সংক্ষিপ্ত

এসির অত্যাধিক ব্যবহারে একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস বার হয়। যা বিশ্বকে আরও উষ্ণ করে তুলছে। আধুনিক বিশ্বের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা।

 

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এই দিন জোর আলোচনা করা হয় পরিবেশ নিয়। গোটা বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারতের জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। যা রীতিমত ক্ষতি করছে বলেও মনে করছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাই এই বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩ -র তেই জেনেন নিন আপনার সাধের এয়ারকন্ডিশন বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র শুধুমাত্র পরিবেশের ক্ষতি করছে এমনটা নয়।ল ধীরে ধীরে এটি ক্ষতি করছে আপনার হার্টেরও।

যাইহোক চলতি বছর জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যই গ্রীষ্ণকালে তাপমাত্রার পারদ উর্ধ্বগামী। এই বাংলায়তেই দুই - তিন দফায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কলকাতা -সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে ৩৯-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেক গণ্ডী। এই অবস্থায় প্রবল অস্বস্তিকর গরম থেকে বাঁচতে আম বাঙালির ভরসা এয়ার কন্ডিশন বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র। কারণ প্রবল গরমে ফ্যানও স্বস্তি দিচ্ছে না। গরম পড়তে না পড়তেই এয়ার কন্ডিশানের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু এই এসি মেশিন স্বাস্থ্য আর পরিবেশ০ দুইয়ের জন্যই বিপজ্জনক।

ঝলসে যাওয়া এই গরমে সাময়িক স্বস্তি পেতে ঘরে বাইরে এসির ব্যবহার বেড়েছ। একটু স্বস্তির জন্য ধার-দেনা করেও অনেকে ঘরে এসি বসাচ্ছে। কিন্তু এসির অত্যাধিক ব্যবহারে একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস বার হয়। যা বিশ্বকে আরও উষ্ণ করে তুলছে। আধুনিক বিশ্বের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা।

এসিতে হার্টের সমস্যা-

প্রবল গরমে একজন ব্যক্তি যখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের তাপমাত্রা ছেড়ে বাইরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় যায় তখন বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে শরীরকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় তার হাতে থাকে না। কারণ বাইরের তাপমাত্রার থেকে এসি বসান ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ভাবে ১৫-২০ ডিগ্রিরও বেশি ফারাক থাকে। বিশেষত দিনের বেলায়। ফারাকই শারীরিক অসুস্থতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

বিশেষজ্ঞ সুধা দেশাইয়ের কথায় এয়ার কন্ডিশানিং মারাত্মক হতে পারে। কারণ প্রবল এই গরমে ঘাম হলে যদি দীর্ঘ সময় এসির মধ্যে থাকা হয় তাহলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ঘাম হওয়া কঠিন হয়। দীর্ঘ সময় এসিতে থাকা বয়স্ক, তরুণ ও ডায়াবেটিশ রোগীজের জন্য সমস্যার । যারা মূত্রবর্ধক ব্যবহার করেন তাদের জন্য সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। বিশেষজ্ঞের কথায় তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘামের প্রক্রিয়াগুলিকে দুর্বল করে দেয়।

এই ভ্যাপসা গরমে দীর্ঘ সময় যদি আপনি এসিতে থাকেন তাহলে জল বা যেকোনও তরল পানীয় গ্রহণের ইচ্ছে কমে যায়। কিন্তু এসি থেকে বেরিয়ে গেলে অস্বস্তি বাড়ে। তখন তৃষ্ণা অনেকটাই বেড়ে যায়। শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়।

বাস্তবে শহরে শীতাতপনিয়ন্ত্রণে থাকতে অভ্যস্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ৃছে- যারা তাপজনিত রোগে বেশি আক্রন্ত হচ্ছে। কারণ এয়ারকন্ডিশানে বেশিক্ষণ থকলে ঘাম হয় না। পাল্টা তারা যখন বাইরে যায় তখন প্রবল ঘাম হয়, অস্বস্তি বাড়ে। শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। এরাই অনেক সময় হিটস্ট্রোক , হিট পাইরেক্সিয়া, হিটস্ক্র্যাপ - জাতীয় রোগে আক্রান্ত হয়।

এয়ারকন্ডিশানের ব্যবহার পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। কারণ বর্তমানে খাবার, ওষুধ, প্রযুক্তি উৎপাদন, সঞ্চয়, পরিবহন- একাধিক ক্ষেত্রে রেফ্রিজারেশন গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীদের মনে ২০২৫ সালের মধ্যে এসির জন্য শক্তি খরচ তিন গুণ হবে। বর্তমানে সমগ্র চিনে যে পরিমাণ শক্তি ব্যবহার হয় তার সমান হবে এসির শক্তি ব্যবহার।

অন্যদিকে এসির কারণে পরিবেশের তাপমাত্রা বাড়ছে। শহর এলাকায় রাতের বেলা অত্যাধিক এসি ব্যবহারের জন্য বাইরের তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে।