সংক্ষিপ্ত

  • মানুষের বড়ই বিচিত্র ভাবনা 
  • আর এই ভাবনায় নয়া সংযোজন পেরিনিয়াম সানিং
  • এই নিয়ে এই মুহূর্তে বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে 
  • নিজেকে সুস্থ রাখার এই পদ্ধতিকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন চিকিৎসকরা
     

শরীর ভালো রাখার তাগিদে মানুষ কি না করে। যুগ যুগ ধরে এই নিয়ে কম চিন্তা-ভাবনা হয়নি। এরমধ্যে বহু চিন্তা-ভাবনা যথেষ্টভাবেই হাসির উদ্রেক করেছে। যারা এই ধরনের আউট-অফ দ্য বক্স ধারনার বশবর্তী তারাও বিভিন্নভাবে বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা খাড়া করার চেষ্টা করেছেন। তবে এই মুহূর্তে এই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নতুন যে চমকপ্রদ ভাবনার আমদানি হয়েছে তার নামে পেরিনিয়াম সানিং বা বাটহোল সানিং। 

আরও পড়ুন- রাতে ঘুমোতে যাবার আগে মোবাইল ঘাটছেন, ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে আপনি

পেরিনিয়াম সানিং বা বাটহোল সানিং-আর কিছুই নয় নগ্ন হয়ে রোদের দিকে পা-তুলে পায়ুদ্বারে সওনাবাথ বা রোদস্নান। এতে নাকি পায়ুদ্বার বা গুহ্যদ্বার দিয়ে রোদ-রশ্মি শরীরের ভিতরে খুব সহজেই প্রবেশ করতে পারে এবং শরীর এতে তরতাজা হয়। এমনকী এতে শরীরে বাড়তি এনার্জি বা শক্তি-রও আমদানি হয়। 

বেশ কয়েক বছর ধরেই স্বাস্থ্য-সুরক্ষায় একটি নয়া ভাবনার আমদানি হয়েছে। এই ভাবনাটি মূলত মহিলাকেন্দ্রিক। এতে অনেকে গরম জলের উপরে বসে যোনিকে উন্মুক্ত করার চেষ্টা করেন। এতে নাকি যোনি-র রোগপ্রতিষেধক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি শরীরে বাড়তি শক্তি আসে। অনেকেই তাই পেরিনিয়াম সানিং-কে যোনি এবং গরম জলের সংযোগের প্রক্রিয়ার সঙ্গে তুলনা করছেন। 

আরও পড়ুন- সদ্য মা হয়েছেন, এই ৮ ধরনের যৌন ক্রীড়া যা মানসিকভাবে তাজা রাখবে

সম্প্রতি এই পেরিনিয়াম সানিং-কে কেন্দ্র করে বেশকিছু ইনস্টাগ্রাম পোস্ট সামনে এসেছে, সেখানে একটি ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে তিন জন নগ্ন পুরুষ রোদের দিকে দৌড় লাগিয়েছেন। এবং রোদের সামনে গিয়ে দু-পা তুলে গুহ্যদার-কে উন্মুক্ত করছেন। ভিডিও পিছন থেকে ভেসে আসা কন্ঠে জানানো হচ্ছে এভাবে টানা ৩০ সেকেন্ড থাকতে পারলে রোদ-রশ্মি শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে। এতে শরীরের ভিতরে যে পরিমাণ এনার্জি প্রবেশ করে তা ইলেক্ট্রিক শক খেলেও আসবে না বলে জানানো হয়েছে এই ভিডিও-তে। 

 

View post on Instagram
 

পেরিনিয়াম সানিং-নিয়ে প্রথম ভিডিওটি সামনে আসে অক্টোবরে। মেটাফিজিক্সআলমেগান নামে এক তরুণী সেই ভিডিও-তে দাবি করেছিলেন, 'পেরিনিয়াম সানিং হল একটি থাওয়িস্ট অভ্যাস, যার জন্ম পূর্ব-এর একদম কোণায়।' এই পোস্টে ওই তরুণী আরও জানিয়েছেন যে, পেরিনিয়াম মানে গেট অফ লাইফ অ্যান্ড ডেথ। আর এটা হল এমন একটা প্রবেশদ্বার যার ভিতরে দিয়ে এনার্জি ঢোকে এবং শরীরের মধ্যে থেকে যায়। 

আরও পড়ুন- ডায়াবেটিসকে বশে রাখতে চান, তবে অবশ্যই পাতে রাখুন এগুলি

তরুণী মেগানের মতে, পেরিনিয়াম সানিং একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে শরীরের ভিতরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ শক্তিশালী হয়। এতে একজন মানুষের আয়ু বাড়ে। এমনকী, এতে যৌনক্ষমতা হ্রাস পায় ও যৌনজীবন সুস্থ-সবল থাকে। মেগান আরও জানিয়েছেন যে, তিনি রোজ পাঁচ মিনিট করে পেরেনিয়াম সানিং অভ্যাস করেন। এতে তাঁর খুবই উপকার হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, যে কফি খেয়ে তাঁকে এনার্জি সঞ্চয় করতে হয় না, তিনি নাকি সূর্যালোক থেকেই সেই শক্তি সঞ্চয় করে থাকেন। এরফলে তাঁর অনিদ্রা রোগ কেটে গিয়েছে বলেও দাবি করেছেন মেগান। 

View post on Instagram
 

চিকিৎসকরা অবশ্য পেরেনিয়াম সানিং-এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন এটা একটা ভয়ঙ্কর। কারণ, গোপনাঙ্গের স্থানের চামড়া যেমন সঙ্কুচিত থাকে তেমনি তা প্রবলভাবে নরম হয়। শরীরের এমন অংশ বেশি সময় ধরে উন্মুক্ত থাকাটা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। চিকিৎসকদের মতে এই কারণে পোশাক দিয়ে এই সব স্থানকে সুরক্ষিত করে রাখা হয়। রোদের আলোতে থাকা অতি বেগুনি রশ্মি এই সবস্থানের ক্ষতিসাধন করতে পারে। যার জেরে শারীরিক নানা অসুবিধার সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসঙ্গে খুব দ্রুত বড় ধরনের কোনও রোগে শরীর আক্রান্ত হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে পেরেনিয়াম সানিং অতি ভয়ঙ্কর বলেও দাবি করেছেন চিকিৎসকরা। কারণ, এতে যোনি অনেকবেশি করে সূর্যকিরণের সামনে উন্মুক্ত হয়ে যায়। পেরিনিয়াম সানিং কোনওভাবেই অভ্যাস করা উচিত নয় বলেও দাবি করেছেন চিকিৎসকরা।  অনেকে আবার ভিটামিন ডি-এর জন্য এমন অভ্যাস-কে রপ্ত করার চেষ্টা করেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ রোদ লাগিয়ে ভিটামিন ডি না নিয়ে বরং ওষুধ এবং ডায়েটের সাহায্য নেওয়া উচিত। শরীরে বেশি করে রোদ লাগানোটাই অত্যন্ত বিপজ্জনক পন্থা।