লাউ খেতে ভালোবাসেন যদি তাহলে জেনে নিন কতটা পরিমাণ এবং কিভাবে খেলে লাউ আপনার শরীরে কোন রকম ক্ষতি করবে না।
আধুনিক ব্যস্ততার জীবনে অন্যতম বড় স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্চ রক্তচাপ। চিকিৎসকদের মতে, দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রণহীন রক্তচাপ হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি ও মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ওষুধের পাশাপাশি জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও খাদ্যাভ্যাসে সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি।
লাউয়ের ডাল বা ঘন্ট অনেকেরই পছন্দের পদ। স্বাদের পাশাপাশি এটি স্বাস্থ্যকরও হতে পারে। তবে এই সবজিটি খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা জরুরি। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী এবং যাঁদের রক্তচাপ, কিডনি বা হজম সংক্রান্ত সমস্যা আছে, তাঁদের উচিত আরও সাবধানী হওয়া। বিস্তারিত জেনে নিন।
লাউয়ের অপকারিতাগুলি জানুন:
* গর্ভবতী নারী এবং তাঁদের ভ্রূণ উভয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে লাউ। এতে থাকা নির্দিষ্ট টক্সিন ভ্রূণের বিকাশে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই গর্ভবতী নারীদের এটি খাদ্যতালিকায় রাখার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
* লাউ স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। যাদের হাইপারটেনশন আছে, তাদের জন্য এটি উপকারী হলেও, যাদের রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে কম, তাদের জন্য সমস্যা হতে পারে। বেশি খেলে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হতে পারে।
* কিডনির সমস্যাযুক্ত রোগীদের সাবধান থাকা উচিত। লাউয়ে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি, যা কিডনির জন্য অতিরিক্ত চাপ তৈরি করতে পারে। অতিরিক্ত পটাশিয়াম কিডনির কার্যকারিতা খারাপ করতে পারে।
* যারা গ্যাস, ফোলাভাব বা হজমে সমস্যা ভোগে, তাদের লাউ খাওয়া সীমিত করা উচিত, বিশেষ করে সন্ধ্যায়। এতে থাকা ফাইবার এবং জল হজমকে ধীর করতে পারে, যা পেটের সমস্যা বাড়াতে পারে। হজম সহজ করার জন্য এটি অন্য সহজপাচ্য সবজির সঙ্গে মিশিয়ে রান্না করা উচিত।
* লাউয়ের রস স্বাস্থ্যকর হলেও, তিক্ত বা কড়া স্বাদের লাউয়ের রস খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে। তিক্ত লাউয়ে টক্সিক যৌগ থাকতে পারে, যা প্রচণ্ড পেট ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া এবং বিরল ক্ষেত্রে মারাত্মক ফুড পয়জনিং বা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস ঘটাতে পারে। বাজারের বোতলজাত রস এড়িয়ে চলুন। বাড়িতে তাজা রস তৈরি করুন এবং তিক্ত লাউ ব্যবহার করবেন না। রান্না বা রস তৈরি করার আগে কাঁচা ছোট টুকরো চেখে স্বাদ পরীক্ষা করুন।
লাউ স্বাস্থ্যকর হতে পারে, তবে এটি মনের মতো খাওয়ার বদলে সচেতনভাবে খাওয়া উচিত। প্রত্যেকের শরীরের স্বাভাবিক প্রয়োজন এবং শারীরিক অবস্থা আলাদা হওয়ায়, খাওয়ার পরিমাণ এবং পদ্ধতি নিজের শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী ঠিক করা উচিত। সঠিক ব্যবহার এবং সতর্কতার সঙ্গে লাউ খাদ্যতালিকায় রাখলে এটি শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে এবং দৈনন্দিন খাবারে একটি স্বাস্থ্যকর সংযোজন হিসাবে কাজ করবে।


