সংক্ষিপ্ত

৯ দিনে এখনও পর্যন্ত বিসি রায় হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৩৮টি শিশুর। গত ৩০ দিনে একাধিক শিশু জ্বর ও সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে একাধিক শিশু।

অ্যাডিনো ভাইরাস ঘিরে আতঙ্কের মধ্যেই ফের শিশু মৃত্যু কলকাতায়। জ্বর-সর্দিকাশি এবং শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই তিন শিশুকে। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানেই মৃত্যু হয় এই তিন শিশুর। জানা যাচ্ছে এদের মধ্যে একজন মেটিয়াবুরুজ সংলগ্ন নাদিয়াল থানা এলাকার বাসিন্দা অপর জন উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা। সূত্রের খবর মেটিয়াবুরুজ সংলগ্ন নাদিয়াল থানা এলাকার আতিফা খাতুনকে গত রবিবার জ্বর ও সর্দি-কাশির সমস্যায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আতিফার বয়স এক বছর সাত মাস। রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ আতিফার মৃত্যুর খবর জানতে পারে তার বাড়ির লোক। উত্তর ২৪ পরগনার, মিনাখা থানার অন্তর্গত, চৈতল এলাকার আরমান গাজীও একই সমস্যা নিয়ে গত ছ'দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। আজ ভোর চারটে ২০ নাগাদ মৃত্যু হয় তার। এছাড়াও এদিন জ্বর ও সর্দি-কাশি জনিত সমস্যায় মৃত্যু হয় আরও এক সাত মাসের শিশুর।

৯ দিনে এখনও পর্যন্ত বিসি রায় হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৩৮টি শিশুর। গত ৩০ দিনে একাধিক শিশু জ্বর ও সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে একাধিক শিশু। রবিবার সকালেই মারা গিয়েছে তিনজন। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। বুধবার সকালে বি সি রায় শিশু হাসপাতাল পরিদর্শনে এলেন স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা। এদিন বি সি রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করেন তাঁরা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মেয়র কাউন্সিল এবং এখানকার রোগী কল্যাণ সমীতির সদস্য স্বপন সমাদ্দার। বৈঠকের পাশাপাশি এদিন হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে রোগীদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। রোগীর পরিজনের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। তবে ডাক্তারদের সম্মন্ধে রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ করা হয়নি বলেই জানান তিনি।

এদিন বৈঠকে বেলেঘাটা আইডিতে চাপ কমানোর উপর বিশেষ জোড় দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি বি সি রায় শিশু হাসপাতালে ক্রমবর্ধমান চাপ কমাতে অতিরিক্ত শয্যার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে বলেও জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি বি সি রায় শিশু হাসপাতাল থেকে যাতে আইডিতে রোগী রেফার করা যায় সেই দিকে নজর রেখে আইডিতেও শিশু রোগীর চিকিৎসার জন্য অতিরিক্ত শয্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানা যাচ্ছে। এদিন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা জানিয়েছেন,'আমাদের উপর চাপ আছে, কিন্তু আমাদের কাছে এই মুহূর্তে বেশ কিছু সংখ্যক বেড আমাদের রয়েছে। তাই এই মুহূর্তে চাহিদা মেটানো যাবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।' তিনি আরও বলেন,'এখন পর্যন্ত যে সব শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেগুলির বেশিরভাগই কোমরবিডিটিস-এর কেস। কারোর ওজন কম, কোনও বাচ্চার হার্টের অসুখ আছে। তবে আমাদের ডাক্তাররা চিকিৎসা এবং চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে সন্তুষ্ট।' এছাড়া চিকিৎসা পরিষেবা প্রসঙ্গে রোগী কল্যান সমিতির সদস্য স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন,'ডাক্তারদের নিয়ে রোগীর পরিজনদের কোনও অভিযোগ নেই। কয়েকজন নার্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি। আমি এবিষয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।' তবে মানুষকে পরিষেবা দিতে আইডি প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন - 

শহরে মৃত্যু হল আরও দুই শিশুর, অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ

অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে আরও কড়া প্রশাসন, বিসি রায় শিশু হাসপাতালে বৈঠক করলেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা

অ্যাডিনো ভাইারাস: চিকিৎসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ সুকান্তর, তথ্য গোপনের অভিযোগ অধীরের