সংক্ষিপ্ত
মহৌষধ আমলকী! রোজ খেলে মিলবে দারুণ উপকার, শরীরের জন্য কতটা ভাল এই উপাদান?
নতুন মাস শুরু হয়েছে। আবহাওয়ায়ও অনেক পরিবর্তন আসছে। কিছুদিনের মধ্যেই শীতকাল শুরু হবে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের শরীরেও অনেক পরিবর্তন আসে। আপনি কি জানেন? আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে আমাদের ঋতু পরিবর্তনের রোগ, সংক্রামক রোগ সহ আরও অনেক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই এই পরিস্থিতিতে আমাদের স্বাস্থ্যের প্রতি আরও যত্নবান হতে হবে। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আমলা খুবই কার্যকরী।
আমলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ আমাদের সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আমলা খেলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, পাশাপাশি আমাদের হজম শক্তিও উন্নত হয়। তাই শীতকালে আমলা খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় তা এবার জেনে নেওয়া যাক।
শীতকালে আমলা খাওয়ার উপকারিতা
হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে
বর্তমান সময়ে ছোট বাচ্চা থেকে বড় সবাই হৃদরোগে ভুগছেন। ছোট বাচ্চা, যুবক-যুবতীরা হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকে মারা যাওয়ার ঘটনা আমরা প্রায়ই সংবাদে দেখতে পাই। তাই হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। টক আমলা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে খুবই উপকারী। আমলা খেলে শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। এর ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকবে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে
অনেকেই হজমের সমস্যায় ভোগেন। তবুও এই বিষয়টিকে মোটেও গুরুত্ব দেন না। আমলা খেলে হজমের সমস্যা দ্রুত সেরে যায়। আমলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে না। পাশাপাশি পাকস্থলীও সুস্থ থাকে। আমলা পেটের অ্যাসিডকে সুষম করে এবং সমগ্র পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
ত্বকের জন্য উপকারী
আমলা আমাদের সুস্থ রাখার পাশাপাশি আমাদের ত্বকের জন্যও খুবই উপকারী। আমলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরে আয়রন শোষণেও সাহায্য করে। পাশাপাশি ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
আর্থ্রাইটিস রোগীদের জন্য উপকারী
আমলায় প্রচুর পরিমাণে প্রদাহরোধী উপাদান রয়েছে। এগুলি শরীরে প্রদাহ কমাতে খুবই সাহায্য করে। পাশাপাশি গাঁটের ব্যথা, হাঁটুর ব্যথা ইত্যাদি আর্থ্রাইটিস এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান
আমলায় প্রচুর পরিমাণে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এগুলি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে এবং ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলের ক্ষতি থেকে কোষগুলিকে রক্ষা করতে খুবই সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী
আমলা একটি পুষ্টিকর ফল। এতে ভিটামিন-সি, ফাইবার, ফসফরাস, ফোলেট, ক্যালসিয়াম, শর্করা, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান প্রচুর পরিমাণে থাকে। তাই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস রোগীরা কিভাবে আমলা খাবেন?
আমলার গুঁড়ো: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি আমলা শুকিয়ে গুঁড়ো করে খেতে পারেন। এই গুঁড়ো দই, স্মুদি বা ওটমিলের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এই আমলার গুঁড়োর পুষ্টি উপাদান আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
আমলার রস
আপনি চাইলে কাঁচা আমলা ব্লেন্ড করে তার রস খেতে পারেন। এতে সামান্য বিট লবণ মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে ভালো। এটি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই কার্যকরী।
আমলার আচার
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমলার আচারও খেতে পারেন। এর জন্য আমলা হালকা ভাপে সেদ্ধ করে শুকনো মরিচ, হলুদ, সরিষা, মৌরি, জিরা, কালোজিরা, সেলেরি ইত্যাদি মশলা দিয়ে ম্যারিনেট করে স্বাদ অনুযায়ী লবণ দিয়ে আচার তৈরি করতে হবে। এটি খুবই সুস্বাদু। পাশাপাশি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
আমলার সালাদ
আমলা সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়। এর জন্য বিট, গাজর, শসা, মূলা, আদা, কিছু পাতা সবজি দিয়ে সালাদ বানিয়ে তাতে কুঁচি করে কাটা আমলা মিশিয়ে সালাদ তৈরি করে খান। এটি খাবারের স্বাদ বাড়ায়। পাশাপাশি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই সাহায্য করে।