ডেঙ্গু পরীক্ষা কখন করবেন? জেনে নিন এর প্রাথমিক লক্ষণগুলো ও কীভাবে প্রতিরোধ করবেন
বর্ষাকালে ডেঙ্গু জ্বর বেশি দেখা যায়। ডেঙ্গুর লক্ষণ কী কী? এটি কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়? ডেঙ্গু হলে কী করবেন? কী কী করবেন না তা জেনে নিন।
- FB
- TW
- Linkdin
বর্ষাকাল এলেই বর্ষাকালীন নানা রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। বিশেষ করে বর্ষাকালে সর্দি, কাশির পাশাপাশি মশা মারাত্মক রোগ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়।
এই রোগগুলো সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করালে প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকে। সেই তালিকায় মশাবাহিত ডেঙ্গু অন্যতম। হাড়ভাঙা জ্বর নামে পরিচিত ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ।
উষ্ণমণ্ডলীয় এবং উপ-উষ্ণমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় ডেঙ্গু একটি খুবই সাধারণ ভাইরাসজনিত রোগ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ৪ ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাসের মধ্যে DENV নামক একটি মশার কামড়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু জ্বর হয়। এটি Aedes aegypti মশার মাধ্যমে ছড়ায়।
এছাড়াও জিকা ভাইরাস এবং চিকুনগুনিয়াও বহন করে। ডেঙ্গু একজন থেকে অন্যজনে ছড়ায় না কিন্তু গর্ভবতী মহিলাদের মাধ্যমে গর্ভবতী মহিলা থেকে তার সন্তানের কাছে ছড়িয়ে পড়ে।ডেঙ্গু হলে তার কোনও চিকিৎসা নেই। বেশি করে বিশ্রাম নেওয়া এবং তরল খাবার খাওয়া ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। তাই, সঠিক সময়ে পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।
কখন ডেঙ্গু পরীক্ষা করবেন?
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, চিকিৎসা না করালে ডেঙ্গু গুরুতর আকার ধারণ করে। বেশি জ্বর, র্যাশ, জয়েন্টে ব্যথা এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে ডেঙ্গু পরীক্ষা করুন। (PCR), অ্যান্টিবডি পরীক্ষা, IgM এবং IgG, সম্পূর্ণ রক্তের গণনা (CBC) এবং বেসিক মেটাবলিক প্যানেল (BMP) এই পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে ডেঙ্গু রয়েছে কিনা তা জানা যায়। এই পরীক্ষাগুলির যেকোনও একটি করে ডেঙ্গু আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হতে পারেন।
লক্ষণগুলো কী কী?
ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ হল বেশি জ্বর। অর্থাৎ ১০৪°F এর উপরে জ্বর, রক্তের প্লেটলেট কমে যাওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়া, চোখে তীব্র ব্যথা, মাথাব্যথা, জয়েন্টে এবং পেশীতে ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং বমি, র্যাশ, ঠান্ডা লাগা, নাক, মুখ থেকে রক্ত পড়া, ত্বকে ফুসকুড়ি, অবসাদ, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি ডেঙ্গুর লক্ষণ।
মনে রাখবেন, ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত দুর্বলতা যা সময়মতো খেয়াল রাখা উচিত। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডেঙ্গু ধরা পড়লে আর কোনও পরীক্ষা করা প্রয়োজন?
ডেঙ্গু ধরা পড়লে, লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণ করা এবং সঠিকভাবে জল খাওয়ানো গুরুত্বপূর্ণ। রক্তের প্লেটলেটের মাত্রা ট্র্যাক করার জন্য চিকিৎসক সম্পূর্ণ রক্তের গণনা (সিবিসি) পরীক্ষা লিখে দিতে পারেন। হেমাটোক্রিট, সেরোলজিক্যাল পরীক্ষা এই ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ডেঙ্গু শনাক্ত করা যায়। আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত পরীক্ষা করুন।
পরীক্ষার আগে কী কী করবেন এবং কী কী করবেন না
পরীক্ষার আগে, পর্যাপ্ত জল খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত জল খেলে রোগীর শরীর থেকে সঠিক রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। পরীক্ষার আগে ব্যথানাশক ওষুধ এবং প্রদাহরোধী ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। পরীক্ষার জন্য যে লক্ষণগুলো আপনাকে প্রভাবিত করেছে তার একটি বিস্তারিত তালিকা রাখুন।
ডেঙ্গু জ্বরে কী খাবেন?
পেঁপে পাতার রস, ডালিম, নারকেল জল, ব্রকলি, হার্বাল চা এবং দই খাবেন। অল্প অল্প করে বারবার খাবেন, ঝাল এবং তেল জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। লেবু জাতীয় ফল, গাজর, মিষ্টি আলু, সিদ্ধ শাকসবজি খাবেন। মদ্যপান, ধূমপান, কফি, ভাজা এবং তেলেভাজা খাবার পরিহার করুন।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে, মশা দূরে রাখতে আপনার আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা গুরুত্বপূর্ণ। মশার উৎপত্তিস্থল নিরূপণ করে তা নিরসন করুন। পুরো হাতা পোশাক পরিধান করুন অথবা মশা প্রতিরোধক ক্রিম ব্যবহার করুন। সন্ধ্যার সময় জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের আশেপাশে জমা জল থাকতে দেবেন না।
ডেঙ্গু জ্বরে কী খাবেন?
পেঁপে পাতার রস, ডালিম, নারকেল জল, ব্রকলি, হার্বাল চা এবং দই খাবেন। অল্প অল্প করে বারবার খাবেন, ঝাল এবং তেল জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। লেবু জাতীয় ফল, গাজর, মিষ্টি আলু, সিদ্ধ শাকসবজি খাবেন। মদ্যপান, ধূমপান, কফি, ভাজা এবং তেলেভাজা খাবার পরিহার করুন।