সংক্ষিপ্ত
বিএসএফ জওয়ানের দল বন্দুক উঁচিয়ে ছুটতে থাকে। তড়িঘড়ি ওই সন্দেহভাজন সাইকেল-আরোহীরা সাইকেল ফেলে রেখে পালায় অন্ধকারের মধ্যে এ দিক সে দিক।
দিন যতই এগোচ্ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সীমান্তে পাচারের কৌশলে বদল আনছে পাচারকারীরা। যা দেখে রীতিমতো তাক লাগছে তুখোড় পুলিশ কর্তা থেকে শুরু করে সীমান্তরক্ষী বাহিনীদের। তবে কোনভাবে হার মানতে রাজি নয় ভারতীয় জওয়ানরা। তাই তারাও রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইন্দো-বাংলা সীমান্তের মুর্শিদাবাদে পাচারকারীদের সকল রকমের ফন্দি ধরে ফেলতে 'চ্যালেঞ্জ' নিয়েছে। আর তাতেই এল সাফল্য।
বাইরে থেকে দেখে এতোটুকু বোঝার উপায় নেই। আর পাঁচটা সাধারণ বাই সাইকেলের মতোই দেখতে। তবে যা সাধারণ মানুষের চোখে ধরা পড়ে না তাই ধরা পরল সন্ধ্যা নামতেই বিএসএফ জওয়ানদের নজরে। যা দেখে রীতিমতো চক্ষু চড়ক গাছে উঠেছে শুক্রবার বিএসএফের কর্তাদের। বাংলাদেশ থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে অবস্থিত মুর্শিদাবাদ সীমান্তের চরভাদ্র এলাকা। এমনিতে সারাদিন লোকজনের আনাগোনা থাকলেও সন্ধ্যা নামতেই মানুষের যাতায়াত কমে আসে ওই এলাকায়। খুব একটা প্রয়োজন না পড়লে কেউ সন্ধ্যার পরে যাতায়াত করে না। তবে সেই স্বাভাবিক নিয়মকে কার্যত অস্বীকার করে সন্দেহজনকভাবে একদল ছাপোষা মানুষ বাইসাইকেল নিয়ে ঘোরাঘুরি করতে থাকে। যা বিএসএফের নজরে আসতে রীতিমতো সন্দেহ তৈরি হয়।
আরও পড়ুন, মালদহে নাকা চেকিংয়ে গ্রেফতার ১১ কেজি মাদক-সহ পাচারকারী, পলাতক অপর সঙ্গীর খোঁজে পুলিশ
কোনভাবেই কালবিলম্ব না করে ভারতীয় জওয়ানরা ওয়ার্নিং দিয়ে ওই সাইকেল আরোহীদের থামতে বলে। আর তারপরেই ওই সাইকেল-আরোহীরা ঘটনার পরিকল্পনা বুঝতে পেরে রীতিমতো সেখান থেকে চম্পট দেয়। বিএসএফ জওয়ানের দল বন্দুক উঁচিয়ে ছুটতে থাকে। তড়িঘড়ি ওই সন্দেহভাজন সাইকেল-আরোহীরা সাইকেল ফেলে রেখে পালায় অন্ধকারের মধ্যে এ দিক সে দিক। ভারতীয় জওয়ানের সাইকেলের কাছে গিয়ে পৌঁছায়। প্রথমে কিছু বোঝা না গেলেও। বেশ কিছুক্ষণ ধরে দেখার পরে আশ্চর্যজনকভাবে চোখ যায় সাইকেলের টায়ারে।
তারপরেই সেখান থেকে এক এক করে বেরিয়ে আসতে শুরু করে উন্নত মানের রুপোর টুকরো। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তল্লাশি চালিয়ে বাইসাইকেল এর মধ্যে থেকে প্রায় ৬ কেজি কাঁচা রুপোর টুকরো বেরিয়ে আসে। গাঢ় সাদা রংয়ের ওই রূপো গুলিকে বিশেষভাবে তৈরি করে নানান কায়দায় সাইকেলের টিউব এর মধ্যে কুঠুরি বানিয়ে প্রবেশ করিয়ে তা বাংলাদেশে পাচারের পরিকল্পনা করা হচ্ছিল বলেই বিএসএফ জওয়ানের কর্তারা জানান।
এদিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে, ১৪১ নং বিএসএফ এর হাতে উদ্ধার ৬ কিলো উন্নত মানের রূপো সহ সাইকেলের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে পুরো এলাকায়। বাংলাদেশ সীমান্তের মুর্শিদাবাদে ১৪১ নং বিএসএফ ক্যাম্পের চরভদ্রা বিওপি এরিয়া দিয়ে, বাংলাদেশের উদ্দেশ্যই অভিনব কায়দায় সাইকেলের তার মধ্যে দিয়ে তা পাচাাার করার ফন্দি করা হচ্ছিল।
শেষ পাওয়া খবরে জানা যায়, এর পরেই পুরো গ্রাম জুড়ে ওই সাইকেল আরোহীদের খুঁজে নাকা তল্লাশি শুরু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় নতুন করে আশঙ্কা যাত্রা শুরু করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, পাচারকারীরা এই অভিনব সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে সফলতা পাচ্ছে কিনা তার ওপরই নির্ভর করছে অনেক কিছু। কারণ আগামী দিনে হয়তো মুর্শিদাবাদ সীমান্তে দিয়ে এই একইভাবে জঙ্গি কার্যকলাপের ব্যবহৃত অস্ত্রও আমদানি করা হতে পারে।