গ্রীষ্মকালে শরীরকে ঠান্ডা ও সতেজ রাখতে কাঠবাদামের দুধের জুড়ি নেই। ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স, ওজন কমানোর পাশাপাশি ত্বক ও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এই পানীয়।
গ্রীষ্মকালে শরীরকে ঠান্ডা ও সতেজ রাখতে চাইলে এক গ্লাস ঠান্ডা কাঠবাদামের দুধ হতে পারে দারুণ বিকল্প। সুস্বাদু ও সহজপাচ্য এই পানীয়ট শুধু তৃষ্ণাই মেটায় না, বরং শরীরের জন্য উপকারী। ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স -এ ভুক্তভোগীদের জন্য কাঠবাদামের দুধ হতে পারে দারুন উদ্ভিজ্জ পুষ্টির সম্ভার। সহজপাচ্যও হওয়ায় গ্যাস-অম্বলের সম্ভাবনাও কম। আজকাল দেশে বিদেশে ভেগানদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় এই দুধ।
উপকারিতা :
১. ক্যালোরি কম: কাঠবাদামের দুধে ক্যালোরি কম থাকে। ফলে ওজন কমাতে চাইলে ডায়েরি প্রোডাক্ট এর বদলে কাঠ বাদামের দুধ দিয়ে তৈরি মিষ্টি, আইসক্রিম, মিল্ক শেক ইত্যাদি খেতে পারেন। এক কাপ কাঠবাদামের দুধে ১০০-১২০ ক্যালোরি মেলে।
২. ল্যাক্টোজ় থাকে না : গরুর দুধে ল্যাক্টোজ় থাকে। এটি এক ধরনের শর্করা। ল্যাক্টোজ় হজম করার জন্য একটি বিশেষ ধরনের উৎসেচকের প্রয়োজন। নাম, ‘ল্যাকটেজ় ’। সাধারণত মানবদেহেই এই উৎসেচক উৎপন্ন হয়। কিন্তু কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এই উৎসেচক উৎপাদনের হার খুবই কম। যাঁদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে এই উৎসেচক উৎপন্ন হয় না, তাদের ল্যাক্টোজ় ইনটলারেন্স হয়। ডেয়ারি প্রোডাক্ট-এর কিছু খেলে পেট ফাঁপা, বদহজম ও বমি বমি ভাবের মতো একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়। কিন্তু কাঠবাদামে ল্যাক্টোজ় থাকে না। ফলে যাঁদের গরুর দুধ সহ্য হয় না, তাঁরাও এটি অনায়াসে খেতে পারেন।
৩. পুষ্টিতে ভরপুর : আমেরিকার কৃষি দফতরের তথ্য বলছে, কাঠবাদামে রয়েছে ক্যালশিয়াম, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই। হাড় মজবুত করতে ও শরীর ভাল রাখতে যা অত্যন্ত উপকারী। গরমের দিনে এই দুধ খেলে এক দিকে যেমন শরীরে জলের চাহিদাও মিটবে, তেমনই প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পাবে শরীর। গরমে শরীর রিফ্রেশ রাখতে কোন সফট ড্রিংক্সের বদলে এই দুধ অত্যন্ত উপাদেয়।
৪. ত্বক ভালো রাখে : কাঠবাদামের দুধে রয়েছে ভিটামিন ই ও প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এই দুটিই ত্বকের জন্য ভাল। ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’-এর জার্নালে প্রকাশিত ২০১৮ সালের একটি গবেষণাপত্রে দেখা গেছে, ত্বকের পক্ষে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যাল দূর করতে সাহায্য করে ভিটামিন ই। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখতে, ত্বক উজ্জ্বল ও সজীব রাখতে সাহায্য করে।
৫. হাড়ের যত্নে : ফোর্টিফায়েড কাঠবাদামের দুধে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন D থাকায় হাড়ের গঠন মজবুত হয়।
কীভাবে খেতে পারেন?
কাঠবাদামের দুধ ঠান্ডা করে পান করাই সব থেকে ভালো। চাইলে একটু মধু, খেজুর বা দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে স্বাদ বাড়ানো যায়। আবার শুধু খেতে হবে এমনটা নয়, স্মুদি, কোল্ড কফি, বা অন্যান্য রিফ্রেসিং ঠান্ডা পানীয় হিসেবেও খাওয়া যায়। কাস্টার্ড পুডিং বা পায়েসও বানিয়ে নিতে পারেন এই দুধ দিয়ে।


