সন্তানের মনঃসংযোগ, কাজে মনোনিবেশের ক্ষমতা বাড়ানোরও কৌশল আছে। খেলার ছলেই শিশুর সামাজিক, মানসিক এবং বৌদ্ধিক বিকাশ হবে। বুদ্ধির ধার বাড়বে সহজ কিছু ব্যায়ামে।
শিশুর পড়ায় অমনোযোগ ও খেলায় অনীহা থাকলে গল্প বলা, নির্মাণ খেলা (building blocks), সৃজনশীল আঁকা, নানা ধরনের ধাঁধা এবং দৈনন্দিন কাজে যুক্ত করা – এই ধরনের খেলার মাধ্যমে তার মন, বুদ্ধি ও মনোযোগ বৃদ্ধি করা সম্ভব! যা তাদের কল্পনাশক্তি, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা ও সামাজিক দক্ষতা বাড়ায়, তবে এর জন্য বাবা-মায়ের ধৈর্য, সঠিক রুটিন এবং স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
খেলার ছলে যেভাবে মন ও বুদ্ধির বিকাশ ঘটাবেন:
১. গল্প বলার খেলা:
কীভাবে: আপনি একটি গল্প শুরু করুন এবং কয়েকটি বাক্য বলার পর শিশুকে বাকি অংশটুকু বলতে বলুন। এতে তাদের শব্দভান্ডার বাড়ে এবং কল্পনাশক্তি বিকশিত হয়।
২. সৃজনশীল ও নির্মাণমূলক খেলা:
ব্লক বা লেগো: বিভিন্ন ব্লক দিয়ে নতুন কিছু তৈরি করতে দিন। এটি তাদের স্থানিক ধারণা (spatial awareness) ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়ায়।
আঁকা ও রং করা: ছবি আঁকা বা রং করার খেলায় শিশুরা মনোযোগ ধরে রাখতে পারে এবং সৃজনশীলতা বাড়ে।
৩.ধাঁধা ও বুদ্ধির খেলা (Puzzles & Brain Games):
ধাঁধা মেলানো: ছোটদের উপযোগী ধাঁধা বা জিগস পাজল (jigsaw puzzles) দিন। এতে মনোযোগ ও যুক্তির বিকাশ হয়।
শব্দ খেলা (Word Games): শব্দ মেলানো বা নতুন শব্দ তৈরির খেলা তাদের ভাষা জ্ঞান বাড়ায়।
৪. শারীরিক ও সামাজিক খেলা:
দলগত খেলা: ক্রিকেট, ফুটবল বা লুকোচুরির মতো খেলায় নেতৃত্ব দেওয়া, ভাগ করে নেওয়া এবং হার-জিত মেনে নেওয়ার মতো গুণাবলী তৈরি হয়।
দৈনন্দিন কাজে অংশগ্রহণ: রান্নার কাজে সাহায্য করা, গাছ লাগানো বা খেলনা গোছানোর মতো কাজে তাদের যুক্ত করলে দায়িত্ববোধ ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়ে।
৫.শিক্ষামূলক ডিজিটাল গেম (সীমিত পরিমাণে):
যদি স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে কিছু ভালো শিক্ষামূলক অ্যাপ বা গেম তাদের মনোযোগ ও শেখার আগ্রহ বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
ধৈর্য ধরুন: শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন, তাই তাদের বকাঝকা না করে উৎসাহিত করুন।
স্ক্রিন টাইম কমান: মোবাইল, টিভি ও ভিডিও গেমের অতিরিক্ত ব্যবহার শিশুদের অমনোযোগী করে তোলে, তাই এটি নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
পুষ্টিকর খাবার: ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার (ছোট মাছ), বাদাম, বীজ ইত্যাদি মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত ঘুম ও রুটিন: একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলা এবং পর্যাপ্ত ঘুম মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক। খেলাধুলা শুধু বিনোদন নয়, এটি শিশুর সার্বিক বিকাশে অপরিহার্য একটি প্রক্রিয়া, যা তাদের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
