সকালের দূষণ মুক্ত বাতাস, ভরপুর অক্সিজেন ও সূর্য রশ্মি থেকে পাওয়া ভিটামিন ডি শরীর ও মন দুই চাঙ্গা রাখে। তবে অধিকাংশ মানুষের কিছু ভুল অভ্যাসের কারণে অজান্তেই নিজের শরীরে ডেকে আনছে বিপদ। আজই জানুন, ও সতর্ক হন।
সকালে হাঁটা শুধু শরীরকে ফিট রাখে না, মনকেও করে সতেজ করে তোলে। সারাদিন মন মেজাজ ভালো রেখে কাজ করার মনোবল পান আপনি। তবে অনেকে হাঁটতে গিয়ে কিছু সাধারণ ভুল করে ফেলেন, যা উপকারের বদলে শরীরের হালকা চোট, মন মেজাজ খারাপ বা ডিহাইড্রেশনের মত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। প্রাথমিকভাবে ততটা গুরুত্ব না দিলেও দীর্ঘ মেয়াদে আপনার শরীরের ক্ষতি করতে পারে। তাই সচেতন হওয়া জরুরি। নিচে এমন পাঁচটি সাধারণ ভুল অভ্যাস ও সমাধান তুলে ধরা হলো।
১. ভুল জুতো পরা
অনেকেই হাঁটার সময় সাধারণ চপ্পল, স্যান্ডেল বা ফ্যাশনেবল জুতো পরেন। এইসব জুতো পায়ের গঠন ও হাঁটার গতিকে সঠিকভাবে সাপোর্ট দিতে পারে না। এতে পায়ের পেশিতে টান, গোড়ালির ব্যথা, হাঁটুর সমস্যা এমনকি দীর্ঘমেয়াদে কোমরে ব্যথাও হতে পারে।
হাঁটার জন্য বিশেষভাবে তৈরি স্পোর্টস বা ওয়াকিং শু পাওয়া যায়। যাতে পায়ের আরাম এবং সঠিক কুশনিং থাকে। স্যান্ডেল বা অন্য ধরনের জুতো পড়ে হাটা উচিত নয় কখনোই।
২. ওয়ার্ম আপ না করেই দ্রুত হাঁটা
ঘুম থেকে উঠে বিছানা ছেড়ে সোজা রাস্তায় বেরিয়ে পড়া এবং শুরুতেই দ্রুত হাঁটার অভ্যাস শরীরে ব্যথার কারণ হবে। পেশি ও জয়েন্ট হঠাৎ চাপের মুখে পড়ে, যার ফলে ব্যথা, টান বা ইনজুরি হতে পারে।
হাঁটার আগে ৫–৭ মিনিট হালকা স্ট্রেচিং বা ওয়ার্ম আপ করুন। মেডিটেশনও করতে পারেন।
৩. একেবারে খালি পেটে বা অতিরিক্ত খেয়ে হাঁটা
খালি পেটে হাঁটলে মাথা ঘোরা বা দুর্বল লাগতে পারে। অতিরিক্ত খেয়ে হাঁটলে আবার হজমের সমস্যা হবে, পেটে ব্যথা বা অস্বস্তি হতে পারে। আবার হেঁটে আসার পর একেবারে খালি পেটে থাকলে শরীর শক্তি পাবে না, দুর্বল লাগবে।
হালকা কিছু খেয়ে হাঁটতে বের হন, এতে শক্তিও পাবেন, আবার পেটও আরাম পাবে। আবার হেঁটে আসার পরেই হালকা কিছু খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে এনার্জি আসে ও মাসেল গেইনের জন্য ভালো। একটা কলা, একমুঠো বাদাম বা বা ছোলা, খেজুর, এক গ্লাস গরম জল মধু দিয়ে - এসব খেতে পারেন।
৪. সকালের যেকোনো সময় নয়, সূর্যোদয়ের সময় হাঁটতে হবে
অনেকে মনে করেন সকাল মানেই ৯টা বা ১০টা পর্যন্ত যেকোনো সময় হাঁটা যাবে। কিন্তু ভোর কেটে বেলা বাড়লে সূর্যের আলো অনেক বেশি প্রখর হয়ে যায়, যা শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে পারে এবং ঘাম বেশি হওয়ায় ডিহাইড্রেশন হতে পারে।
সবচেয়ে উপযোগী সময় হলো সূর্যোদয়ের ৩০ মিনিটের মধ্যে হাঁটা শুরু করা, সাধারণত সকাল ৫:৩০ থেকে ৭:০০ টার মধ্যে। এছাড়াও ভোরের সূর্য রশ্মি থেকে পাওয়া ভিটামিন ডি শরীরের জন্য উপকারী। এ সময় বাতাস ঠান্ডা, অক্সিজেন বেশি, আর দূষণ সবচেয়ে কম থাকে পরিবেশে।
৫. হাঁটার আগে ও পরে নিজেকে হাইড্রেটেড না রাখা
অনেকে হাঁটার আগে বা পরে জল খেতে ভুলে যান। আবার অনেকে ভাবেন, হার্টলে শরীর গরম থাকবে তাই জল খেলে বুঝি সর্দি লাগবে। কিন্তু আসলে তা নয়। ডিহাইড্রেশনের ফলে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, ঘাম কম হওয়া, এমনকি খিটখিটে ভাবও দেখা দিতে পারে।
হাঁটার কিছুক্ষণ আগে অল্প জল খান আবার হাঁটা শেষ হলে অন্তত এক গ্লাস জল খান। গরমে হালকা ইলেক্ট্রোলাইট বা ডাবের জলও ভালো হতে পারে শরীরের জন্য।


