সংক্ষিপ্ত
একটানা তাপপ্রবাহের জেরে বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়েছে কলকাতার মল্লিকবাজারের ফুলের ব্যবসা, উপযুক্ত পরিকাঠামো পাবার অভাবে রাজ্য সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন ফুল বিক্রেতারা।
প্রথমে মাসের শুরুতে এক টানা তাপপ্রবাহের ফাঁড়া, তারপর আবার প্রায় একটানা ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির সাথে বজ্রপাতের ভ্রুকুটি, সব মিলিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কলকাতার ফুলের বাজার। হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত কলকাতার সুপ্রাচীন মল্লিক ঘাট ফুলের বাজারে এই বছর প্রায় কয়েক লক্ষ টাকার ক্ষতি সামাল দিতে নাজেহাল হয়ে যাচ্ছেন ফুলের ব্যবসায়িরা। বাধ্য হয়ে এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে উপযুক্ত পরিকাঠামো পাওয়ার জন্য আর্জি জানাচ্ছেন তাঁরা।
ফুলগুলিকে ঠাণ্ডা জায়গায় রাখা, অর্থাৎ রেফ্রিজারেশনের কোনও সুবিধা নেই, প্রতিনিয়ত ফুলে জল দেওয়ার মতো ব্যবস্থাও নেই, এই সমস্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার অভাবে প্রভূত ক্ষতির মোকাবেলা করতে গিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন ফুলের পাইকার এবং খুচরা বিক্রেতারা। ফুল সংরক্ষণ করা বা তাজা রাখার জন্য জল দেওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করছেন তাঁরা। সাধারণভাবে মল্লিক ঘাট ফুলের বাজারে এক দিনে লাভ হয় প্রায় আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা। সেই টাকার অর্ধেকও এই বছর লাভ করতে পারেননি বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়িরা। তবে, ক্ষতি পূরণ পাওয়ার আশা নয়, পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের কাছ থেকে ফুল সংরক্ষণ করার পরিকাঠামো প্রার্থনা করছেন বিক্রেতারা।
এক দশক আগে ফুলের বাজার ধ্বংস হওয়ার পর থেকে বেশিরভাগ ফুল বিক্রেতা খোলা জায়গায় ব্যবসা করছেন। এবিষয়ে বিক্রেতাদের তরফ থেকে মল্লিক ঘাটের ফুল ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সেক্রেটারি প্রদীপ সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "আমরা খোলা জায়গায় ব্যবসা করে আসছি। মাঝে মাঝে আবহাওয়া খুবই প্রতিকূল হয়ে ওঠে। আমরা বছরের প্রতেকটা দিন লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছি। এখানে ফুলকে তাজা রাখার জন্য কোনও রেফ্রিজারেশনের সুবিধা নেই, জলের সংযোগ নেই।” অপর এক ব্যবসায়ী, হাওড়া জেলার পাঁচলার বিক্রেতা ঊষারাণী দাসের কথায়, “সকাল ৮টার মধ্যে তেতেপুড়ে রোদ উঠছে, তাপের চোটে এত গা জ্বলছে যে বাইরে দাঁড়ানোই আমাদের পক্ষে কঠিন। আমরা যদি সকাল ১০টার মধ্যে ফুল বিক্রি করতে না পারি, তাহলে সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলো শুকিয়ে যেতে শুরু করছে।”
প্রায় ৮০০ জন পাইকারী বিক্রেতা এবং গ্রামের কৃষক সহ প্রায় ২ হাজার জন খুচরা বিক্রেতা সারা বছর ধরে প্রত্যেকটা দিন দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন অংশ থেকে খুব ভোরে এই মল্লিক বাজারের ফুল বিক্রির ঘাটে এসে রোজগারের আশায় উপস্থিত হন। প্রায় দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে কলকাতার এই ঐতিহ্যবাহী এবং ঐতিহাসিক ফুলের বাজারে নিত্য দিন হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা। অনেক পর্যটক বা পরিদর্শনকারীরা এই ফুলের বাজারকে ‘ভারতের সবচেয়ে বড় ফুলের বাজার’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পাইকার বিক্রেতা বলেন, “রাজ্য সরকার প্রত্যেক মাসে এই বাজার থেকে প্রচুর টাকা ট্যাক্স পাচ্ছে। খারাপ আবহাওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করতে এবং আমাদের ক্ষতি কমানোর জন্য আমাদের আরও ভালো অবকাঠামো পাওয়া উচিত। কিন্তু সেটা আমরা পাচ্ছি না। ফলে এর দরুন আমাদের যে এতও টাকার লোকসান হচ্ছে, তার দায় নেবে কে?”
আরও পড়ুন-
Earthquake News: পর পর ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ভারত, রবিবার আরও একবার আতঙ্কের ছায়া
Gas Cylinder Price: গ্যাসের দামে বড় খবর, আরও একবার দামে কাটছাঁট করল কেন্দ্র সরকার
ভারতের জন্য আনন্দের খবর, রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেকে অংশ নিতে চলেছেন বলি অভিনেত্রী সোনম কাপুর