সংক্ষিপ্ত
২০২০ সালের শেষদিকে আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনার মৃত্যুর খবরে শোকগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল সারা বিশ্ব। এবার এই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিল। মারাদোনার মৃত্যু নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।
'ফুটবলের রাজপুত্র' দিয়েগো মারাদোনাকে কি ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল? কিংবদন্তির প্রয়াণের আড়াই বছর পর এই বিতর্ক ফের মাথাচাড়া দিয়েছে। আর্জেন্টিনার একটি আদালত ৮ জন চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোয় ঘটনার গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছে। কবে থেকে বিচারপর্ব শুরু হবে সেটা এখনও জানা যায়নি। তবে আদালত সূত্রে খবর, আগামী বছর শুরু হতে পারে শুনানি। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইরেসের উপকণ্ঠে স্যান ইসিদ্রোর আদালতের ৩ বিচারক জানিয়েছেন, 'প্রয়াত দিয়েগো মারাদোনার চিকিৎসার জন্য যে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছিল, সেই মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই আদালতে শুনানি শুরু হবে।'
এর আগে মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টে বলা হয়, মৃত্যুর আগে ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে যন্ত্রণা পাচ্ছিলেন মারাদোনা। সেই সময় তাঁর উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। তাঁকে যদি ঠিক সময়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হত, তাহলে এভাবে অকালে প্রাণ হারাতে হত না। এই রিপোর্টেই স্পষ্ট, চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে মারাদোনার। এই কারণেই শুরু হচ্ছে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিচার।
মারাদোনার মেডিক্যাল টিমে ছিলেন নিউরোসার্জেন লিওপলডো লিউকি, মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ অগাস্টিনা কসাশভ, মনোবিদ কার্লোস দিয়াজ, চিকিৎসক ন্যান্সি ফরলিনি, পেড্রো ডি স্প্যাগনা, নার্সিং কো-অর্ডিনেটর মারিয়ানো পেরোনি, নার্স রিকার্ডো আলমনিরন ও দাহিয়ানা মাদ্রিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিউরোসার্জেন ও মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞর বিরুদ্ধে সরাসরি মারাদোনার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ৬০ বছর বয়সে প্রয়াত হন মারাদোনা। সেই সময় বুয়েনস আইরেসের কাছে একটি ভাড়াবাড়িতে ছিলেন তিনি। মৃত্যুর ২ সপ্তাহ আগেই তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। সেই কারণে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন এই কিংবদন্তি। কিন্তু সেই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ উঠল। মারাদোনার মতো কিংবদন্তিকে যদি ইচ্ছাকৃতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেটা মারাত্মক ঘটনা। সারা বিশ্বের কাছে অপরাধী হয়ে থাকবেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা। ময়নাতদন্তে স্বাভাবিক মৃত্যুর কথাই বলা হয়েছে। কিন্তু আদালতে বিচার পর্ব শেষ হওয়ার পরেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
মারাদোনার পরিবারের সদস্যরা তাঁর মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে মানতে নারাজ। এই কিংবদন্তির মেয়ে ডালমা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘অনেক সময়ই বিচার প্রক্রিয়া মন্থর ও যন্ত্রণাদায়ক হয় কিন্তু আমরা ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত থেমে থাকব না। যাঁরা কারও কথায় বা অদক্ষতার জন্য নিজেদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তাঁদের সবার বিচার হবে।’
আরও পড়ুন-
পেলেই সর্বকালের সেরা ফুটবলার, এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন দিয়েগো মারাদোনা
'দিয়েগো নিশ্চই খুব খুশি হবেন', মারাদোনাকে ছাপিয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়লেন মেসি
চুনী গোস্বামীর নামাঙ্কিত গেট উদ্বোধন, সুনীল গাভাসকরের মুখে জয় মোহনবাগান