সংক্ষিপ্ত
শুক্রবার সকাল সকাল স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল মাত্র ৫ বছরের শিশু। সঙ্গে ছিল তার বাবা। লরির ধাক্কায় প্রাণ গেল দুজনরেই।
শুক্রবার দিনের শুরুতেই ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখোমুখি শহর কলকাতা। বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা দৈত্যাকার লরি প্রাণ কেড়ে নিল মাত্র ৫ বছরের শিশুর। দক্ষিণ কলকাতার বেহালার রাস্তায় এই মর্মান্তিক বিপর্যয় ঘিরে জ্বলে উঠেছে ক্ষোভের আগুন। ৫ বছর বয়সি সন্তানকে স্কুলে দিতে যাওয়ার পথে প্রাণ চলে গেল তার বাবারও। পুলিশের বিরুদ্ধে একেবারে কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ করার অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় মানুষরা।
শুক্রবার সকালে সাড়ে ছ’টা নাগাদ বেহালার চৌরাস্তা এলাকায় বড়িশা স্কুলের সামনে একটি মাটি বোঝাই করা লরি বেপরোয়াভাবে ছুটে এসে ধাক্কা মেরে দেয় ওই ৫ বছরের ছোট্ট শিশু এবং তার বাবাকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ছেলেটির। তড়িঘড়ি তার বাবাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। এরপর বাবা ও ছেলে, দুজনেরই মৃত্যুর খবর আসার পরে ভয়ঙ্কর চেহারা নেয় বেহালা এলাকা। বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রাস্তায় নেমে পড়েন স্থানীয় মানুষজন। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
বড়িশা স্কুলের সামনে ধুন্ধুমার একের পর এক পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা। জানা গেছে, শুধুমাত্র বাবা ও সন্তানের মৃত্যুর কারণেই এই ক্ষোভ নয়। এই দুর্ঘটনার জন্য কার্যত পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা এবং সর্বোপরি কাণ্ডজ্ঞানহীনতাকেই দায়ী করছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, বেপরোয়া গতিতে শিশু আর বাবাকে খুন করা লরিচালককে অনেক আগেই পাকড়াও করে নিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। কিন্তু, তাঁরা সেই লরি চালককে ছেড়ে তো দিয়েছেনই, তার সাথে সাথে তাঁরা ওই ঘাতক লরিচালকের কাছ থেকে ঘুষও নিয়েছেন বলে অভিযোগ।
স্কুলের সামনে পড়ুয়াদের সুরক্ষার প্রচণ্ড অভাব, এরই প্রতিবাদে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে বেহালার চৌরাস্তা অঞ্চল। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ওই রাস্তায় গাড়িচালকরা একেবারেই ট্রাফিকের নিয়ম মানেন না, পুলিশ কোনও দিকে নজরই দেয় না। উপরন্তু, গাড়ির চালকদের কাছ থেকে মোটা টাকা ঘুষ নিয়ে অপরাধীদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। এই নিষ্ক্রিয়তা দিন দিন বেড়ে চলেছে বলেই ছোট ছোট শিশুদের প্রাণের কোনও দাম নেই বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের অভিভাবকদের। শুক্রবার সকাল থেকে এই বিক্ষোভের জেরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে ডায়মন্ড হারবার রোড। প্রচুর যানবাহন আটকে পড়েছে ওই এলাকায়।
পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ও পাথরবৃষ্টি হয়েছে দুর্ঘটনাস্থলে। পর পর কয়েকটি পুলিশের ভ্যান এবং বাইকে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, একটি বাসেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে। ক্ষোভে ফেটে পড়া মানুষের বিক্ষোভ দমন করতে দফায় দফায় লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এলাকা জুড়ে র্যাফ নামানো হয়েছে, এমনকি, কাঁদানে গ্যাসের সেলও ছুড়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতিতে লাগাম টানার চেষ্টা করছেন পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এখনও শিশু-মৃত্যুর প্রতিবাদের আগুনে উত্তপ্ত হয়ে আছে বেহালা অঞ্চল।
আরও পড়ুন-
Viral Video: 'ওরে বাবারে!' বলে চেঁচিয়ে উঠতেই পারেন, আমেরিকার চিড়িয়াখানায় যা দেখা গেল, তাতে স্বভাবতই ভয়ে কাঁটা সাধারণ মানুষ
Viral Video: “চা নিরামিষ-ই হয় স্যার”, ‘হালাল সার্টিফায়েড’ চা নিয়ে হিন্দু যাত্রীর সঙ্গে রেলকর্মীর দ্বন্দ্ব
Viral News: মেট্রোর ভেতর বসে বসে হস্তমৈথুন করে চলেছেন এক যুবক! ভাইরাল ভিডিও নিয়ে তোলপাড় দিল্লি
Viral News: প্রেমিকা নাকি 'বোন'! রাজস্থানে বউ-পালানোর অদ্ভুত কাণ্ডে ১৩ দিন ধরে হয়রানি