অবহেলার পাত্র নয় শাঁকালু। জানলে অবাক হবেন যে কতটা উপকারী এই ফলটি। কাসুন্দি, বিট লবণ ছাড়া মাখা না হলে মুখে তুলবেন না এমন ধারণা আজই বাদ দিতে হবে এর গুণগান শুনলে।
বাজারে আম কাঁঠাল কলা যে অনুপাতে বিক্রি হয় সেই অনুপাতে পাত্তা পায়না শাঁকালু। ফল না সবজি কিসের মতো দেখতে লাগে তাই ঠাহর করতে কষ্ট হয়। তবে এতটাও অবহেলার পাত্র নয় শাঁকালু। জানলে অবাক হবেন যে কতটা উপকারী এই ফলটি। কাসুন্দি, বিট লবণ ছাড়া মাখা না হলে মুখে তুলবেন না এমন ধারণা আজই বাদ দিতে হবে এর গুণগান শুনলে।
পুষ্টিগুণ :
জল ৯০ গ্রাম
ক্যালোরি ৩৮ গ্রাম
প্রোটিন ০.৭২ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট ৮.৮২ গ্রাম
ফাইবার ৪.৯ গ্রাম
ক্যালশিয়াম ১২ মিলিগ্রাম
আয়রন ০.৬ গ্রাম
ম্যাগনেশিয়াম ১২ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ১৮ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম ১৫০ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ২০.২ মিলিগ্রাম
পুষ্টিবিদরা বলেন, শাঁকালুতে অধিকাংশই রয়েছে জল ও কার্বোহাইড্রেট। উপরের পুষ্টিগুনের তালিকা দেখলেই বোঝা যায় একেবারে ফেলনা নয় শাঁকালুতে।
শাঁকালুর উপকারিতা :
১। হার্টের জন্য ভাল : শাঁকালুতে ‘নাইট্রেট’ রয়েছে বেশি পরিমাণে, যা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। কার্ডিয়োভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়। ২০১৬ সালের একটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে দেখা গেছে নিয়ম করে শাঁকালু খেলে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসে।
২। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে : শাঁকালুতে ফাইবার বেশি এবং ক্যালোরি কম, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার দারুণ ফল শাঁকালু। এটি খেলে ঘন ঘন খিদে পাওয়ার প্রবণতাও রোধ করে।
৩। অন্ত্রের জন্য ভাল : অন্ত্র ভাল রাখার একমাত্র উপাদান হল ফাইবার। অন্ত্র ভাল থাকলে বিপাকক্রিয়াও ভাল চলবে। পেট পরিষ্কার হবে ভালো। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সাহায্য করবে শাঁকালু।
৪। ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে : নিয়মিত শাঁকালু খেলে রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ়ের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। শাঁকালুতে ‘ইনিউলিন’ নামক একটি উপাদান রয়েছে, যা রক্তে অতিরিক্ত শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ : শাঁকালু শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের সমতা বজায় রাখে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ শাঁকালু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
৬। ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে : শাঁকালু ডায়াটারি ফাইবার ভালো উৎস হওয়ায় কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক গবেষণায় ফলস্বরূপ দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ২৭ গ্রামের বেশি ডায়েটারি ফাইবার গ্রহণ করেছে তাঁদের মধ্যে ৫০% এর বেশি ব্যক্তির কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমেছে। রোগ প্রতিরোধী শর্টচেইন ফ্যাটি এসিডের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শাঁকালু।
