সংক্ষিপ্ত
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে দেশের সংখ্য়ালঘুদের দুর্দশা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন
- এবার মুখরক্ষা করতে সিন্ধ প্রদেশের একটি শিব মন্দিরে যাচ্ছেন ইমরান খান
- সেখানকার স্থানীয় হিন্দুদের সামনে বক্তব্যও রাখবেন
- বিজেপির দিকে যে অভিযোগ তুলছেন একই অভিযোগ তার দিকেই আসছে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছিলেন। পাকিস্তানে সংখ্য়ালঘুদের করুণ দশা নিয়ে সরাসরি প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। এরপরই মুখরক্ষা করতে উদ্যোগী হলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। সেই দেশের প্রথম সারির এক টিভি চ্যানেলের প্রতিবেন অনুযায়ী খুব তচাড়াতাড়ি সিন্ধ প্রদেশের থার্পারকর জেলায় একটি শিব মন্দির পরিদর্শনে যাবেন ইমরান খান। সেখানকার স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের সামনে বক্তব্যও রাখবেন।
পাকিস্তানের জন্মের পর থেকে সেই দেশে হিন্দু জনসংখ্যা কমতে কমতে এখন ২ শতাংশে এসে ঠেকেছে। শুধু হিন্দুরাই নন, একইসঙ্গে শিখ, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অবস্থাও তথৈবচ। নিয়মিত হারে সরকারি মদতে নিখোঁজ হয়ে যান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা। প্রায়শই হিন্দু বা খ্রিস্টান মহিলাদের তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করানোর অভিযোগও ওঠে। এই নিয়ে পাকিস্তানে ইদানিংকালে বেশ কিছু প্রতিবাদ-বিক্ষোভও দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন - মোদীর হাতে পরমাণু বোমা, উদ্বীগ্ন ইমরান! রাজনাথের বিবৃতিতে নড়ে গেল পাকিস্তান
আরও পড়ুন - ফের বড় ধাক্কার মুখে পাকিস্তান, আর্থিক অনুদানে কাঁটছাঁট করল আমেরিকা
আরও পড়ুন - ইমরানের কাশ্মীর-অস্বস্তি বাড়ালেন হাসিনা! ভারতের চালে মুসলিম বিশ্বেও কোনঠাসা পাকিস্তান
অবস্থা এতটাই গুরুতর যে পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের বেহাল দশা নিয়ে কথা উঠেছে মার্কিন সেনেটেও। দশ জন সেনেটর এই বিষয় নিয়ে যুগ্ম চিঠিও দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এই চিঠিতে সরকারি মদতে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া, নিয়মিত সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার লঙ্ঘন, জোর করে ধর্ম-পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়। তাদের দাবি অনুযায়ী পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সময় এই বিষয়গুলি তুলেছিলেন ট্রাম্পও। এরপরেই ইমরান এই পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার আগে ভোটের প্রচারপর্বে ইমরান নিজেও পাকিস্তানের সংখ্য়ালঘুদের উপর পাক সরকারের নির্যাতনের বিষয়টি মেনে নিয়েছিলেন। কথা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হয়ে এই প্রবনতা বন্ধ না করতে পারলে পদত্যাগ করবেন। কিন্তু, একটা মন্দির পরিদর্শন করে, বা মন্দির সংস্কার করে বা সংখ্যালঘুদের সামনে বক্তৃতা দিলেই পাকিস্তানের সংখ্য়ালঘুদের অবস্থা পাল্টাবে না তা ইমরান নিজেও জানেন।
কাজেই তাঁর এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার চেষ্টা ছাড়া কিছুই না বলে মনে করা হচ্ছে। আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল, ভারত সরকারের ৩৭০ ধারা বাতিলের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক রঙ দিতে ইমরান এখন মোদী সরকারের তথা বিজেপির বিরুদ্ধে সংখ্য়ালঘু অত্যাচারের অভিযোগ তুলছেন। সেই একই অভিযোগে যদি তাঁর নিজের সরকারই বিদ্ধ হয়, তাহলে তাঁর উদ্দেশ্য মাঠে মারা যাবে। এই অবস্থায় সংখ্যালঘুদের পাশে আছেন বোঝাতেই ইমরানের এই শিব মন্দির যাত্রা বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।