সংক্ষিপ্ত

তিনি সেই বার্তায় জানান, 'শত্রু আমাদের থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে, আমরা প্রস্তুত এবং শত্রু পক্ষকে পরাজিত করার জন্য নির্দেশের অপেক্ষা করছি। আমি এক ইঞ্চিও পিছিয়ে যাব না এবং শেষ নিঃশ্বাস, শেষ বুলেট পর্যন্ত লড়াই করব।'

যখনই কুমায়ুন রেজিমেন্টের বীরত্বের কথা বলা হবে, মেজর সোমনাথ শর্মার নাম অবশ্যই আসবে। তাঁর সাহস ও দেশপ্রেম অনুপ্রবেশকারীদের ঘৃণ্য উদ্দেশ্যকে পরাজিত করে। ১৯৪৭ সালের ৩ নভেম্বর গভীর রাতে, ফোর কুমাওন রেজিমেন্টের মেজর সোমনাথ শর্মার একটি বেতার বার্তা কাশ্মীরের সদর দফতরে পৌঁছেছিল।

তিনি সেই বার্তায় জানান, 'শত্রু আমাদের থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে, আমরা প্রস্তুত এবং শত্রু পক্ষকে পরাজিত করার জন্য নির্দেশের অপেক্ষা করছি। আমি এক ইঞ্চিও পিছিয়ে যাব না এবং শেষ নিঃশ্বাস, শেষ বুলেট পর্যন্ত লড়াই করব।' কিছুক্ষণ পর তথ্য আসে যে, মেজর শর্মা অনুপ্রবেশকারীদের মুখোমুখি যুদ্ধের সময় শহীদ হয়েছিলেন। তাঁর অভূতপূর্ব সাহসের জন্য, তিনি দেশের প্রথম মরণোত্তর পরম বীর চক্র লাভ করেন।

মেজর সোমনাথ শর্মা হিমাচল প্রদেশের কাংড়ায় ৩১ জানুয়ারি ১৯২৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিঁনি ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪২ সালে সেনাবাহিনীতে কমিশনে যোগ করেন। ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে, উপজাতিরা কাশ্মীর আক্রমণ করে। মেজর শর্মা তখন চারটি কুমাওন রেজিমেন্টের একটি কোম্পানির নেতৃত্বে ছিলেন। হামলাটি শ্রীনগর এবং বুদগাম বিমানবন্দরের জন্য কঠিন পরিস্থিতি হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

সোমনাথ শর্মা যখন দক্ষিণ বুদগামের সামনে পেয়েছিলেন-

৩ নভেম্বর রাতে সোমনাথ শর্মা দক্ষিণ বডগামের সামনে পড়ে যান। ৭০০ জনের একটি দল যাঁদের হাতে মর্টার এবং ছোট মেশিনগান দিয়ে তারা হামলা চালায়। সেই সময় সোমনাথ শর্মার ইউনিটের সৈন্যরা শহীদ হতে শুরু করেন, কিন্তু মেজর শ্রীনগর এরোড্রোম এবং বডগামের নিরাপত্তার জন্য শত্রুকে সেই অবস্থায় ব্যস্ত রাখেন যাতে লোকালয় ছেড়ে তাদের কোনও ফাঁকা স্থানে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে পরাস্ত করা যায়। এই ভাবে মেজর সোমনাথ খোলা মাঠের দিকে হামলাকারীদের নিয়ে যেতে থাকেন এবং প্রচণ্ড গোলাগুলির মধ্যে পাল্টা জবাব দিতে এখানে-সেখানে দৌড়াতে থাকেন।

হাতে প্লাস্টার থাকা সত্ত্বেও তিনি জওয়ানদের উৎসাহ ও শত্রুপক্ষকে পাল্টা জবাব দিতে থাকেন। এক সময় তাঁর কাছে রাখা বিস্ফোরকটিতে একটি মর্টার শেল পড়ে এবং বিস্ফোরণের ফলে শহিদ হন তিঁনি। মেজর সোমনাথ ও তাঁর সহযোদ্ধাদের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের কারণে বদগাম বিমানবন্দর রক্ষা পায়।

আরও পড়ুন- সুভাষ চন্দ্র বসুর ১০ টি সেরা অমূল্য উক্তি, যা আপনার জীবনকে উদ্দীপনা ও দেশপ্রেমে ভরিয়ে দেবে

আরও পড়ুন-  সুভাষ চন্দ্র বসুর অন্তর্ধানের রহস্য কী, যেই সত্যতা জানতে আজও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে দেশবাসী

রানিক্ষেতের নামানুসারে সোমনাথ ময়দান

রানিক্ষেতের কুমায়ুন রেজিমেন্টাল সেন্টার পরম বীর চক্র প্রাপক সোমনাথ শর্মার নামে মিলিটারি গ্রাউন্ডের নাম সোমনাথ গ্রাউন্ড রাখা হয়েছে। এখানে জাদুঘরে তার যুদ্ধকালীন সময়ের অনেক উপকরণ এবং তাঁর স্মৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত অনেক জিনিস পাওয়া যায়। তিনি ১৯৪৭ সালের ৩ নভেম্বর শহীদ হন।