ঘরোয়া উপায়ে যেমন গরম জলে পা ভেজানো, পিউমিস স্টোন ব্যবহার, বেকিং সোডা ও লেবুর রস, অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার, ক্যাস্টর অয়েল, হলুদ, তুলসী পাতা, নিম পাতা, রসুন ইত্যাদি ব্যবহার করে কড়ার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

পায়ের দিকে নজরই দেওয়া হয় না। বেশ কিছুদিন ধরে হাঁটতে অসুবিধা হওয়ায় খেয়াল করে দেখলেন পায়ে কড়া হয়েছে। দেখেই অবহেলা। কিন্তু এই কড়া নেহাত নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকার নয়। অবহেলা করলে কড়া বড় হতে পারে, সঙ্গে সংক্রমনের আশঙ্কাও বাড়বে। আস্তে আস্তে ব্যথার কারণে হাঁটতেও অসুবিধা হবে।

কড়া কেন হয়?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় সঠিক মাপের জুতো না পড়লে বা খুব শক্ত ধরনের জুতো পড়লে, অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকার কাজ করলে, খুব বেশি হাঁটাচলা করলে, পায়ের বিশেষ কোনও জায়গা যেখানে জুতোর সঙ্গে ঘর্ষণ বেশি হয় সেখানে কড়া তৈরি হয়। ওই বিশেষ অংশের চামড়া শক্ত হয়ে যায়, অনেক ক্ষেত্রে অসাড়তাও দেখা দিতে পারে। হাঁটতে চলতে ব্যথা ও অস্বস্তি অনুভূত হয়।

সত্ত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ না নিতে পারলে, ঘরেই প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করতে পারেন। নিম্নে বিস্তারিত ঘরোয়া উপায়সমূহ -

১. গরম জলে পা ভেজানো : প্রতিদিন অন্তত ১৫ থেকে ২০ মিনিট গরম জলে পা ভিজিয়ে রাখার চেষ্টা করুন। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং পুঁজ থাকলে দ্রুত ফেটে বেরিয়ে আসবে। এতে চামড়া নরম হয়ে কড়া আস্তে আস্তে উঠে আসতে শুরু করবে।

২. পিউমিস স্টোন বা ঝামা পাথর : গরম জলে পা ভিজিয়ে চামড়া নরম হলে পি এম এস পাথর দিয়ে আলতো করে ঘষলে পায়ের মরা চামড়া উঠে যায়। কড়া কমাতেও সাহায্য করবে।

৩. বেকিং সোডা ও লেবুর রস : এক চা চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে কড়ার ওপর লাগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। দিনে একবার করে লাগালেই প্রভাব চোখে পড়বে।

৪. অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার : কিছুটা তুলোর মধ্যে অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার নিয়ে করার ওপর লাগিয়ে রাখতে হবে। এতে যে কড়া নরমও হবে আর এর অম্লভাবে কড়া তাড়াতাড়ি কমে আসবে।

৫. ক্যাস্টর অয়েল : প্রতিদিন রাতে ঘুমোনোর আগে পায়ে যেখানে কড়া পড়েছে, সেখানে ক্যাস্টর অয়েল লাগান, তারপর মোজা পড়ে ঘুমান। এতেও চামড়া নরম হয়ে করা তাড়াতাড়ি উঠে আসবে।

৬. হলুদ : এক চামচ হলুদ গুঁড়ো নিয়ে তাতে সামান্য জল বা নারকেল তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে, দিনে অন্তত ২ থেকে ৩ বার কড়ার ওপর লাগালে ব্যথাও কমবে আর কড়া শুকোবেও তাড়াতাড়ি। কারণ হলুদের মধ্যে আছে অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা কড়া সারিয়ে তুলতে সাহায্য করবে।

৭. তুলসী পাতা : তুলসী পাতার রস কড়ার উপর অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করবে। ফলে কড়া থেকে সংক্রমণ ছড়াবে না এবং কড়া শুকোবেও তাড়াতাড়ি।

৮. নিম পাতা : নিমপাতা বেটে করার ওপর লাগালে, মিমের অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য কড়া থেকে সংক্রমণ ছড়াতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে।

৯. রসুন : রসুন থেঁতো করে কড়ার উপর লাগানো যায়। রসুনে থাকা অ্যালিসিন করার জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করবে।

সতর্কতা

উপরোক্ত ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করার পরেও যদি কড়া কিছুদিনের মধ্যে না শুকোয় বা নিজে থেকে উঠে না আসে, এর থেকে সংক্রমণ ছড়ায় বা জ্বর আসে, তবে সত্ত্বর চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এছাড়া পায়ের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন খুব শক্ত বা টাইট জুতো পড়বেন না দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকা অনেক দূর পর্যন্ত হাঁটা থেকে বিরত থাকুন। তবে আর যাই করুন নিজে থেকে কড়া কাটার চেষ্টা, ফোড়া হলে তা ফাটানোর চেষ্টা করবেন না কখনোই, এতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।