সংক্ষিপ্ত

পাকিস্তানে (Pakistan) মহিলাদের গান গাওয়া নিষিদ্ধ করেছিলেন স্বৈরচারী সামরিক শাসক জেনারেল মহম্মদ জিয়া-উল-হক (General Muhammad Zia-ul-Haq)। কিন্তু, তিনিও লতা মঙ্গেশকরের (Lata Mangeshkar) কণ্ঠের জাদুতে মোহিত হয়েছিলেন। 
 

পাকিস্তানে (Pakistan) চরমপন্থী ইসলামী শাসন জারি করেছিলেন তিনি। পাক মহিলাদের জন্য নিষিদ্ধ করেছিলেন সঙ্গীত এবং অন্যান্য সকল চারুকলা। নৃশংস স্বৈরচারী সামরিক শাসক হিসাবেই পরিচিত ছিলেন জেনারেল মহম্মদ জিয়া-উল-হক (General Muhammad Zia-ul-Haq)। কিন্তু, তিনিও লতা মঙ্গেশকরের (Lata Mangeshkar) কণ্ঠের জাদুতে মোহিত হয়েছিলেন। অচ্ছুত করে রাখতে পারেননি লতার গানকে। নিজেই স্বীকার করেছিলেন, ভারতের কোকিলকন্ঠীর একজন বড় ফ্যান তিনি। 

১৯৭৭ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জুলফিকার আলি ভুট্টোর (Zulfiqar Ali Bhutto) নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে পাকিস্তানের তখত দখল করেছিলেন জেনারেল জিয়া। শুধু তাই নয়, বাছাই করা বিচারকদের দিয়ে একটি মিথ্য়া হত্যা মামলায় ফাসিয়ে, ভুট্টোকে ফাঁসি দেন তিনি। তবে, দেশ চালানো তাঁর সাধ্যের বাইরে ছিল। ফলে, খুব তাড়াতাড়িই পাকিস্তান বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। সেই ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণ করতে এবং তার ক্রমশ কমতে থাকা জনপ্রিয়তায় ব্রেক লাগাতেই, জেনারেল জিয়া চরমপন্থী ইসলামের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। ইসলামি আইনের নামে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেনয। যার মধ্যে অন্যতম মহিলাদের গান গাওয়া চলবে না। 

আরও পড়ুন - শুধু গানে গানে নয়, বাংলার সঙ্গে লতার যোগ ছিল মাছ, মিস্টি তাঁতের শাড়ি থেকে সাহিত্যেরও

আরও পড়ুন - 'অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগোঁ' - এবার জন্ম-মৃত্যুর সমাপতনে জড়িয়ে গেলেন লতা ও কবি প্রদীপ

আরও পড়ুন - Lata Mangeshkar: গ্র্যান্ড হোটেলে লতার সঙ্গে দুই ঘন্টার আড্ডা, স্মৃতিতে বিভোর তাঁর জীবনীকার

১৯৮৮ সালে এক বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল জিয়ার। তার আগে ১০ বছর চলেছিল তার কঠোর শাসন। ১৯৮২ সালে প্রয়াত ভারতীয় সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার (Kuldip Nayar) একটি সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন তৎকালীন পাক রাষ্ট্রপ্রধানের। তার কয়েকদিন আগেই, ভারতের একটি সাংস্কৃতিক দলের পাকিস্তান ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেই সাংস্কৃতিক দলে কিংবদন্তি লতা মঙ্গেশকর-সহ বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় গায়িকারা ছিলেন। আসলে সেই সময় জিয়া তাঁর চরমপন্থী প্রকল্প শুরু করে দিয়েছেন। 

এই নিয়ে জিয়াকে খোঁচা দিয়েছিলেন নায়ার। জিয়া, মেনে নিয়েছিলেন, তাঁর জন্যই পাকিস্তানে যেতে পারছে না ওই ভারতীয় সাংস্কৃতিক দল। তবে এরপরই তিনি বলেছিলেন, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে লতা মঙ্গেশকরের গানের বড় ভক্ত। তবে, সেই সময়টা পাকিস্তানে লতা বা অন্যান্য ভারতীয় মহিলা শিল্পীদের গান গাওয়ার সঠিক সময় নয় বলে দবি করেন তিনি। তিনি দাবি করেছিলেন, সেই সময়ের পাকিস্তানি মেজাজের সঙ্গে লতার সেখানে গান গাওয়া সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে না। তবে লতার গান যে তিনি নিজে শোনেন, তা স্বীকার করতে এক মুহূর্তও দেরি করেননি তিনি। 

লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণের পর, গভীর শোক প্রকাশ করে বার্তা দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শোক বার্তা দিয়েছেন পাক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরীও। শেক প্রকাশ করেছেন পাক ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বাবর আজমও।