সংক্ষিপ্ত
রাজ্য সরকার কোন কোন ক্ষেত্রে, বিশেষ সাফল্য পায়নি, তার উল্লেখ ছিল রাজ্যপালের ভাষণে। কিন্তু, কেন সেই সাফল্য আসেনি ? সেই কারণ হিসেবে রাজ্যপালের বক্তব্যে দায়ী করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বঞ্চনাকেই!
বিজেপির গাত্রদাহ আরও বাড়তে চলেছে। কারণ বাংলার রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস কথা বললেন রাজ্যের হয়ে আর অনেকটা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই। বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের ভাষণে উঠে এল কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রসঙ্গ। রাজ্যপাল বললেন, "কেন্দ্রের কাছে বকেয়া রয়েছে প্রায় ১১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। যে কারণে উন্নয়নের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। আশা করব, কেন্দ্র বাংলাকে প্রাপ্য টাকা দ্রুত পরিশোধ করবে।"
রাজ্য সরকার কোন কোন ক্ষেত্রে, বিশেষ সাফল্য পায়নি, তার উল্লেখ ছিল রাজ্যপালের ভাষণে। কিন্তু, কেন সেই সাফল্য আসেনি ? সেই কারণ হিসেবে রাজ্যপালের বক্তব্যে দায়ী করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বঞ্চনাকেই! এর আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে বাংলার প্রতি বঞ্চনার মনোভাবকে ঠুকেছেন।
রাজ্যপাল বলেন, যে তিনটি ক্ষেত্রে এবছর আমরা বিশেষ সাফল্য অর্জন করতে পারিনি সেগুলি হল, ১০০ দিনের কাজ, গ্রামীণ আবাসন ও গ্রামীণ সড়ক। ২০২১-২২ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ এই ক্ষেত্রগুলিতে প্রথম স্থানে ছিল। কিন্তু, এবছর রাজ্য এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের কাছ থেকে তার প্রাপ্য টাকা পায়নি। ১১ হাজার ৮০০ কোটি টাকারও বেশি পাওনা এখনও বকেয়া রয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের জনকল্যাণের লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতি পূরণের কাজে রাজ্য সরকারকে অনেক অসুবিধা ও অনেক বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। দরিদ্র মানুষের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকার শীঘ্রই টাকা পাঠাবে বলে আমি আশা রাখি এবং আমার স্থির বিশ্বাস যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে প্রাপ্য টাকা পেয়ে গেলে পশ্চিমবঙ্গ ১০০ দিনের কাজ, গ্রামীণ আবাসন ও গ্রামীণ সড়কের ক্ষেত্রগুলিতে পুনরায় শীর্ষস্থান অধিকার করবে।"
এদিকে, জগদীপ ধনখড় রাজ্যপাল থাকাকালীন রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত সামনে এসেছিল বারবার। আর এবার একেবারে উলট-পুরাণ! শাসক দলের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলার ছবি বিধানসভায় নতুন নয়। তবে এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধেও স্লোগান তুলল বিজেপি। শুধুমাত্র ‘ধিক্কার’ জানানোই নয়, বুধবার সিভি আনন্দ বোসকে গদি ছাড়ার দাবি জানিয়ে সরব হলেন বিজেপি বিধায়কেরা। রাজ্যপাল গাড়ি থেকে বিজেপি বিধায়কদের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়লেও, বিরোধী দলের মুখে শোনা গেল ‘শেম শেম’ স্লোগান। বাজেট অধিবেশনের শুরুতে এদিন রীতি মেনে ভাষণ পাঠ করেন রাজ্যপাল। তার মাঝেই শুরু হয় বিজেপির স্লোগান। ভাষণ পাঠ শেষ করে রাজ্যপাল যখন হাসিমুখে গাড়িতে উঠে যাচ্ছেন, তখন বিজেপি শিবিরের পক্ষ থেকে স্লোগান ভেসে আসে, ‘রাজ্যপাল গদি ছাড়ো।’