সংক্ষিপ্ত

এবার পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হলেন বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় (Minakshi Mukherjee)। কারণ, প্রতিবাদ জানানোর সময় বিনা প্ররোচনায় সচেতনভাবে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর বুকে ধাক্কা মারেন একজন পুরুষ পুলিশ অফিসার।

এবার পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হলেন বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় (Minakshi Mukherjee)। কারণ, প্রতিবাদ জানানোর সময় বিনা প্ররোচনায় সচেতনভাবে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর বুকে ধাক্কা মারেন একজন পুরুষ পুলিশ অফিসার।

এমনকি, সজোরে ঘুষিও চালায় বেশ কয়েকবার। কোনওরকম মহিলা পুলিশকর্মী ছাড়াই বহু সংখ্যক পুরুষ পুলিশ অফিসার তাঁকে ধাক্কা দেন এবং মারেন বলে অভিযোগ করেছেন বাম যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।

যেদিন নির্যাতিতার গাড়ি তারা আটকে দেন, অর্থাৎ ৯ অগাস্ট উপস্থিত সকল অপরাধী পুলিশের বিরুদ্ধে এবার এফআইআর দায়ের করলেন তিনি। সেইসঙ্গে, তদন্ত করে কঠোর শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করার আর্জি জানিয়ে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি লিখলেন মীনাক্ষী।

সেদিন সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিট নাগাদ আর জি কি কর (RG Kar) মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের মর্গ থেকে পুলিশ তড়িঘড়ি করে মৃতদেহ নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে, সেই মৃতদেহের গাড়ি আটকে মৃত তরুণী চিকিৎসকের পবিবারের লোকের সঙ্গে কথা বলতে চান বাম নেত্রী। সঙ্গে এও জানতে চান যে, পুলিশের কেউ তাদের উপর প্রশাসনিক প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে কিনা।

মীনাক্ষীর দাবি, সেইসময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষার নামে পুরুষ পুলিশই বিনা প্ররোচনায় সচেতন অবস্থায় এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর বুকে ধাক্কা মারে। শুধু তাই নয়, সজোরে বেশ কয়েকবার ঘুষিও চালায় বলে অভিযোগ করেছেন বাম নেত্রী। সেখানে মহিলা পুলিশ ছাড়াই বহু সংখ্যক পুরুষ পুলিশ তাঁকে ধাক্কা দেয় এবং মারে। সেই সমস্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে এবার এফআইআর দায়ের করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, তদন্ত করে তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। এই মর্মে বুধবার, পুলিশ কমিশনারকে একটি চিঠি লেখেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।

সেই চিঠিতে তিনি লিখেছেন, “আমি মীনাক্ষী মুখার্জি, ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক। আমার ঠিকানা ৭৯/৩এ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড, কলকাতা-৭০০০১৪। আমি এই মর্মে জানাইতেছি যে, গত ৯ই অগাষ্ট ২০২৪ তারিখে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে যে নৃশংস ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটেছে তার প্রতিবাদে আর জি কর হাসপাতালের সামনে আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছিলাম। এমতাবস্থায় আমরা জানতে পারি যে, নিহতের পরিবারের লোকেরা পুলিশের ব্যবহারে অসন্তুষ্ট হয়েছেন এবং পুলিশ তাদের উপর প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে তদন্তকে প্রভাবিত করছে। যা নিরপেক্ষ তদন্তের পরিপন্থী।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এরপর সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিট নাগাদ আরজি কি কর হাসপাতালের মর্গ থেকে পুলিশ মৃতদেহ নিয়ে তড়িঘড়ি বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমরা পুলিশকে জানাই যে, নিহতের পবিবারের লোকের সঙ্গে আমরা কথা বলতে চাই এবং জানতে চাই পুলিশের কেউ তাদের উপর প্রশাসনিক প্রভাব খাটাবার চেষ্টা করছে কিনা। নিরপেক্ষ তদন্ত সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এই ধরণের যেকোনও প্রকার প্রভাবমুক্ত রাখা জরুরি। এইসময় সেখানে উপস্থিত পুলিশের একাংশ অভিষেক গুপ্তার নেতৃত্বে এবং মহিলা পুলিশের অনুপস্থিতিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার নামে বিনা প্ররোচনায় সচেতনভাবে ও ইচ্ছাকৃতভাবে আমার বুকে ধাক্কা মারে। কয়েকটি সজোরে ঘুষি চালায়। মহিলা পুলিশ ছাড়াই বহু সংখ্যক পুরুষ পুলিশ আমাদের ধাক্কা দেয়, মারে।”

মীনাক্ষীর কথায়, “সাধারণ মানুষের দাবি মেনে আমি এবং আমার সাথী বন্ধুরা নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ও নিহতের পরিবারকে সুষ্ঠ বিচার পাইয়ে দেওয়ার আশায় প্রতিবাদ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছি। এই ঘটনার ফলস্বরূপ তীব্র ব্যাথা এবং যন্ত্রণা উপলব্ধি করলেও, শুরুতে গুরুত্ব না দিয়ে পরবর্তী সময়ে প্রতিবাদ যখন আরও জোরালো হয়ে ওঠে তখন অপরাধী পুলিশরা রাস্তায় প্রতিবাদ করার কারণে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং বারবার অবস্থানরত সমব্যাথী আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে ছত্রভঙ্গ করার ছলনায় হাত ধরে টানাটানি করতে থাকে।”

তিনি বলছেন, “পুলিশ আন্দোলনকারীদের শারীরিক, মানসিক এবং পাশবিকভাবে অত্যাচার করার পর নিহতের শবদেহ নিয়ে বেরিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় উপস্থিত সকল অপরাধী পুলিশেকর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর পূর্বক তদন্ত করে কঠোর শাস্তি এবং সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আর্জি জানাই। যাতে সাধারণ মহিলাদের পুলিশের প্রতি আস্থা ফেরে এবং আমরা আপনার নিকট বাধিত থাকিব।”

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।