সংক্ষিপ্ত
রবিবারের স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। যদিও করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৩৪ জন।
উৎসবের মরশুমে (Festive Season) ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ (Corona Virus)। রাজ্যে করোনার গ্রাফ এখন অনেকটাই উর্ধ্বমুখী রয়েছে। ইতিমধ্যেই এনিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের (Health Department) তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও। তবে দুর্গাপুজোর (Durga Puja) মধ্যে রাজ্যবাসী কতটা করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনে চলবেন সেটাই হল আসল বিষয়। কারণ পুজো পুরোদমে শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে স্বস্তির খবর হল চতুর্থীর তুলনায় পঞ্চমীতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর পরিমাণ অনেকটাই কম ছিল। যা এই চিন্তার মধ্যেও কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে প্রশাসনকে। রাজ্যের মধ্যে সবথেকে বেশি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা।
রবিবারের স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৬০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। যদিও করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৩৪ জন। এদিকে করোনা এখনও পর্যন্ত রাজ্য থেকে পুরোপুরি বিদায় নেয়নি। তার মধ্যেই পুজোর আনন্দে গা ভাসিয়ে দিয়েছেন রাজ্যবাসী। পুজোর অনেক আগে থেকেই মার্কেটগুলিতে উপচে পড়ছিল ভিড়। বার বার বলা সত্ত্বেও সেখানে করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মানা হয়নি। তার জেরেই রাজ্যে করোনার গ্রাফ ফের উর্ধ্বমুখী হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন- পঞ্চমীর রাতে গুলি চলল গীতালদহে, ‘গোষ্ঠী সংঘর্ষে’ মৃত ২ তৃণমূল কর্মী
গত বছর পুজোর পরও একই ঘটনা ঘটেছিল। তবু সেই পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরিবর্তে এবারও পুজোর আনন্দে গা ভাসিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। সেপ্টেম্বরের শুরুর সঙ্গে অক্টোবরের শুরুর পরিসংখ্যানকে খতিয়ে দেখলে দেখা যাচ্ছে, গোটা রাজ্যের পজিটিভিটি রেট ১.৭৮ থেকে বেড়ে ১.৭৯ শতাংশ হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পুজোর আগে বিধিনিষেধ অনেকটাই শিথিল করা হয়েছিল রাজ্যে। খুলে দেওয়া হয়েছিল মার্কেট ও শপিং মল। আর তখন থেকেই মার্কেটগুলিতে উপচে পড়ছিল ভিড়। করোনা বিধি মেনে চলার জন্য বার বার প্রশাসনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, সেখানে বিধিনিষেধ কতটা মানা হয়েছএ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। করোনার গ্রাফ উর্ধ্বমুখী হওয়ার জন্য দায়ী পুজোর কেনাকাটাই।
আরও পড়ুন- অষ্টমী নয় ষষ্ঠী থেকেই ভাসতে পারে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গ দেখুন কী বলছে আবহাওয়া দপ্তর
এর সঙ্গে জুড়েছে মহালয়ার পর থেকেই প্যান্ডেল হপিংয়ের নেশা। দ্বিতীয়া থেকেই ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। তখন থেকেই ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে রাস্তায়। এত আগে এই ভিড় হওয়ার ফলে পুজো পুরোদমে শুরু হয়ে গেলে ভিড় আরও বেশি বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আর রাজ্যে এখনই যদি মানুষ সতর্ক না হন তাহলে কালীপুজোর আগে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। সতর্ক না হলে তৃতীয় ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অনেকেই কেরালার প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। 'ওনাম' উৎসবে গা ভাসিয়ে ভয়ানক পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে কেরালাকে। ফলে এখনই সতর্ক না হলে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতিও আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- পঞ্চমীর সন্ধ্যায় রেড রোডে চলল ‘গুলি’, প্রশ্নের মুখে নিরাপত্তা
এখনও মাস্ক পরতে অনীহা দেখা যাচ্ছে অধিকাংশকেই। মাস্ক ছাড়া অনায়াসেই ভিড়ের মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। কখনও পুলিশের ভয়ে মাস্ক পরলেও পরে আবার তা খুলে পুড়ে নিচ্ছেন ব্যাগ বা পকেটে। রাজ্যের প্রায় সব জায়গাতেই এই ছবি ধরা পড়ছে। এই মনোভাবের ফলে পুজোর শেষে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এখন সেটাই দেখার বিষয়।