সংক্ষিপ্ত
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখের মনমালিন্য দীর্ঘ দিনের। এমনকি এই মনোমালিন্যের জেরেই ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের কাছে পরাজিত হয়েছিল তৃণমূল।
অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হতেই আসরে নেমেছেন তাঁর দলীয় প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত আরও এক তৃণমূল নেতা কাজল শেখ। কাজল শেখের ফেসবুকে একটি পোষ্টকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। যদিও ওই পোষ্ট অনুব্রত মণ্ডলকে উদ্দেশ্য করে নয় বলে দাবি করেছেন কাজল শেখ। তাঁর দাবি যারা শরীর, ক্ষমতা নিয়ে অহংকার করেন তাদের উদেশ্যে এই পোষ্ট। যদিও অনুব্রত মণ্ডলের দাপটের কাছে কোনও দিনও তেমনভাবে পেরে ওঠেননি কাজল শেখ। তৃণমূল কংগ্রেসে থাকলেও তিনি কিছুটা কোনঠাসাই ছিলেন।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখের মনমালিন্য দীর্ঘ দিনের। এমনকি এই মনোমালিন্যের জেরেই ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের কাছে পরাজিত হয়েছিল তৃণমূল। কাজল শেখের মুল লড়াই ছিল নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরার সঙ্গে। হেরে যাওয়ার পরেই গদাধর হাজরা বিজেপিতে যোগদান করে নানুর ছাড়েন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের গদাধর হাজরা তৃণমূলে যোগদান করেন। ফলে ফের কাজলের সঙ্গে দুরত্ব বাড়ে অনুব্রতর। দলের দ্বন্দ্ব মেটাতে বোলপুরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও হস্তক্ষেপ করতে দেখা গিয়েছিল। কাজলের দাদা বিধায়ক শেখ সাহেনাওয়াজকে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু চাপা দ্বন্দ্ব আজও রয়ে গিয়েছে। ফলে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের পরেই কাজল শেখের পোষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ওই পোষ্টে রুগ্ন সিংহের ছবি দিয়ে কাজল শেখ লিখেছেন, “চেহারা, দাপট, অবস্থান, ক্ষমতা ও শক্তি চিরস্থায়ী হয় না...। দুঃখের বিষয় অনেকেই এটা ভুলে যায়”। এই পোষ্টকে ঘিরে কাজল অনুগামীদের উন্মাদনা কমেন্ট বক্সে প্রতিফলিত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ওই পোষ্ট ৪০৬ জন শেয়ার করেছেন। যদিও কাজল শেখ বলেন, “আমি নিয়মিত ফেসবুক পোষ্ট করে থাকি। সেরকম ভাবেই এই পোষ্ট করেছি। নির্দিষ্টভাবে কাউকে আঘাত করার জন্য করিনি। আর অনুব্রতর বিরুদ্ধে পোষ্ট করার থাকলে নাম দিয়ে করব। কারণ অনুব্রতকে তিনি ভয় পান না বলেও দাবি করেছেন।
অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর থেকে বীরভূমের ক্ষমতা কার হাতে যাবে তাই নিয়ে শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব। কারণ বীরভূমের বেতাজ বাদশা ছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের ছত্রছায়ায় থাকা অনুব্রত মণ্ডল। তিনি কোনও দিন ভোটে দাঁড়াননি। কিন্তু তাঁও দাঁপটের সামনে দাঁড়াতে পারেননি দুধ কুমার , কাজল শেখের। ডেপুটি স্পিকার হয়েও তেমন সুবিধে করতে পারেননি আশিস বন্দ্য়োপাধ্যায়। এতদিন অনুব্রত হাতে গোটা বীরভূম জেলার পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমানে মঙ্গলকোট, কাটোয়ার মত গুরুত্ব এলাকার তৃণমূলের সংগঠনের দায়িত্ব ছিল। তাই গরু পাচারকাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডলকে সিবিআই গ্রেফতার করার পরই এই প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে আগামী দিনে বীভূমের দায়িত্ব কার হাতে যাবে? যদিও এখনও পর্যন্ত দল বা বীরভূমের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়নি অনুব্রতকে। তাও প্রশ্নটা উঠছেই কারণ আগামী বছরই পঞ্চায়েত নির্বাচন।
আরও পড়ুনঃ
স্বাধীনতা দিবসের আগে কি জঙ্গিদের নাশকতার ছক? কলকাতায় ড্রোন উড়িয়ে ধৃত ২ বাংলাদেশী
বরযাত্রী সেজে ১২০টি গাড়ি নিয়ে আয়কর হানা , উদ্ধার রাশি রাশি নদগ আর সোনা-হীরের গয়না
অনুব্রতর নীল রঙের দোতলা অট্টালিকা জুড়ে শুধুই হাহাকার, কান্নাকাটি করছেন একমাত্র মেয়ে