সংক্ষিপ্ত
“গাড়ি চাইতে গেলে আমাদের গাঁজা কেস দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তাই ভয়ে আর গাড়ি চাইতে যাইনি। অনুব্রত মণ্ডল বীরভূমের রাজা ছিলেন। ওর ভয়ে থানাও অভিযোগ নেয়নি।” গাড়ির মালিকের মন্তব্যে রাজ্য জুড়ে শোরগোল।
“ওনার কথা ছাড়া গাছের পাতাও নড়ত না। গাড়ি চাইতে গিয়ে গাঁজার কেস দিয়ে হাজতে পুরে দেওয়ার হুমকি পেয়েছিলাম। তাই আইনের পথে এগোইনি”। অনুব্রত মণ্ডলের রাইস মিলে দামি দামি গাড়ি উদ্ধার কাণ্ডে এমনই মন্তব্য করলেন একটি গাড়ির মালিক তথা ঠিকাদার প্রবীর মণ্ডল এবং তাঁর পার্টনার অরুপ ভট্টাচার্য।
শুক্রবার সকাল থেকেই বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের ভোলে বোম রাইস মিলে তল্লাশি চালায় সিবিআই। সেখানে একটি গ্যারাজ থেকে বেশ কিছু বিলাসবহুল গাড়ির হদিশ পাওয়া যায়। তার মধ্যে একটি মূল্যবান গাড়ি ছিল ডবলু বি ৫৪ ইউ ৬৬৬৬ -এই নম্বরের। এই গাড়িটি আসলে রেজিস্টার্ড রয়েছে প্রবীর মণ্ডলের নামে। তাঁর বাড়ি বীরভূমের ময়ূরেশ্বর থানার নারায়ণঘাটি এলাকায়। তবে ব্যবসায়ী সূত্রে বর্তমানে তিনি সিউড়িতে থাকেন।
সিবিআই উদ্ধার হওয়া গাড়ির মালিকের খোঁজ করতেই প্রবীর মণ্ডল এবং তার পার্টনার গাড়ি ব্যবসায়ী অরুপ ভট্টাচার্য বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। প্রবীরবাবু বলেন, “তিলপাড়া নদী সংস্কারের জন্য আমাদের বরাত পাইয়ে দিতে অনুব্রত ওই গাড়ি আমাদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের বিশ্বকর্মা পুজোর দিন গাড়ি দিয়েছিলাম। ভিআইপি নম্বর সহ গাড়ির দাম পড়েছিল ৪৬ লক্ষ টাকা। পরে গাড়ি চাইতে গেলে আমাদের গাঁজা কেস দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। তাই ভয়ে আর গাড়ি চাইতে যাইনি। কোনও অভিযোগও জানাতে যাইনি। কারণ অনুব্রত মণ্ডল বীরভূমের রাজা ছিলেন। ওর ভয়ে থানাও অভিযোগ নেয়নি।”
অরুপ ভট্টাচার্য বলেন, “তিলপাড়া নদী সংস্কারের জন্য আমরা ডিপিআর করিয়েছিলাম। বাকি প্রশাসনিক কাজকর্ম করতে অনুব্রত মণ্ডল সাহায্য করেছিলেন। তার জন্য তিনি ১০ কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। বলেছিলেন ২০০ কোটি টাকার বালি রয়েছে নদীতে। ফলে, দাবি মতো টাকা দিতে হবে। আমরা নগদে ৫ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। আর ওই গাড়িটা দিয়েছিলাম। কিন্তু দাবি মতো টাকা দিতে না পাড়ায় আমাদের টেন্ডার বাতিল করে দেন। পরে টাকা এবং গাড়ি চাইতে গেলে গাঁজা কেস দিয়ে জেলে ভরে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। এখন আমরা নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি”।
আরও পড়ুন-
‘কেষ্টা ব্যাটাই চোর’, আমূলের জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছায় প্রাসঙ্গিকতার ইঙ্গিত?
‘গাড়ি চড়বি, নাকি প্রাণে বাঁচবি’, মালিককে প্রাণের হুমকি দিয়ে গাড়ি আটকে রেখে দিয়েছিলেন অনুব্রত!
আত্মবিশ্বাসে ডগমগ অনুব্রত, জোর গলায় সাংবাদিকদের ধমক!