সংক্ষিপ্ত

এ যেন এক বিস্ময় বালক। স্পেনের ১৬ বছরের তরুণ ফুটবলারের মধ্যে যেন লুকিয়ে রয়েছে দুর্দান্ত এক প্রতিভা। শক্তিশালী ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ইউরো কাপের সেমিফাইনালে সেই প্রতিভারই ঝলক দেখতে পেল গোটা ফুটবল বিশ্ব।

এ যেন এক বিস্ময় বালক। স্পেনের ১৬ বছরের তরুণ ফুটবলারের মধ্যে যেন লুকিয়ে রয়েছে দুর্দান্ত এক প্রতিভা। শক্তিশালী ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ইউরো কাপের (Euro Cup 2024) সেমিফাইনালে সেই প্রতিভারই ঝলক দেখতে পেল গোটা ফুটবল বিশ্ব।

নিজে দুর্দান্ত একটি গোল করলেন। একবার নয়, বারবার সুযোগ তৈরি করলেন। সেইসঙ্গে, ইউরোর ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হওয়ার নজিরও গড়লেন। এইসব কিছুর সঙ্গেই বুঝিয়ে দিলেন যে, শুধুমাত্র প্রতিভা হয়ে থাকতে তিনি আসেননি। আগামী বেশ কয়েক বছর গোটা ফুটবল বিশ্বকে শাসন করতে চান লামিনে ইয়ামাল (Lamine Yamal)।

বলা চলে, বিশ্ব ফুটবলকে ইয়ামাল উপহার দিল বার্সেলোনা (Barcelona)। উল্লেখ্য, মেসির (Messi) মতোই বার্সেলোনার লা মাসিয়া অ্যাকাডেমি থেকে ফুটবল শুরু করেন স্পেনের এই ১৬ বছরের উইঙ্গার।

এরপর স্পেনের অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৬, অনূর্ধ্ব-১৭ এবং অনূর্ধ্ব-১৯, সব দলের হয়েই খেলেন ইয়ামাল। এমনকি, জাতীয় দলের হয়েও খেলে ফেললেন ১৩টি ম্যাচ।

কিন্তু ইয়ামালের জীবন কি এতই সহজ ছিল? এককথায় উত্তর, না। স্পেনের মাটারা প্রদেশে এক উদ্বাস্তু পরিবারে জন্ম হয় লামিনে ইয়ামালের। অত্যন্ত দারিদ্রের মধ্যে দিয়ে বেড়ে ওঠেন তিনি। ইয়ামালের বাবা আদতে মরক্কোর মানুষ। আর মা হলেন আফ্রিকার একটি ছোট দেশ ইকোয়াটোরিয়াল গিনির বাসিন্দা। জন্মের পর থেকে একাধিকবার তাঁর পরিবারকে বাসস্থান বদলাতে হয়েছে।

নানা প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেই ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় তাঁর ফুটবল প্রতিভা। যার রক্তে ফুটবল, তাঁর পায়ের জাদু আর স্কিল তো বিশ্বকে শাসন করবেই। তার প্রাথমিক ধাপ শুরু হয়েছিল মাত্র সাত বছর বয়স থেকে। ইয়ামালকে তখন থেকেই চিনতে শুরু করে মাটারার অলিগলি।

এ পাড়া থেকে ও পাড়া, ‘সেভেন-এ-সাইড’ ফুটবল খেলে বেড়াতেন তিনি। গত ২০১৪ সাল থেকে বার্সেলোনায় পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করে ইয়ামালের পরিবার। তখন তাঁকে ভর্তি করানো হয় বার্সেলোনার বিখ্যাত ফুটবল অ্যাকাডেমি ‘লা-মাসিয়া’-তে।

সেখানেও প্রথম থেকেই নজর কাড়তে শুরু করেন তিনি। বাস্তবে স্পেনের জল এবং হাওয়ার সঙ্গে তাঁর পরিচয় জন্ম থেকেই। ফলে, নিজেকে স্পেনীয় ভাবতেই বেশি পছন্দ করেন ইয়ামাল। তাই বাবা-মায়ের মিশ্র সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা উদ্বাস্তু তরুণ ইয়ামালকে নিজের করে নিতে দুবার ভাবেনি স্পেন।

তবে ইউরো কাপ খেলতে এসে একটি সমস্যায় পড়েছেন ইয়ামাল। কারণ, ৯০ মিনিট তাঁকে মাঠে রাখা যাচ্ছে না। আসলে জার্মানির শিশুশ্রম আইন অনুযায়ী, নাবালকদের স্থানীয় সময় রাত ৮টার পরে কাজ করানো সম্পূর্ণ বেআইনি। তবে খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে সেই সময়সীমা রাত ১১টা পর্যন্ত। কিন্তু যে সময় খেলা শুরু হচ্ছে, তাতে পুরো ৯০ মিনিট ইয়ামালকে খেলালে জার্মানির আইন অনুযায়ী প্রতি ম্যাচ পিছু ২৭ লাখ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে স্পেনকে।

তাই স্পেনের কোচ লুইস-দে-লা-ফুয়েন্তে তাঁকে তুলে নিচ্ছেন সুযোগ মতো। তবে এই কড়া আইনও রুখতে পারছে না ইয়ামালকে। যদিও ফুয়েন্তে জানিয়ে দিয়েছেন, প্রয়োজন মনে করলে পুরো ম্যাচই খেলাবেন ইয়ামালকে। এমনকি, জরিমানা দিতে হলেও দেবেন। কোনও আইনের তোয়াক্কা করবেন না তিনি। আইনের প্যাঁচে ফেলে তাঁর সেরা অস্ত্রকে ভোঁতা করে দেওয়ার চেষ্টা সফল হতে দেওয়া চলবে না।

আরও পড়ুনঃ 

Euro Cup: ফরাসি বিপ্লব রুখে দিল স্পেনের তরুণ ব্রিগেড, ২-১ গোলে জিতে ফাইনালে ইয়ামালরা

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।