়।

সকালে হালকা শরীরচর্চা করলেও অনেক উপকার মেলে। ঘুম থেকে ওঠার পর ১০-১৫ মিনিটের স্ট্রেচিং করুন, এতে আপনার যোগ বা ব্রিস্ক ওয়াকিং এনার্জি বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে ফ্যাট গলে দ্রুত। হার্ভার্ডের গবেষণায় উঠে এসেছে, মর্নিং অ্যাক্টিভিটি মেটাবলিক ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীর ভালো ভাবে জমে থাকা ফ্যাট থেকে এনার্জি সংগ্রহ করতে পারে।

এছাড়া প্রতিদিন শুধুমাত্র শরীরের চর্চা বলতে ব্যায়াম বা জিমে যাওয়াই নয় তার সাথে খেতে হবে সঠিক মাত্রায় খাবার। যেমন রোজ প্রোটিনে ঠাসা ব্রেকফাস্ট খান। যেমন ডিম, গ্রিক ইয়োগার্ট বা ওটস ও বাদাম মিশিয়েই ব্রেকফাস্ট সারুন। এতে পেট ভর্তি থাকে দীর্ঘক্ষণ। এদিকে প্রোটিন মাংসপেশির গঠন ও মেরামতিতে কাজে লাগে। মিড-মর্নিং ক্রেভিং কমে এমন ডায়েটের জন্য। গবেষণাতেই দেখা গিয়েছে, কার্বের তুলনায় প্রোটিনে ঠাসা ব্রেকফাস্ট সামগ্রিক ভাবে ক্যালোরি পরিমাণ কমায়।

তার সাথে সামান্য হেলদি ফ্যাট থাকুক রোজকার পাতে। অ্যাভোকাডো, বাদাম ও বীজের মতো হেলদি ফ্যাট ব্রেকফাস্টে রাখার চেষ্টা করুন। তাতে পেট ভর্তি থাকবে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা থাকবে স্থিতিশীল। গবেষণায় উঠে এসেছে, সকালের খাবার হেলদি ফ্যাট থাকলে পরবর্তী সময়ে স্ন্যাকিংয়ের প্রবণতা কমে। যে কারণে ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে।

তবে এত যখন কষ্ট করছেন শরীরের মেদ ঝরাতে সেক্ষেত্রে পেস্ট্রি, মিষ্টিযুক্ত সিরিয়াল ও মিষ্টি পানীয় সকালে ভুলেও খাবেন না। তাতে চট করে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে যায়। যে কারণে খিদে পায়। সেজন্য ভুলভাল খাওয়ার প্রবণতাও দেখা যায়। তা থেকেই ওজন বাড়ে। তাই ব্রেকফাস্টে মিষ্টি খাবার কোনও মতেই খাওয়া যাবে না।