আনারসের রসে ভিটামিন সি আছে। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যার জন্য মানুষের শরীরে আনারসের রস হজম শক্তি বাড়ায়। ত্বক চুলের সমস্যা থেকে রক্ষা করে এবং হার্ট সংক্রান্ত সমস্যা রক্ষা করে।

আনারসের রসে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে থাকে। যা একটি মানুষের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হজমশক্তি উন্নত করে, প্রদাহ কমায় এবং ত্বক ও চোখের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে। এতে থাকা ব্রোমেলাইন নামক এনজাইম শরীর থেকে শ্লেষ্মা বের করতে সাহায্য করে এবং সর্দি, কাশি ও ব্রঙ্কাইটিসের মতো প্রদাহজনিত সমস্যায় উপকারী।

স্যালাড হোক বা কন্টিনেন্টাল রান্না এতেও আনারসের স্বাদে যুক্ত হবে এক নতুন মাত্রা। তবে শুধু স্বাদেই নয়, পুষ্টিগুণেও এর জুড়ি মেলা ভার। বিশেষ করে আনারসের রসকে বলা হয় একাধিক রোগের মহৌষধ।

এবার আসুন জানা যাক আনারসের রসের কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা:

* হজমশক্তি বাড়ায়: আনারসের সবচেয়ে বড় গুণ হল এর হজমশক্তি বাড়ানোর ক্ষমতা। এর মধ্যে ‘ব্রোমেলিন’ নামক একটি প্রোটিওলাইটিক এনজাইম থাকে, যা প্রোটিনকে ভেঙে ক্ষুদ্র অণু বা অ্যামিনো অ্যাসিডে পরিণত করতে সাহায্য করে। ফলে আমিষ বা গুরুপাক খাবার খাওয়ার পর এক গ্লাস আনারসের রস খেলে তা হজমে সহায়তা করে এবং পেট ফাঁপা, গ্যাস বা বদহজমের মতো সমস্যা দূর করে। যাঁদের অগ্ন্যাশয় ঠিক মতো কাজ করে না, তাঁদের ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত উপকারী।

* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: আনারসে থাকা ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি শ্বেত রক্তকণিকার কার্যকারিতা বাড়িয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে মজবুত করে তোলে। এর মধ্যে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ফেনোলিক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মুক্তি দেয়। ফলে সাধারণ সর্দি-কাশি, ফ্লু এবং অন্যান্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীর লড়াই করার শক্তি পায়।

* প্রদাহরোধী গুণাবলী: আনারসের রস প্রদাহ কমাতে সহায়ক, যা বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।

* ত্বকের স্বাস্থ্য রক্ষা: আনারসে থাকা উপাদান ত্বকের যত্নে সহায়ক এবং ত্বককে সতেজ রাখে। সর্দি-কাশি ও ব্রঙ্কাইটিস থেকে মুক্তি: আনারসের রস ঠান্ডা ও কাশি কমাতে সাহায্য করে, এবং ব্রঙ্কাইটিস ও সাইনোসাইটিসের মতো শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় উপকারী হতে পারে।

* হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়: হাড়কে মজবুত রাখতে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ম্যাঙ্গানিজ নামক খনিজটিও অত্যন্ত জরুরি। এক গ্লাস আনারসের রস দৈনিক ম্যাঙ্গানিজের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ পূরণ করতে পারে। ম্যাঙ্গানিজ হাড়ের গঠন এবং ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে থাকা কপার সুস্থ কানেক্টিভ টিস্যু তৈরিতেও সহায়তা করে। ফলে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমে।

* ত্বক ও চোখের জন্য উপকারী: আনারসের রসে থাকা ভিটামিন সি এবং বিটা-ক্যারোটিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ভিতর থেকে উজ্জ্বল করে তোলে। ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ চোখের স্বাস্থ্য রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের ঝুঁকি কমায়।

* হার্টের স্বাস্থ্য: আনারসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ভূমিকা রাখে।

* শরীরকে শক্তি যোগায়: আনারসে থাকা ক্যালরি শরীরে শক্তির জোগান দেয়, যা ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।

সুতরাং, আনারসের রস একটি পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর পানীয়, যা সামগ্রিক শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।