আজ থেকেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর। আর এই দিনই কলকাতায় পথে নেমে গোটা প্রক্রিয়ায় প্রতিবাদ জানাল তৃণমূল কংগ্রেস। নেতৃত্বে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। 

আজ থেকেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর। আর এই দিনই কলকাতায় পথে নেমে গোটা প্রক্রিয়ায় প্রতিবাদ জানাল তৃণমূল কংগ্রেস। নেতৃত্বে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা দুজনেই তীব্রভাষায় আক্রমণ করেন এসআইআর প্রক্রিয়াকে।

মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ঃ

মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, 'যেন তেন প্রকারে বাংলা থেকে ২ কোটি মানুষের নাম বাদ দেওয়ার প্ল্যান করছে। ' তিনি নিশানা করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। তিনি বলেন, একে তো দেশে মীরজাফর আছে, যাঁর হাতে রক্তের দাগ রয়েছে। আপনি কী ভাবছেন, ওরা স্বর্গে যাবে? নিজের দলেই কত বিভেদ। তিনি আরও বলেন, গদিওয়ালারা ভাবছে যেন তেন ভাবে ২ কোটি লোকের নাম বাদ দিয়েই ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া কথা। তিনি আরও বলেন, দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। এসআইআর- প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি রাতারাতি নোটবন্দির কথা টেনে আনেন। তিনি বলেন, 'আমি প্রথম দিন থেকেই প্রতিবাদ করেছিল। কোনও কালো টাকা ফেরত এসেছে? উপরন্তু গেছে! ১০০র ওপর লোকের মৃত্যু হয়েছিল ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েছিল।' তিনি আধার কার্ড নিয়েও কেন্দ্র সরকারকে নিশানা করেন। তিনি বলেন, আধার কার্ড করতে লেগেছিল, প্রত্যেককে ১০০০ টাকা করে নিয়েছিল। চুরি করেছিল! যদি আধার কার্ড বানাতে প্রত্যেক ভোটারের কাছ থেকে ১০০০ টাকা করে নিল, তাহলে এখন কেন বলছে আধার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়? এদিকে, ব্যাঙ্কেও লিঙ্কের জন্য আধার নম্বর লাগে! মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। দিল্লি থেকে এই সরকারকে সরাও। কোনও আধারের প্রয়োজন পড়বে না। এখন আবার কাস্ট সার্টিফিকেট দিচ্ছে। কত কার্ড বানাবে?

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়

এসআইআর-এর প্রতিবাদ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় দিল্লি অভিযানের ডাক দেয়। তিনি বলেন, '২ দিনের ব্যবধানে যদি তৃণমূল এই মিছিল করতে পারে তাহলে আগামী ২ মাসের মধ্যে দিল্লিতে কী করতে পারে ! বিজেপির বন্ধুদের একবার ভেবে দেখা উচিৎ। আমাদের ধমকে চমকে বড় বড় ভাষণ দিয়ে কোনও লাভ নেই। ' মিছিল শেষে অভিষেক বলেন, 'এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ২১ জুলাই যে আন্দোলন কলকাতার বুকে হয়েছিল। তখন তৃণমূল তৈরি হয়নি। কংগ্রেসের ব্যানারে আন্দোলন হয়েছিল, সচিত্র পরিচয় পত্রের যে দাবি, মানুষের ভোটাধিকার ও মৌলিক অধিকার থেকে মানুষকে যাঁরা বঞ্চিত করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা গর্জে উঠব। আগামীদিনেও যদি মানুষের অধিকারে আমাদের প্রাণ দিতে রাস্তা নামতে হয়, বিজেপির বিরুদ্ধে বঙ্গবাসী ইতস্তত বোধ করবে না। আমরা তৈরি আছি।' তিনি আরও বলেন, 'যোগ্য ভোটারের থেকে নাম বাদ গেলে কী হবে সেই ক্ষমতা দেখাব। যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁরা সবাই বৈধ ভোটার ছিল। এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। এর জবাব দেওয়া হবে। আগামীদিন দিল্লি যাওয়া হবে। দিল্লি যেতে প্রস্তুত থাকুন'। অভিষেকের আরও বলেন, 'অমিত শাহের দম থাকলে সামনে এসে বলুন, লালকৃষ্ণ আডবাণী ভোট দিতে পারবেন না। কারণ ওনার জন্ম করাচিতে। মতুয়াদের ভোট নিয়েছে। আর এখন বলছে যেতে হবে সিএএ ক্যাম্পে। এদের কাউকে বাংলাদেশে পাঠাতে দেব না। গেলে আমাদের মরদেহের ওপর দিয়ে যেতে হবে। এখন তো শুনছি মতুয়া মহাসংঘের নামে ৮০০ টাকা করে নিচ্ছে'।