সংক্ষিপ্ত

দেশে ফিরে বেশ কড়া ভাষাতেই সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি। নিন্দুকদের উদ্দেশে দাদার সাফ জবাব,'আমার কাছে কলকাতা, দিল্লি, স্পেন সব এক।'

 

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুবাই-স্পেন সফরের সঙ্গী ছিলেন ক্রিকেট বাদশা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মাদ্রিদ থেকে বার্সেলোনা, গোটা সফরেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। স্পেনের মাটিতে দাঁড়িয়ে বাংলায় শিল্প নিয়ে ঘোষণাও করেছেন তিনি। প্রথম থেকেই মমতার সঙ্গে সৌরভের সফরকে বেশ বাঁকা চোখেই দেখা হয়েছিল তাঁর উপর হঠাৎ স্পেন থেকে শিল্পের ঘটনায় আবার নতুন করে প্রশ্ন উঠেছিল। এবার দেশে ফিরে বেশ কড়া ভাষাতেই সেই সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি। নিন্দুকদের উদ্দেশে দাদার সাফ জবাব,'আমার কাছে কলকাতা, দিল্লি, স্পেন সব এক।'

বিদেশ সফর থেকে ফিরে বৃহস্পতিবারই একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এই অনুষ্ঠানেই নানা সমালোচনার জবাবে মুখ খোলেন তিনি। সৌরভ ফাস জানিয়েছেন,'আমি একজন স্বাধীন মানুষ, কোনও বিধায়ক বা সাংসদ নই। আমি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। আমার যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাব। অনেকেই তো অনেক জায়গায় যায়। আমার কাছে কলকাতা, দিল্লি, স্পেন সব এক। আমরা তো মানুষ, পশু নই। মানুষের সমাজে বাস করি। একে অপরের সঙ্গে মতের আদানপ্রদান করি।'

গত ১৩ সেপ্টেম্বরেই স্পেন সফরে গিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখান থেকেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন আগামী পাঁচ-ছ’মাসের মধ্যে মেদিনীপুরে তাঁর দ্বিতীয় ইস্পাত কারখানাটি তৈরি হতে চলেছে। তিনি জানিয়েছিলেন,'আমার নতুন স্টিল প্ল্যান্টটি আর কয়েক বছরের মধ্যেই তৈরি হচ্ছে। ইস্পাত কারখানা গড়ে তোলার কাজে আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আশা করি, আগামী এক বছরের মধ্যেই তা চালু হয়ে যাবে।'

প্রসঙ্গত, বাংলায় লগ্নি টানার উদ্দেশে গত ৯ দিন ধরে বিশ্বের দুই দেশের মোট তিনটি শহরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যোগ দিয়েছেন একাধিক বানিজ্য বৈঠকে। অবশেষে ১১ দিনের বিদেশ সফর শেষ করে দেশে ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত ১৪ সেপ্টেম্বর স্পেনের মাদ্রিদে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে বার্সেলোনা হয়ে দুবাই যান তিনি। ২২ সেপ্টেম্বর শেষ হয় সফর। বিদেশ সফর অত্যন্ত সফল বলেই জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাঁর কথায়, 'এত সফল কর্মসূচি আমি খুব কম দেখেছি।' একই সুরে নবান্নও মঙ্গলবার জানিয়েছে বিদেশি বাণিজ্যিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সামনে বাংলার যথাযথ বিপণন করা সম্ভব হয়েছে। কোন কোন সংস্থা কোন কোন ক্ষেত্রে বাংলায় আসছে সেবিষয়ও জানিয়েছে রাজ্য সরকার।

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মাদ্রিদের বাণিজ্য সম্মেলনে ৩৭টি বাণিজ্যিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উপস্থিত ছিল। বার্সেলোনায় বানিজ্য সম্মেলনে যোগ দেয় ৫৪টি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান। দুবাইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাণিজ্য সম্মেলনে হাজির ছিলেন ১৩৫টি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। এইবারের সফরে মোট ২২৬টি বিদেশি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই তিন শহরের বানিজ্য সম্মেলনে বাংলার ভৌগোলিক অবস্থান তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই অবস্থান ঠিক কীভাবে বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত তাও ব্যাখ্যা করেছেন। যেমন বাংলার পাশেই রয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান। বাংলায় বিনিয়োগ মানে লাগোয়া দেশগুলির বাজারও ধরার সুযোগ। পাশাপাশি ধরাছোঁয়ায় আসবে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিও। বাংলায় বিনিয়োগের মাধ্যমে খুলে যাবে ভারত-মায়ানমার, বাংলাদেশ-চিন অর্থনৈতিক করিডোরও।