কিরানা হিলে সাম্প্রতিক ভূমিকম্প নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন পারমাণবিক পরীক্ষার আড়ালে এই ঘটনা ঘটেছে কিনা। নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হলেও, সঠিকভাবে শনাক্তকরণ এখনও চ্যালেঞ্জিং।

সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছানোর ঠিক পরেই কিরানা হিল অঞ্চলে এক হালকা মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। যদিও পাকিস্তান সরকার একে "স্বাভাবিক ভূকম্পন" বলে দাবি করেছে, তবুও বিশেষজ্ঞ মহলের সন্দেহ কিছুতেই দূর হচ্ছে না। ওই অঞ্চলে ভূমিকম্পের আড়ালে পারমানবিক পরীক্ষা কেন্দ্র থাকার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে বিশেষজ্ঞদের মাথায়। হয়তো প্রকৃতিই দায়ী, তবুও বৈশ্বিক নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ থেকেই যাচ্ছে।

চিন্তার কারণ?

যুক্তরাষ্ট্রের লস আলামোস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি-র বিজ্ঞানীরা তাদের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখিয়েছেন, পারমাণবিক বিস্ফোরণের কম্পন ও প্রকৃত ভূমিকম্পের কম্পন এতটাই মিল যে, এমনকি অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিও বিভ্রান্ত হতে পারে।

বিশেষ করে যখন বিস্ফোরণ ও ভূমিকম্প একে অপরের ২৫০ কিলোমিটারের মধ্যে এবং ১০০ সেকেন্ডের ব্যবধানে ঘটে—তখন পার্থক্য নির্ধারণ করা প্রায় অসম্ভব।

গবেষণায় উত্তর কোরিয়ার একটি উদাহরণও তুলে ধরা হয়েছে। গত দুই দশকে উত্তর কোরিয়া ছয়বার পারমাণবিক পরীক্ষা করেছে। ওই অঞ্চলগুলোতে ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ যন্ত্র বসানো হয়েছিল এবং দেখা গেছে, এসব এলাকায় প্রায়ই ছোট-মাত্রার কম্পন হয়ে থাকে। সুতরাং গবেষকরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, যেসব অঞ্চল নিয়মিত ভূমিকম্প প্রবণ, সেসব অঞ্চলে গোপনে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে পড়েছে। দেশগুলির এরূপ আচরণ বিশ্বের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে যথেষ্ট।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন প্রযুক্তি

গবেষক জোশুয়া কারমাইকেল এবং তাঁর দল এমন একটি প্রযুক্তি তৈরি করেছেন, যা ভূমিকম্পের পি-ও এস-তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে গোপন বিস্ফোরণ শনাক্ত করতে সক্ষম। এই প্রযুক্তি ১.৭ টনের বিস্ফোরণকে ৯৭% সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারে। তবে যদি ভূমিকম্প ও বিস্ফোরণ ১০০ সেকেন্ডের মধ্যে এবং ২৫০ কিলোমিটারের ভেতরে ঘটে, তাহলে এই পদ্ধতির কার্যকারিতা কমে গিয়ে মাত্র ৩৭% তে দাঁড়ায়।