সংক্ষিপ্ত

লালনের রহস্যমৃত্যুর আসল কারণ ঠিক কি তা জানতে সিআইডি তদন্তের দাবি তোলে লালনের পরিবার। সেই দাবি মেনে নিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, লালনের মৃত্যুরহস্যের এবার তদন্ত করবে সিআইডি।

 

বগটুইকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখ বহুদিন ধরেই ছিল পুলিশের জালে অধরা। এতদিন সে কোথায় ছিল কিভাবে ছিল তার বিন্দুমাত্র খবরও জানতে পারেনি পুলিশ। অবশেষে তাকে ধরার পর পশ্চিমবঙ্গবাসীর মনে আশা জেগেছিলো যে এবার হয়তো সমাধান সূত্র বেরোবে বগটুইকাণ্ডের। কিন্তু সেই আশায় ফাঁকি দিয়ে লালন সোমবার বিকেলে আত্মহত্যা করেন। সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরের শৌচালয় থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু কেন তার এমন আকস্মিক সিদ্ধান্ত ? এর নেপথ্যে কি আছে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অভিসন্ধি নাকি নিতান্ত মানসিক চাপেই এমন সিদ্ধান্ত তার ? এ নিয়ে এবার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিলো রামপুরহাট আদালতের বিচারক।

মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় লালনের মৃতদেহটি। পোস্টমর্টেমের পর তার মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করে তার পরিবার। তাই লালনের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া কে করবে সেই নিয়েই বিপাকে পুলিশ। লালনের পরিবারের অবশ্য দাবি যে তার জিভ কেটে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও এই রহস্যমৃত্যুর আসল কারণ ঠিক কি তা জানতে সিআইডি তদন্তের দাবি তোলে লালনের পরিবার। সেই দাবি মেনে নিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, লালনের মৃত্যুরহস্যের এবার তদন্ত করবে সিআইডি।

সোমবার বিকেলে শৌচাগার থেকে উদ্ধার হয় সিবিআই হেফাজতে থাকা লালনের ঝুলন্ত দেহ। এর পরই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। লালনের পরিবারের অভিযোগ, সিবিআই-ই লালনকে খুন করেছে। লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি অভিযোগ করেছেন, সিবিআই তাঁকে হুমকি দিয়েছিল ৫০ লক্ষ টাকা না দিলে তাঁর স্বামীকে খুন করা হবে। তিনি জানান, মঙ্গলবার লালনকে আদালতে হাজির করার কথা ছিল সিবিআইয়ের। লালনের মৃত্যু হওয়ায় মঙ্গলবার সেই সংক্রান্ত নথি আদালতে পেশ করে সিবিআই। সেই নথি খতিয়ে দেখা পর ওই ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারক। এ নিয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন তিনি। সেই কমিটিতে রামপুরহাটের নিম্ন আদালতের এক বিচারপতিকেও রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

এই আবহেই মঙ্গলবার রামপুরহাট হাসপাতালে হয় লালনের দেহের ময়নাতদন্ত। বেলা সাড়ে ৩টে থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দু’ঘণ্টা ধরে চলে লালনের দেহের ময়নাতদন্ত প্রক্রিয়া। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফিও করা হয়। ময়নাতদন্ত করেন ৪ জন চিকিৎসকের একটি দল। সেই রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে। লালনের দেহের ময়নাতদন্ত হলেও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তা নেয়নি তাঁর পরিবার। ফলে আপাতত মর্গেই রয়েছে তাঁর দেহ। পুলিশ রয়েছে হাসপাতালে।