IPL 2025: এখন আইপিএল-এ পাকিস্তানিরা নিষিদ্ধ হলেও, এই টি-২০ লিগের শুরুর দিকে পাকিস্তানিরা ছিলেন। কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি। তাঁদেরই অন্যতম ওয়াসিম আক্রম (Wasim Akram)।
Wasim Akram on Shah Rukh Khan: আইপিএল-এ (IPL 2025) কলকাতা নাইট রাইডার্সের (Kolkata Knight Riders) কর্ণধার শাহরুখ খানের (Shah Rukh Khan) প্রতি কৃতজ্ঞ পাকিস্তানের প্রাক্তন পেসার ওয়াসিম আক্রম (Wasim Akram)। তিনি 'সুলতান'-এ শাহরুখের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। কারণ, একসময় মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার। তিনি নিয়মিত কোকেন সেবন শুরু করেছিলেন। এই নেশা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তাঁকে লাহোরের এক নেশামুক্তি কেন্দ্রে ভর্তি হতে হয়। সেই সময় তিনি সবদিক থেকেই বিধ্বস্ত ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে কেকেআর। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি আইপিএল-এ কেকেআর-এর বোলিং কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। এর ফলে তিনি যেমন আর্থিক দিক থেকে ভালো জায়গায় পৌঁছে যান, তেমনই ক্রিকেটের মূলস্রোতে ফিরে আসেন। তাঁর জীবনে শান্তি ফিরে আসে।
কীভাবে কোকেনে আসক্ত হয়ে পড়েন আক্রম?
নেশার কবলে পড়া প্রসঙ্গে আক্রম জানিয়েছেন, ‘ইংল্যান্ডের একটি পার্টিতে যখন আমাকে প্রথমবার কোকেন দেওয়া হয়েছিল। শুরুতে কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু ক্রমে গুরুতর নেশায় পরিণত হয়। একসময় আমার মনে হতে থাকে, নেশা ছাড়া কিছু করতে পারব না। এটি আমাকে অস্থির করে তুলেছিল। এটি আমাকে প্রতারক করে তুলেছিল।’ আক্রম আরও জানিয়েছেন, তাঁর প্রথম স্ত্রী হুমা, যিনি ২০০৯ সালে মারা যান, তিনি তাঁর পরিবারের কাছাকাছি থাকার জন্য করাচিতে যেতে চেয়েছিলেন। কারণ এই দম্পতি তাঁদের বেশিরভাগ সময় লাহোর ও ম্যাঞ্চেস্টারে কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু আক্রম তাঁর স্ত্রীকে করাচিতে যেতে দেননি। কারণ, তিনি প্রায়ই কাজের অজুহাতে নিজের শহরে ঘুরে বেড়াতেন এবং সারাদিন পার্টি করে সময় কাটাতেন।

স্ত্রীর কাছে ধরা পড়ে নেশামুক্তি কেন্দ্রে
আক্রম জানিয়েছেন, একদিন কোকেন সেবনের সময় স্ত্রীর কাছে হাতেনাতে ধরা পড়ে যান। এরপর তাঁকে লাহোরের একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে যেতে হয়। তবে সেই পুনর্বাসন কেন্দ্রের চিকিৎসক একজন প্রতারক ছিলেন। তিনি রোগীদের মাদকের নেশা থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করার পরিবর্তে কৌশলে তাঁদের শোষণ করতেন। এ বিষয়ে আক্রম জানিয়েছেন, ‘সিনেমায় নেশামুক্তি কেন্দ্রগুলিকে একটি যত্নশীল, লালন-পালনের পরিবেশ হিসেবে দেখানো হয়। লাহোরের এই নেশামুক্তি কেন্দ্র ছিল নিষ্ঠুর। পাঁচটি সেল, একটি সভা কক্ষ এবং একটি রান্নাঘর-সহ একটি খালি ভবন। চিকিৎসক একজন প্রতারক। তিনি রোগীদের চিকিৎসা করার পরিবর্তে প্রাথমিকভাবে পরিবারগুলিকে কৌশলে ফাঁসানোর কাজ করতেন এবং প্রতি সপ্তাহে ২ লক্ষ টাকার বেশি নিতেন।’
কীভাবে কেকেআর-এ আক্রম?
লাহোরের পুনর্বাসন কেন্দ্রে সময় কাটানোর সময় আক্রমের হাতে কোনও কাজ ছিল না। সেই সময় কেকেআর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁকে বোলিং কোচ নিয়োগ করে। এর আগে কোনও পেশাদার দলে কোচ হিসেবে কাজ করেননি এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। এই কারণে কেকেআর-এ কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা তাঁর কাছে বিশেষ অনুভূতি।

কোচ হিসেবে সাফল্য আক্রমের
২০১০ সালে কেকেআর-এর বোলিং কোচ হিসেবে যোগ দেন আক্রম। তিনি ভারতীয় পেসার মহম্মদ শামি এবং উমেশ যাদবকে তৈরি করেন। ২০১৫ সাল পর্যন্ত কেকেআর-এ বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করেন আক্রম। তিনি ভারতের অনেক পেসারকেই সাহায্য করেছেন। পরবর্তীকালে সেই পেসাররা আইপিএল এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


