সংক্ষিপ্ত

মোদী সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-কে অনুকরণ করেছে

অমিত শাহ বক্তৃতায় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন এবং তথ্য গোপন করেছেন

অমিত শাহ-এর অভিযোগ নস্যাত করলেন অমিত মিত্র

রাজ্যে বেজে গেল নির্বাচনের দামামা

 

প্রত্যাশিতভাবেই মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ-এর ভার্চুয়াল ব়্যালি থেকেই বেজে গেল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের দামামা। বক্তৃতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া আক্রমণ করেছিলেন অমিত শাহ। কয়েক ঘন্টার মধ্য়েই ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠক করে তার মুখের উপর জবাব দিলেন বাংলার অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।

অমিত মিত্রের অভিযোগ, দুর্ভাগ্যজনক হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বক্তৃতায় তিন ধরণের প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে - নকল করা, মিথ্যা বলা এবং তথ্য গোপন করা। একেবারে তথ্য তুলে তুলে অমিত শাহ-এর অভিযোগ নস্যাত করলেন তিনি।

অমিত শাহ তাঁর বক্তৃতায় বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের 'আয়ুষ্মান ভারত' প্রল্পের সুবিধা গোটা ভারত পেলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার এই প্রকল্প গ্রহণ করেনি বলে বাংলারল মানুষ তা পাচ্ছেন না। এই নিয়ে অমিত মিত্র বলেন, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার 'স্বাস্থ্যসাথী' প্রকল্প চালু করেছিল। এতে ৭.৫ কোটি পরিবার সুবিধা পেয়েছে। চিকিৎসার, শুশ্রুষার জন্য ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বীমাপর সুবিধা দেওয়া হচ্ছে এই প্রকল্পে। ১৫১৮টি নেটওয়ার্ক হসপিটাল যুক্ত রয়েছে এই প্রকল্পে। তার আড়াই বছর পর কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গের এই প্রল্পকে নতল করে চালু করেছিল আয়ুষ্মান ভারত। তাই, বাংলায় ওই স্বাস্থবীমা প্রকল্প মতুন করে দরকার ছিল না।   

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েও অমিত শাহ এদিন বক্তৃতায় বহু মিথ্যে কথাও বলেছেন বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। অমিত মিত্রের অভিযোগ পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম, বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক প্যাকেজ নিয়েও অমিত শাহ মিথ্যা বলেছেন। এদিন অমিত শাহ বলেছিলেন, করোনা মহামারির সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের রেশন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ৭.৬৬ কোটি মানুষ সুবিধা পেয়েছেন। অমিত মিত্রের দাবি এই সুবিধা পেয়েছেন ৬.০১ কোটি মানুষ। এছাড়া জিডিপির যে ১০ শতাংশ কেন্দ্র আর্থিক প্যাকেজ হিসাবে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তা আসলে জিডিপির ১ শতাংশও নয়। অর্থনীতিতে তাঁদের সরকার যে দারুণ নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে দাবি করছেন, তা বাস্তবে হচ্ছে না। নাহলে বেকারত্বের পরিমাণ ৪৫ বছরে সর্বনিম্ন অবস্থানে এসে দাঁড়ায় না। গত ৭টি কোয়ার্টার জিডিপির গ্রোথ সর্বনিম্ন থাকে না।

এছাড়া তাঁর অভিযোগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেশ কিছু কথা চেপেও গিয়েছেন। যেমন রাজ্য সরকার যে ৪.০৯ কোটি মানুষকে শেষ তিন মাস ধরে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দিচ্ছে, সেই কথা তিনি বলেননি। কেন্দ্রীয় সরকারের বিদ্যুত বিষয়ে দারুণ কাজের বরাই করেছেন। বাস্তব হল, ২০১১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত বাংলায় বিদ্যুত পরিকাঠামো উন্নয়নে কেন্দ্র খরচ করেছে ৫৮০০ কোটি টাকা। আর রাজ্য ২৭৫০০ কোটি টাকা। এছাড়া বিভিন্ন সেন্ট্রাল স্কিম, জিএসটি, খাদ্যের ভর্ত্তুকি ইত্যাদি বাবদদ রাজ্যের প্রাপ্য ৫৩০০০ কোটি বকেয়া দিচ্ছে না কেন্দ্র সেই কথা না তুলে অমিত শাহ শুধুই বলেছেন ১০০০ কোটি সহায়তা করেছেন ঘূর্ণিঝড় আমফানে।