ফের খারাপ খবর বাংলার সরকারি কর্মীদের জন্য! বিশ বাঁও জলে ডিএ মামলার রায়
বাংলার সরকারি কর্মীদের অপেক্ষা শেষ হতে চাইছে না। আর মাত্র কয়েকটা দিন পরেই ২০২৫ সাল শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু এখনও অবধি পঞ্চম বেতন পে কমিশনের আওতায় বাংলার সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলার রায়দান হয়নি। কবে হবে সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বারবার। এরই মধ্যে এল খারাপ খবর।

সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ডিএ মামলা। আর এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ লক্ষ কর্মরত এবং সরকারি পেনশনভোগীদের অপেক্ষা যেন শেষ হওয়ারই নাম নিচ্ছে না। এখনও অবধি পঞ্চম বেতন পে কমিশনের আওতায় বাংলার সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলার রায়দান হয়নি। কবে হবে সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বারবার। এত দেরি হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ সকলের। তবে এসবের মধ্যেই ফের খারাপ খবর।
রাজ্যকে আগেই ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এ জন্য ছ’সপ্তাহ সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দিতে পারেনি। আদালতের কাছ থেকে আরও ছ’মাস সময় চাওয়া হয়।
১২ নভেম্বর এবং ১৩ নভেম্বর মাননীয় সঞ্জয় কারোল এবং পি কে মিশ্রের বেঞ্চ থাকলেও ডিএ মামলার সাপ্লিমেন্টারি কজ লিস্টে ডিএ মামলার রায় ঘোষণার কোনও বার্তা নেই। ফলে এই মুহূর্তে রায় কবে হবে তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।
এর ফলে নতুন করে বাংলার ডিএ মামলা নতুন করে বিশ বাঁও জলে। কবে চূড়ান্ত শুনানি হবে? এর উত্তর জানা নেই কারোর। অপরদিকে এই নিয়ে মানুষ নানা মন্তব্য করেছেন। একজন লিখেছেন, আপনাদের লড়াইকে সম্মান জানিয়েই বলছি, যে জাজ দ্বয়ের DA মামলার রায় দেবার কথা, খুব সম্ভবত রায় দেবার আগেই তারা অবসর নেবেন। আবার নতুন ঐ বেঞ্চ বা টেবিল গঠন হবে ,তারপর তারা বলবেন আমরা তো এই মামলার ব্যাপারে কিছুই জানিনা, তাই আবার নতুন করে শুনানি শুরু হোক।
এই বিষয়ে একজন লিখেছেন, এই রায় ভোটের পরে বেরোবে, তার আগে নয় দিদি মোদির খেলা। আপনারা কি বুঝেও বোঝেন না একটা রায় বেরোতে ছ মাস সময় লাগে অথচ চোরেরা জেল খেটে বেরিয়ে গেল। তখন কি সুন্দর রায় হয়ে যাচ্ছে আর একটা সামান্য একটা ডিএ কেস তার রায় বেরোতে এখনো ছ মাস।’
কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের হারে রাজ্যকেও ডিএ দিতে হবে, এই দাবিকে সামনে রেখে শুরু হয় মামলা। স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (এসএটি), কলকাতা হাই কোর্ট হয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ২০২২ সালে কলকাতা হাই কোর্ট সরকারি কর্মীদের পক্ষে রায় দেয়। উচ্চ আদালত বলে, ডিএ রাজ্য সরকারের কর্মীদের অধিকার। কর্মীরা কেন্দ্রীয় হারে তা পাওয়ার যোগ্য।
কিন্তু রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যকে বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছে, আরও সময় প্রয়োজন। আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেটে বকেয়া ডিএ সংক্রান্ত কোনও বরাদ্দ ছিল না। তারা সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ পুনর্বিবেচনারও আর্জি জানায়।
রাজ্যের যুক্তি ছিল, মহার্ঘ ভাতা বাধ্যতামূলক নয়। ডিএ কর্মীদের মৌলিক অধিকার নয়। তা ছাড়া কেন্দ্র ও রাজ্যের আর্থিক পরিকাঠামো ভিন্ন। কেন্দ্র যে হারে ডিএ দেয়, তার সঙ্গে রাজ্যের তুলনা চলে না।
অন্য দিকে, মামলাকারী পক্ষের যুক্তি ছিল, নির্দিষ্ট সময়মতো ডিএ দেওয়া সরকারের নীতির মধ্যে পড়ে। খেয়ালখুশি মতো ডিএ দেওয়া যায় না। তাদের দাবি, বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ডিএ দিতে হবে। প্রয়োজনে বকেয়া ডিএ কিস্তিতে দেওয়া হোক। সেই মামলার শুনানি এখন কবে হয়, সেটাই দেখার।

