সংক্ষিপ্ত
সারা পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলির মতো এবার ভারতেও লাগু হতে পারে কড়া কোভিড বিধি। তার প্রাক্কালে যেকোনও জনসমাগমপূর্ণ অনুষ্ঠান মারাত্মকভাবে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
লকডাউনের বিধিনিষেধ উঠে যেতেই ভারতের প্রতিবেশী চিন দেশে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে কোভিড। করোনার বিএফ.৭ ভ্যারিইয়েন্টের কোপে জর্জরিত বিশ্বের বহু দেশ। আমেরিকা, ব্রাজিল, জাপান সহ অন্যান্য অনেক দেশেই জারি হয়েছে সতর্কতা। ভারতের অন্দরেও রাজ্য প্রশাসনগুলিকে কড়া নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু, এর মধ্যেই কলকাতায় কেটে গেল একটা জমজমাট বড়দিন। সপরিবারে ঝাঁকে ঝাঁকে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লেন শিশু থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সের মানুষ। উৎসবের উদযাপনে ভুলেই গেলেন কোভিডের চোখরাঙানি।
প্রায় টানা ২ বছর পর একেবারে কোভিড বিধি বিহীন বড়দিন পেয়েছেন কলকাতার মানুষ। মাস্ক পরার চিন্তা তো দূরের কথা, স্যানিটাইজার নিয়েও বেরোতে দেখা যায়নি অধিকাংশ উৎসাহীদের। বড়দিনের সপ্তাহের শুরু থেকেই পার্ক স্ট্রিট চত্বরে আলোর রোশনাই দেখার জন্য মানুষের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। বড়দিনের রাতের পরিস্থিতি আন্দাজ করে আগে থেকেই প্রায় ৩ হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েন করার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল কলকাতা পুলিশ। এসপ্ল্যানেড থেকে রবীন্দ্র সদন পর্যন্ত রাস্তা নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। ২৪ ডিসেম্বর বিকেল হতেই বাড়তে শুরু করে মানুষের ভিড়।
সকাল থেকেই সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল, নিউ মার্কেট, কুইনস ওয়ে চত্বরে ভিড় দেখা গিয়েছে প্রবল। জনসমুদ্র ছিল বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, সায়েন্স সিটি, ইলিয়ট পার্ক, ইকো পার্ক সহ শহরের দর্শনীয় স্থানগুলিতে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে শুরু করে। গড়ের মাঠেও পিকনিকের চিত্র দেখা গিয়েছে এদিন। গোলাপ এবং মোমবাতি হাতে চার্চে ঢুকতে দেখা গিয়েছে শহরের বাসিন্দাদের। পাপড়ি চাট, ফুচকা, কটন ক্যান্ডি, আইসক্রিমের দোকানেও ভিড় ছিল এদিন। সবচেয়ে বেশি ভিড় পেয়েছে বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় চিড়িয়াখানা, সকালের দিকে ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। দিনের শেষে দেখা যায়, শুধু ২৫ ডিসেম্বরেই চিড়িয়াখানায় ভিড় জমিয়েছিলেন কমপক্ষে আশি হাজার মানুষ। সায়েন্স সিটিতে ভিড় হয়েছিল প্রায় বাইশ হাজার মানুষের। এই প্রবল ভিড়ের মধ্যে, আট থেকে আশি, সকলের সমাগমই ছিল নজরকাড়া। কিন্তু, বিশ্ব জুড়ে করোনার বাড়বাড়ন্তের মধ্যে এই ব্যাপক পরিমাণ ভিড় বঙ্গ জুড়ে আবার তৈরি করল আশঙ্কার আবহ।
ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক, বিহার এমনকি কলকাতাতেও ফের ঢুকে পড়েছে করোনাভাইরাস। বড়দিনের পরদিনই কলকাতা বিমানবন্দর থেকে এক কোভিড পজিটিভ বিদেশিনীকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করানো হয়েছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। অর্থাৎ, সারা পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলির মতো এবার ভারতেও লাগু হতে পারে কড়া কোভিড বিধি। তার প্রাক্কালে যেকোনও জনসমাগমপূর্ণ অনুষ্ঠান মারাত্মকভাবে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন-
গঙ্গা সাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে ফিরহাদ হাকিমের বৈঠক, জানুয়ারিতে স্থান পরিদর্শনে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা
দু’হাত পেছনে দিয়ে বড়দিনে খোশ মেজাজে অনুব্রত, চনমনে শরীরে সাংবাদিকদের বলে গেলেন ‘আনন্দ করো’
আল কায়দা নেতা জাওয়াহিরির রেকর্ডিং ফাঁস, তাহলে কি তাঁকে খতম করা নিয়ে আমেরিকার দাবি মিথ্যে?