সব সময় নতুন স্মার্টফোন কেনা সম্ভব হয় না। তাই অনেকেই ঝোঁকেন সেকেন্ড হ্যান্ড তথা পূর্বে ব্যবহৃত ফোন কেনার বিষয়ে। কিন্তু সস্তায় ফোন কিনে মানিব্যাগকে খুশি করলেও ঠিকমতো সতর্ক না থাকলে পড়তেই পারেন আইনি গেরোয়।
সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন কেনার সময় আইনি জটিলতা এড়াতে বিক্রেতার পরিচয়পত্র ও ফোনের আসল বিলের কপি নিন, ফোনের IMEI নম্বর CEIR (Central Equipment Identity Register) ওয়েবসাইটে যাচাই করুন। ফোনটি চুরি বা কালো তালিকাভুক্ত কিনা তা পরীক্ষা করুন এবং নিশ্চিত করুন যে এটি ফ্যাক্টরি রিসেট করা হয়েছে এবং পুরনো অ্যাকাউন্ট থেকে আনলিঙ্ক করা আছে; কারণ চুরি যাওয়া ফোন কিনলে বা অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত ফোন হাতে এলে আপনি নিজেই আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন।
কেন আইনি জটিলতা হতে পারে?
চুরি যাওয়া ফোন: যদি ফোনটি চুরি হয়ে থাকে এবং মালিক থানায় জিডি বা FIR করে থাকেন, তবে সেই ফোনের IMEI নম্বর ব্লক লিস্টে চলে যায়। আপনি যদি এমন ফোন কেনেন, তবে পুলিশি ঝামেলায় পড়তে পারেন এবং ফোনটি বাজেয়াপ্ত হতে পারে।
অপরাধমূলক ব্যবহার: ফোনটি যদি কোনো অপরাধমূলক কাজে (যেমন - ব্ল্যাকমেইল, প্রতারণা) ব্যবহৃত হয়ে থাকে, তবে সেই ফোনের ব্যবহারকারী হিসেবে আপনার ওপর তদন্ত আসতে পারে।
অ্যাকাউন্ট লক: ফ্যাক্টরি রিসেট করা হলেও Google বা iCloud অ্যাকাউন্ট সঠিকভাবে আনলিঙ্ক করা না থাকলে ফোনটি পরে লক হয়ে যেতে পারে।
অফিসিয়াল/আনঅফিসিয়াল: চোরাই বা ধূসর বাজারের (grey market) ফোন কিনলে কোনো ওয়ারেন্টি থাকে না এবং শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হতে পারে, যা ভবিষ্যতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
আইনি জটিলতা এড়াতে করণীয়:
IMEI নম্বর যাচাই: ফোনের *#06# ডায়াল করে IMEI নম্বর বের করুন। CEIR (Central Equipment Identity Register) (ceir.gov.in) ওয়েবসাইটে গিয়ে এই নম্বর দিয়ে ফোনটি ব্লক বা চুরি হওয়া কিনা, তা চেক করুন।
বিক্রেতার পরিচয় ও রসিদ: বিক্রেতার কাছ থেকে তার আইডি প্রুফের (আধার/ভোটার কার্ড) ফটোকপি এবং ফোনের মূল বিল (original invoice) নিন। এটি প্রমাণ করবে যে আপনি বৈধভাবে ফোনটি কিনেছেন।
বিক্রয় চুক্তিপত্র (Sale Agreement): একটি সাধারণ বিক্রয় চুক্তিপত্র তৈরি করে উভয় পক্ষ সই করুন, যেখানে IMEI নম্বর এবং বিক্রেতার বিবরণ থাকবে। এটি আপনার সুরক্ষা দেবে।
অ্যাকাউন্ট আনলিঙ্ক: কেনার আগে নিশ্চিত করুন যে ফোনটি ফ্যাক্টরি রিসেট করা হয়েছে এবং Google (FRP) ও iCloud (Find My iPhone) অ্যাকাউন্ট থেকে আনলিঙ্ক করা আছে।
বিশ্বস্ত উৎস: অপরিচিত বা অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে কেনার চেয়ে বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম বা পরিচিত কারো কাছ থেকে কিনুন।
কালো তালিকাভুক্ত: যদি ফোনটি ব্লক করা বা কালো তালিকাভুক্ত থাকে, তবে এটি ব্যবহার করা যাবে না।
এই সতর্কতাগুলো মেনে চললে সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন কেনার ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব এবং আইনি জটিলতা এড়ানো যায়।


