Jobless Teachers Protest News: সুপ্রিম রায়ে চলে গিয়েছে হকের চাকরি। সস্মানে চাকরি ফেরতের দাবিতে চলছে একটানা আন্দোলন। এবার আরও বড় পদক্ষেপ চাকরিহারাদের।
Jobless Teachers Protest News: তেরো দিনে চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষকদের আন্দোলন। আর এবার পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হলেন বিকাশ ভবনের সামনে আন্দোলনকারী চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশ। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন। আগামী বুধবার মামলার শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, গত ১৩ দিন ধরে বিকাশ ভবনের সামনে যোগ্য সম্মানের সঙ্গে চাকরিতে বহালের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছেন এসএসসি-তে চাকরি হারানো যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিকাশ ভবনের সামনে চাকরি হারানো যোগ্য শিক্ষকরা বিকাশ ভবনের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। এরফলে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকেন বিকাশ ভবনে বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মীরা। তাদের বার করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো খন্ড যুদ্ধ শুরু হয় আন্দোলনকারী শিক্ষকদের।
দুই পক্ষের একাধিক গুরুতরভাবে আহত হন। এই ঘটনায় বিধাননগর থানা ১৭ জন আন্দোলনকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। এমনকি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য ডেকে পাঠানো হয়। সোমবার ছ’জন আন্দোলনকারীকে হাজিরা দিতে বলা হয় থানায়। আবার কাউকে বুধবার থানায় হাজির দিতে বলা হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, ভাঙচুর, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধাদান-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। তাঁদের নোটিস পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, এই অভিযোগের ভিত্তিতে আন্দোলনকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। থানায় উপস্থিত না হলে বিএনএস-এর ৩৫(৬) ধারায় তাঁদের গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
বিক্ষোভকারী শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে তাঁদের মারধর করেছে শাসকদলের সমর্থকেরা। তাঁদের বক্তব্য, শাসকদলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না করে পুলিশ উল্টে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয় হয়ে ওছে। গত বৃহস্পতিবার এর ঘটনায় আন্দোলনকারী দুই শিক্ষক নেতা ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল এবং সুদীপ কোনারকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। তাঁদের অভিযুক্ত করে নোটিস পাঠিয়েছে পুলিশ। থানায় তলবও করা হয়েছে কয়েক জন আন্দোলনকারী শিক্ষককে। তাই পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের রায়ে চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী। আপাতত শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, এবং তাঁরা বেতনও পাবেন। কিন্তু অশিক্ষক কর্মীরা পুরোপুরি চাকরিহীন অবস্থায় রয়েছেন।
এসএসসি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নিয়োগের জন্য নতুন পরীক্ষা নিতে হবে। কিন্তু 'যোগ্য' চাকরিহারা চাকরি হারিয়ে আবারও পরীক্ষা দিতে রাজি নন। তাই তাঁরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন বিকাশ ভবনের সামনে। গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন ঘিরে উত্তেজনা চরমে ওঠে। সরকারি দফতরে কর্মরত অনেক কর্মী, যাঁদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও অসুস্থ স্বজন থাকা ব্যক্তিও ছিলেন, বিকাশ ভবনে আটকে পড়েন। আন্দোলনকারীরা তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
পরে পুলিশ ওই সরকারি কর্মীদের নিরাপদে বের করে আনতে গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। অভিযোগ, চাকরিহারা আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর হামলা চালান। এই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করে। এই ঘটনা ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে চড়েছে চাপানউতোর। চাকরি হারানো ‘যোগ্য’ প্রার্থীদের দাবি নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত। কিন্তু আন্দোলনের ধরন ও পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক নেতারা এবং সাধারণ মানুষ। আর এবার পাল্টা পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হলেন চাকরিহারাদের একাংশ।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


